Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে ৫ হাজার কোটি ডলার ব্যয় এশীয় দেশগুলোর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

চার দশকের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে ধীরগতি অবলম্বন করছে এশিয়ার দেশগুলো। অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রেখে কঠোর মুদ্রানীতির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে মুদ্রানীতিতে এমন পার্থক্যের কারণে এশীয় মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ অবস্থায় ডলারের বিপরীতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এমন পদক্ষেপের আওতায় এশিয়ার সরকারগুলো গত মাসে ৫ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যয় করেছে। এ ব্যয়ের পরিমাণ ২০২০ সালের মার্চের পর সর্বোচ্চ। খবর স্ট্রেইটস টাইমস। বিশ্বব্যাপী পুঁজির প্রবাহ ট্র্যাক করা মার্কিন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এক্সান্টি ডাটা অনুসারে, চীন ব্যতীত এশিয়ার উদীয়মান দেশগুলো সেপ্টেম্বরে খোলা বাজারে ডলার বিক্রির জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে। জাপানকে অন্তর্ভুক্ত করলে এ ব্যয়ের পরিমাণ ৫ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হয়। এক্সান্টি ডাটার মতে, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে জাপানসহ এ অঞ্চলের ডলার বিক্রি আনুমানিক ৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের এ প্রবণতা ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে সক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংস্থাটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অন্যান্য সরকারি কর্তৃপক্ষের ডাটার ওপর ভিত্তি করে এ হিসাব করেছে। এদিকে অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার রেকর্ড উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের ব্লুমবার্গ ডলার স্পট সূচক আশির দশকের পর সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। ডলারের ঊর্ধ্বগতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পোর্টফোলিওতে অন্যান্য মুদ্রার মজুদের মূল্যমান হ্রাস করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, তাইওয়ান ও জাপানসহ উদীয়মান অর্থনীতিগুলো ব্যাপকভাবে ডলার বিক্রি করেছে। সেপ্টেম্বরে জাপানের ২ হাজার কোটি ডলার বিক্রি ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। গত মাসে হংকং, ফিলিপাইন, তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ডলার বিক্রি করেছে। এক্সান্টের জ্যেষ্ঠ কৌশলবিদ অ্যালেক্স ইন্ট্রা বলেন, উচ্চ সুদহারের মুখে উদীয়মান দেশগুলোর মুদ্রা চাপের মধ্যে রয়েছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কতটা বাড়ানো হবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। সুতরাং ডলারের বিপরীতে অন্যান্য মুদ্রার অবমূল্যায়ন সহসাই থামবে বলে মনে হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকারগুলোর পদক্ষেপ আরো বাড়তে পারে। সম্প্রতি ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হার ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির সরকার মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপ জোরালোর পরিকল্পনা করছে। এর আগেও অস্থিরতা কমাতে কিংবা নিয়ন্ত্রণ করতে এশিয়ার সরকারগুলো প্রায়ই বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে হস্তক্ষেপের আশ্রয় নিয়েছে। নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে বিদেশী মুদ্রা দুর্বল করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু গত মাসের ডলার বিক্রি আড়াই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মহামারীতে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলা বাজারে বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রির পদক্ষেপ নিয়েছিল। এদিকে বিশ্বজুড়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী হয়েছে। এটার কারণও তুলে ধরেছেন অ্যালেক্স ইন্ট্রা। তিনি বলেন, আংশিকভাবে সম্পদের বৃহত্তম পুনর্বণ্টনের কারণেও রিজার্ভে টান পড়তে পারে। কিন্তু চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এখন নগদ অর্থ বিক্রি করতে হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ১ ট্রিলিয়ন কিংবা ৮ দশমিক ৯ শতাংশেরও বেশি কমেছে। চলতি বছর রিজার্ভের পরিমাণ ১২ ট্রিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। বৈদেশিক মুদ্রার এ মজুদ কমার হার ২০০৩ সালে ব্লমবার্গের তথ্য সংগ্রহ শুরু করার পর সবচেয়ে বেশি। স্ট্রেইটস টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুদ্রার অবমূল্যায়ন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ