পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ মানবাধিকার প্রশ্নে অনেক দূর এগিয়েছে। যেসব দেশ এখন ইস্যুটি নিয়ে অনেক বেশি সোচ্চার, তারাও এতটা আগাতে পারেনি। মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশে অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়। তারপরও স্ট্র্যাটেজিক টুল হিসেবে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ইস্যুটি ব্যবহার করছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের ‘মানবাধিকার প্রশ্ন ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার করে বেসরকারি চ্যানেল একাত্তর টেলিভিশন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছরের মানবাধিকার প্রতিবেদন যারা করেন, তারা মানবাধিকার নিয়ে কতটা ধারণা রাখেন- সেটিও এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে তারা বছরে বছরে নিজের মতো বিষয়টি জানান দেয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আমি দায়িত্ব থাকাকালে বলেছি, তারা সব সময় মানবাধিকার লংঘন এবং আইনশৃংখলা পরিস্থিতিকে গুলিয়ে ফেলে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, বাংলাদেশে আসা জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধানও কিন্তু বলেছেন, কেবল এদেশেই স্থানীয় পর্যায়ে মানবাধিকার লঙ্খিত হচ্ছে, সেটি নয়। উন্নত বিশ্বেও কিন্তু মানবাধিকার লংঘন হয়। বাংলাদেশের সামাজিক, আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যে ধরণের মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে, সেটি সাফাই গাইতে বসিনি। যেসব সংস্থাগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো তো রাষ্ট্রের একটি অংশ। এখানের রাষ্ট্রর ভূমিকাটা কী, সেটাই খুব জরুরি।
এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডিয়াম সদস্য শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে মানবাধিকার রক্ষার জন্য। মানবাধিকার লংঘনের সংজ্ঞা এক এক দেশে এক রকম। এটি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গিগত দিক দিয়ে অনেকের প্রশ্ন আছে, অনেক বিতর্ক ও বিভেদ রয়েছে। মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি সব দেশেই কম- বেশি আছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, মানুষের পেটে ভাত, মাথার ওপর ছাদ না থাকলে, পরনে কাপড় না থাকলে মানবাধিকারসহ অন্যান্য (মানবাধিকার) বিষয়গুলো অনেক দূরের ব্যাপার। ১৯৯৬ সালেও দেশের অর্থনীতি খুব ভালো অবস্থানে ছিল না। সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রতিটি ক্ষেত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশসহ সকলের ফাউন্ডেশন কোর্সের সময় এই বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে, লেখানো হচ্ছে। মানবাধিকার নিয়ে গত ৫০ বছরে আমরা যতটা করতে পেরেছি, বিষয়টি নিয়ে যারা সোচ্চার তারা এর ধারেকাছেও ছিল না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বলেন, একটি কথা আছে, ‘আপনার স্বাধীনতা শেষ হয় সেখানে, যেখানে আমার নাকের ডগাটি শুরু হয়’। এটা মানবাধিকার প্রশ্নে একটি ভালো সংজ্ঞা। এটা আমরা মেনে চলতে পারলে মানবাধিকার নিয়ে কথার দরকার পড়বে না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে রিপোর্ট করলেই সেটি সত্য হবে, এমনটিও বলা যাবে না। তারা তাদের কাজ করবে। এ সময় ‘আয়না ঘর’ নিয়েও তিনি কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মানবাধিকার নিয়ে অনেক কিছু বলা হয়, তারা প্রতিবছর একটা প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। মানবাধিকার ইস্যুটি কৌশলগত বা স্ট্র্যাটেজিক টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে আমরা দেখেছি। বাংলাদেশে মানবাধিকার বিষয়টি কেমন, এই দুটোর মধ্যে পার্থক্যটাও আমাদের জানতে হবে। কারা গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাচ্ছে আর কারা পাচ্ছে না সেখানে রাষ্ট্রের নামগুলো দেখলে আমরা আশ্চর্য হই। জেনোসাইড করা রাষ্ট্রও আমন্ত্রিত হচ্ছে। অথচ আমরা (বাংলাদেশ) আমন্ত্রণ জানানো হয় না।
মানবাধিকার ও উন্নয়ন কর্মী খুশী কবির বলেন, প্রত্যেক দেশেই মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। আমাদের দেশের সিস্টেমেও কিছু কিছু আছে, সেটি আমি বলবো। আমাদের রক্ষা করবে যে প্রতিষ্ঠান, তার একজন দায়িত্বশীলের ব্যাখ্যা ভুল হতে পারে না। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
মানবাধিকার আইনজীবী অধ্যাপক জেড আই খান পান্না বলেন, মৌলিক অধিকারগুলোই হলো আমাদের মানবাধিকারের আসল জায়গা। এটা লঙ্খিত হলে আমি ধরে নেবে যে, আমার স্বাধীনতা থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছি। মানবাধিকার ইস্যু ‘স্ট্র্যাটেজিক টুল’ হিসেবে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।