পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খাদ্য নিরাপত্তা, ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ একাধিক বৈশ্বিক সঙ্কটের মধ্যে শুরু হচ্ছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সপ্তাহব্যাপী বার্ষিক বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ’র প্রধান কার্যালয়ে অ ছয় দিনব্যাপী র্থনৈতিক খাতে সবচেয়ে বড় এ সম্মেলন গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে। অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে ১৮৮টি দেশের অর্থমন্ত্রী, সংসদ-সদস্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং দাতা সংস্থাগুলো মিলিত হবে এ সম্মেলনে। এবারের বৈঠকে আলোচ্য ইস্যু হচ্ছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ ব্যবস্থাপনা। বিশ্বব্যাংক ও আইএমফ’র কাছে বাংলাদেশ যে ৫৫০ কোটি (৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছে সে প্রস্তাবও এতে প্রাধান্য পাচ্ছে। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেট সহায়তা হিসাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের কাছে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে ঋণ প্রস্তাব দেয়। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের কাছে চাওয়া হয়েছে ১০০ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রধানদের সঙ্গে ওই সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের আলাদা বৈঠক হবে। সেখানে এসব ঋণের বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
তবে এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যোগ দেননি। অর্থমন্ত্রীর পরিবর্তে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মেলনটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গভর্নরের নেতৃত্বে সম্মেলনে যোগ দিতে ১১ সদস্যের একটি দল ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। এর মধ্যে আটজন গেছেন বাংলাদেশ থেকে। বাকি তিনজন ওয়াশিংটন থেকেই দলভুক্ত হয়েছেন। সদ্য ফিলিপাইনের ম্যানিলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সদর দফতরে বৈঠক করে আসায় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে নেতৃত্ব দিতে গভর্নরকে পাঠিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর ওই বছরের এপ্রিলে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলন ও অক্টোবরে বার্ষিক সম্মেলনে সশরীর যোগ দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। ২০২০ সালের মার্চে কোভিড-১৯-এর প্রকোপ বাড়তে থাকলে ওয়াশিংটনে এ সম্মেলন সরাসরি আর হয়নি। তবে এর পর থেকে অনলাইনে সম্মেলন হয়েছে বছরে দুবার এবং দেশে থেকে তিনি এগুলোতে যুক্ত হয়েছেন। কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কমে আসার পর এবারই প্রথম বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলন সরাসরি হচ্ছে ওয়াশিংটনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের এবারের সফরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। দলের অন্যরা হলেন অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, ইআরডি সচিব শরিফা খান, ইআরডির অতিরিক্ত সচিব আবদুল বাকী, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান, অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. ফেরদৌস আলম, অর্থ বিভাগের উপসচিব আবু দাইয়ান মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ এবং অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সৈয়দ আলী বিন হাসান। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল আলম, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও ইকোনমিক মিনিস্টার মো. মেহেদী হাসান দলের সদস্য হিসেবে আছেন।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার, আইএমএফের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্থনি এম সায়ের, এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দসহ সম্মেলনের ফাঁকে কয়েকটি বৈঠক করবে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
সম্মেলনে বাংলাদেশ কী তুলে ধরবে এবং সম্মেলন থেকে বাংলাদেশ কী আশা করছে, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা যা যা চাই, সবই পাব, আশা করছি। আমি সব বুঝিয়ে দিয়েছি। দলটি ফিরে এলে বোঝা যাবে, তারা কী করে এসেছে। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারসংক্রান্ত একটি অবস্থানপত্র তুলে ধরা হবে সম্মেলনে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ থেকে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ চায় সরকার। ঋণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বাংলাদেশ এর আগে আইএমএফের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। এ বিষয়েও ওয়াশিংটনে বৈঠক হবে বলে জানা গেছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর বিপরীতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে আর্থিক খাত, জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, সামাজিক সুরক্ষা এবং বাণিজ্য খাতে সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে আমার ধারণা বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এ ঋণ পাওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক আইএমএফের বার্ষিক সভায় যোগ দেবে বাংলাদেশ। এই মুহূর্তে সরকারের নগদ সহায়তা বেশি দরকার। আইএমএফের কাছেও বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে। তবে ১৩০ কোটি ডলার দেয়ার সম্ভাবনা আছে। এ জন্য সম্মেলনে শেষে চলতি মাসেই আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসতে পারে। আইএমএফের ঋণের বিপরীতে ভ্যাট যৌক্তিকরণ, প্রশাসনিক অটোমেশন, ভর্তুকি দেওয়াসহ নানা ধরনের শর্ত দেয়া হয়েছে। এতে খুব বেশিকিছু করতে হবে না। মোটা দাগে দুই থেকে তিনটি শর্ত সংস্কার করলেই এ ঋণ পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, সোমবার শুরু হওয়া সম্মেলন শেষ হবে ১৬ অক্টোবর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।