Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সরকারের অযোগ্যতায় দেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে : আলোচনা সভায় জিএম কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন বলেছে পৃথিবীতে ৪৪টি দেশ খাদ্য সংকটে পড়বে। এশিয়ার ৯টি দেশ খাদ্য সংকটে পড়বে। দক্ষিণ এশিয়ার ৩টি দেশ, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এজন্যই প্রধানমন্ত্রী বলছেন খারাপ দিন আসছে। এখন যা পারবেন খাদ্যের যোগান বাড়ান। খাদ্য উৎপাদন করেন। এগুলোতো আমরাও জানি , দেশের কৃষক জানে। এসব বুদ্ধি দেয়ার জন্য কী প্রধানমন্ত্রী লাগে? এসব বুদ্ধি আমাকে দেয়া লাগে না। গতকাল জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে বিশিষ্ট নাগরিকদের জাতীয় পার্টিতে যোগদান উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন রেখে জিএম কাদের বলেন, আপনি এই পোস্টটিতে আসলেন কেমন করে? কেন তেল কিনতে পারবেন না? কেন চাল কিনতে পারবেন না? তার কৈফিয়ত আপনাকে জনগণের কাছে দিতে হবে। আপনার সরকারকে দিতে হবে। রিজার্ভ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে তা শুধু ইউক্রেনের জন্য নয়। আর ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার মেগা প্রজেক্টে দিতে হচ্ছে সেটার লার্নিং কোথায়? তিনি বলেন, দেশ একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। এজন্য প্রথমে আমাদের দেশের রাজনীতির খরা কাটাতে হবে। আমরা চাই দেশে অবাধ সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। প্রতিটি মানুষের দেশের ওপর যে মালিকানা তা চলে আসুক। তার জন্য আমাদের সামনে কাজ করতে হবে। আমরা চাই এমন সরকার হবে যাদেরকে আমরা জবাবদিহি করতে পারি। তারা ভালো না করলে আমরা পরিবর্তন করতে পারি। এটাই হবে আমাদের সামনের দিকের রাজনীতি।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, যতই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হোক সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না। সরকার জানে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সরকার পার পাবে না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায় করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যত অন্ধকার।
জি এম কাদের বলেন, নির্বাচনের জন্য যখন রাজনৈতিক দল যাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোনো পরিবেশ নাই। দলের লোকেরা জোর করে ভোটকেন্দ্র দখল করছে। আমাদের এজেন্টদেরকে বের করে দিচ্ছে, বিভিন্নভাবে অত্যাচার করছে। নির্বাচনে জয়ী হতে দিচ্ছে না। জনগণকে সরাসরি নির্বাচনে ভোট দিতে দিচ্ছে না। এটা হলো বর্তমান বাস্তবতা।

জি এম কাদের বলেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি রিপোর্ট দেখলাম, যেখানে দেখা গেল দেশের মানুষ এখনো একবেলা খায় একবেলা কোনোরকমে বেঁচে থাকে। দেশে এখনো এ রকম পরিস্থিতি চলছে। শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। তাদের কষ্টের সীমা প্রতিদিন বাড়ছে। এর কারণ দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। দেশের এই রাজনৈতিক পরিবেশকে আমরা ভাঙার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান মন্দা পরিস্থিতির জন্য সারা বিশ্বের পরিস্থিতির কথা বলা হয়। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা মন্দায় পড়েছি এমনটা বলা হচ্ছে। এটা হয়তো সত্য। তার চেয়েও বড় সত্য আমাদের দেশের গণতন্ত্রহীনতার কারণে মানুষ বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। একতরফাভাবে একশ্রেণির মানুষ বড়লোক হচ্ছে, দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে তারা দেশ বিদেশে সম্পদ গড়ছে। তার ফলস্বরূপ দেশে এখন রিজার্ভ সংকট হয়েছে।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওনারা আগে থেকেই এসব বলে রাখছেন। দোষটা যেন শুধু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও করোনা পরিস্থিতির কারণে পড়ে। কিন্তু ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি ও করোনা পরিস্থিতি সব দেশের মানুষই মোকাবিলা করছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সব দেশেই কি আমাদের মতো এমন অবস্থা হয়েছে? তিনি আরো বলেন, ২৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে বিদ্যুৎ সেক্টরে। আমাদের দেশি মানুষ নিয়েছে বেসরকারি খাতে। কিন্তু সরকারকে সেটা ডলারে পেমেন্ট করতে হবে। যার গ্যারান্টার সরকার। এখন তারা অলরেডি ডিফল্ট হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অলরেডি তারা টাকা দিতে পারছে না। ক্যাশ টাকা দিতে পারছে, যেটা বাংলাদেশি টাকা, সেটা ডলারে কনভার্ট হচ্ছে না। অলরেডি বাংলাদেশ ডিফল্ট হওয়া শুরু হয়ে গেছে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, আলমগীর সিকদার লোটন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু প্রমূখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিএম কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ