Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তুরস্কে সাংবিধানিক সংস্কারের বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ডি ডব্লিউ : তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের শাসক দল এ কে পি পার্টি সাংবিধানিক সংস্কারের একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করেছে। বিরোধী দলগুলোর আশংকা যে এরদোগান ২০২৯ সাল পর্যন্ত এক ব্যক্তির শাসনের দিকে এগোচ্ছেন। তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (এ কে পি) প্রয়োজনীয় ভোটের জন্য একটি ক্ষুদ্র দলের সাথে জোট করার পর শনিবার সাংবিধানিক সংস্কার বিলের খসড়া আংকারায় পার্লামেন্ট স্পিকারের কাছে পেশ করে। এ সাংবিধানিক সংস্কার গণতান্ত্রিক ভারসাম্যকে দুর্বল করবে বলে সমালোচনা করা সত্ত্বেও এ কে পি তা নিয়ে অগ্রসর হল।
এ কে পি ও পার্লামেন্টের চতুর্থ বৃহৎ দল চরম-ডানপন্থী ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির (এম এইচ পি) সাথে আলোচনার পর পার্লামেন্টে এ খসড়া পেশ করা হয়। পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়ার পর বিলটিকে দেশব্যাপী গণভোটে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তিন-পঞ্চমাংশ ভোটের মধ্যে এম এইচ পি কমপক্ষে ১৪টি ভোটের সমর্থন দিতে পারে।
তুরস্কের ৫৫০ সদস্য বিশিষ্ট পার্লামেন্টে এ কে পি’র ৩১৬ জন সদস্য রয়েছেন যা প্রয়োজনীয় তিন-পঞ্চমাংশ সংখ্যার কম। পার্লামেন্টে এম এইচ পি’র সদস্য সংখ্যা ৩৯। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এরদোগান সাংবিধানিক পরিবর্তন চাইছেন।
তুরস্কের অন্যতম উপ প্রধানমন্ত্রী নুরুদ্দীন কানিকলি শনিবার আগাম নির্বাচনের কথা নাকচ করে দিয়ে বলেন, মার্চ বা এপ্রিলে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরো বলেন, ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন এক সাথে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম দাবি করেন যে, এ বিল দেশকে অভ্যুত্থান থেকে রক্ষা করবে। বলা দরকার যে, ১৯৬০ সাল থেকে তুরস্কে তিন বার সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে যার ফলে দেশটি দীর্ঘদিন সামরিক শাসনে থাকে। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সংঘটিত অভ্যুত্থানটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিক পিপলস পার্টি (সি এইচ পি) এবং কুর্দিপন্থী পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচ ডি পি) এ কে পি’র সাংবিধানিক সংস্কারের বিরোধী। জুলাইয়ের ব্যর্থ অভুত্থানের পর যে হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয় তাদের মধ্যে এ দু’লের নেতারাও রয়েছেন।
শুক্রবার সি এইচ পি নেতা কামাল কিলিসদারোগলু বলেন, এ কে পি যে সংস্কার চাইছে তার ফলে তুরস্কের ১৪০ বছরের পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, এটা শাসকের পরিবর্তন, ব্যবস্থার পরিবর্তন নয়।
এক বছরেরও বেশী সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকার পর ২০১৪ সালে এরদোগান প্রেসিডেন্ট হন। এরদোগান যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মত নির্বাহী পদ্ধতির প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থা চান।    
তার বিরোধীরা জুলাই থেকে গণ গ্রেফতার ও চাকরিচ্যুতির কথা উল্লেখ করে এরদোগানকে ক্রমবর্ধমানভাবে কর্তৃত্ববাদী আচরণের জন্য অভিযুক্ত করেন।
শনিবারে বহু খবরে বলা হয়, এ কে পি’র প্যাকেজে তুরস্কের নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের পুনর্গঠনের কথাও বলা হয়েছে।
এ কে পি’র সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে পার্লামেন্টের ভূমিকা শুধু আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে। এমনকি বাজেটও থাকবে পার্লামেন্টের বাইরে। প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্ব খর্ব করতে হলে পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হবে।
প্রেসিডেন্টের থাকবে ব্যাপক নির্বাহী ক্ষমতা এবং মন্ত্রী নিয়োগের বিশেষ ক্ষমতা।
উল্লেখ্য, জুলাই থেকে তুরস্কে জারিকৃত জরুরি অবস্থা বলে এরদোগান ব্যাপক-ভিত্তিক ক্ষমতা ভোগ করছেন।  



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ