Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হ্যাটট্রিকে তৃষ্ণার স্বপ্নীল অভিষেক

মালয়েশিয়াকে ক্রিকেট শেখাল বাংলাদেশ

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২২, ১২:১৪ এএম

পাকিস্তানকে হারিয়ে থাইল্যান্ডের অঘটন
দুর্দান্ত শুরুর পরের ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হারের ধাক্কা। ঐ ম্যাচের পর থেকেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে সিলেটের উইকেট। দুই নম্বর গ্রাইন্ড থেকে মূল ভেন্যুতে ফেরে নারী এশিয়া কাপ। তাতেই আমূলে বদলে যায় বাংলাদেশ দলের শরীরি ভাষা। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত ক্রিকেটে মালয়েশিয়াকে গুড়িয়ে দিয়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান তোলে বাংলাদেশ। ম্যাচে অভিষিক্ত ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণার হ্যাটট্রিকে মালয়েশিয়া ৪১ রানে অলআউট হয়। আন্তর্জাতিক নারী টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকে যা দ্বিতীয় ঘটনা। ফলে ৮৮ রানের বড় জয় পায় বাংলাদেশ নারী দল। নারী দলের এমন পারফর্মেন্সে বেজায় খুশি ছিল দর্শকরা। কেননা মূল স্টেডিয়ামে ম্যাচ ফিরতেই দর্শকও বেড়েছে গ্যালারিতে।
১৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় মালয়েশিয়া। দেখে শুনে ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ১৩ রান তোলে তারা। ষষ্ঠ ওভারে অভিষিক্ত ফারিহার পেস বোলিংয়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়ে মালেশিয়ার টপ অর্ডার। ফারিহার হ্যাটট্রিকে ৫০ রানও ছুঁতে পারেনি মালয়েশিয়া। দলটির কোনও ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। নুর আরিয়ান নাট্যা ও এলসা হান্টারের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৯ রান করে। সব মিলিয়ে ১৮.৫ ওভারে ৪১ রানে অলআউট হয় দলটি। ফারিহা তৃষ্ণা ১২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। নারী টি-টোয়েন্টি অভিষেকে হ্যাটট্রিকের আগের একমাত্র কীর্তি গড়েছিলেন নেপালের অঞ্জলি চাঁদ। ২০১৯ সালে মালদ্বীপের বিপক্ষে ২.১ ওভার বোলিং করে অবিশ্বাস্যভাবে ০ রানে ৬ উইকেট নেওয়ার পথে এই স্পিনার করেছিলেন হ্যাটট্রিকও। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে আগের হ্যাটট্রিক করেছিলেন ফাহিমা খাতুন। ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৮ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পথে এই লেগ স্পিনার করেছিলেন হ্যাটট্রিক। এছাড়া লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন ও রুমানা আহমেদ ২টি করে উইকেট নেন। বাঁহাতি স্পিনার সানজিদা আক্তার মেঘলাও নেন ২ উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার। কিন্তু প্রথম বলেই ভয় ধরিয়ে দেন মালয়েশিয়ান পেসার সাশা আজমি। তার প্রথম বলটি টার্ন করে কিছুটা ভেতরে ঢোকে। শামীমা কিছুটা বিলম্বে ব্যাট চালিয়ে বিপদে পড়েন। আর তাতেই ব্যাটের ফাঁক পথে বল আঘাত হানে পায়ে। আবেদন হতেই আউটের সংকেত দেন আম্পায়ার। শামীমার বিদায়ের পর ফারজানা হক পিংকি নেমেও বেশিদ‚র যেতে পারেননি। ২৪ বলে ১০ রান করেন এই ব্যাটার। এরপর টুর্নামেন্টে প্রথম সুযোগ পাওয়া মোর্শেদা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক নিগার দারুণ এক ইনিংস খেলেন। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। নিগার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। দারুণ এক চারে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান বাংলাদেশের অধিনায়ক। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে লং শটস খেলতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। ৩৪ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় বাংলাদেশ অধিনায়ক খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস। এটা নিগারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি।
তার আগে অবশ্য ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মোর্শেদা। শেষ বলে দ্রæত ২ রান নিতে গিয়ে রান আউটের শিকার হন মোর্শেদা। ৪৭ বলে ৫০ রান ছোঁয়া বাঁহাতি এই ব্যাটার ৫৪ বলে ৫৬ রান করে আউট হয়েছেন, মেরেছেন ৪ বাউন্ডারি। এক ওভারে উইকেটে জমে যাওয়া দুই ব্যাটারের আউটের পর শেষ ওভারে রান তুলতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৬ রান তুলতে হারায় ১ উইকেট তারা। ফাহিমা খাতুন (৫) রান আউটের শিকার হন। রিতু মনি ২ ও রুমানা আহমেদ অপরাজিত ছিলেন ১ রানে। সব মিলিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১২৯ রান। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মালেশিয়া দলের মাহিরাহ ইসমাইল, উইনিফ্রেড ও সাশা আজমি।
একই ভেন্যুতে দিনের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছে থাইল্যান্ড। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে মাত্র ১১৬ রান তুলতে পারে আগের ম্যাচে বাংলাদেশকে কাঁদানো বিসমাহ মারুফের দল। সিদার আমীন (৫৬) ছাড়া আর কেউই করতে পারেননি বলার মতো রান। জবাবে এক বল আগে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে থাই মেয়েরা। তাদের ওপেনার নিথাকান চান্থাম (৬১) বিদায় নিলে বিপদে পড়ে থাইল্যান্ডও। শেষ দিকে রোজেনাম কোনার ৫ বলে ৯ রানের ছোট্ট ক্যামিওতে রোমাঞ্চ জেতে থাই মেয়েরা। মেয়েদের এশিয়া কাপে থাইল্যান্ডের এই জয় সেমি-ফাইনালের সমীকরণ বেশ জমিয়ে দিয়েছে। বড় চার দলের বাইরে শেষ চারে থেকে লড়াইয়ে থাকছে তারাও।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ