Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারী কর্মকর্তা-এমপির সঙ্গে প্রতারণা, হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছে জাকির

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২২, ৩:০১ পিএম

কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন।


পুলিশ বলছে, জাকির প্রতারণার মাধ্যমে ৬০-৭০ টি গাড়ি দেখিয়ে বিভিন্ন পেশাজীবী ৬০০-৭০০ জনের সাথে প্রতারণা করেছেন। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা ও সরকারের এমপি রয়েছেন। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে ষ্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন। জাকির ৫-৬ জনের সহযোগীর সহায়তায় সে প্রতারণা করতো। সে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।

 

শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।


সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান বলেন , গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়। মামলাটি গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তার জাকির চেয়ারম্যান পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি কিনে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নেয়। পরে কেনা গাড়ি রেন্ট-এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য চুক্তি করে।


তিনি বলেন, সে একই গাড়ির বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির সাথে ভুয়া কাগজপত্র দ্বারা চুক্তি সম্পাদন করে। তাছাড়া একই রেজিস্ট্রিশন নম্বর সম্বলিত গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচলনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধ করে। পরবর্তীতে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয় ও গাড়ি কেনার অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও আগের বিক্রি করা গাড়ী স্বল্প মূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।


ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ। সেসময় তার কাছ থেকে ২টি মাইক্রো বাস উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরো আত্মসাৎকৃত ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সর্ম্পকে ডিবি প্রধান বলেন, প্রতারক জাকির প্রতারণার মাধ্যমে ৬০-৭০ টি গাড়ি দেখিয়ে বিভিন্ন পেশাজীবী ৬০০-৭০০ জনের সাথে প্রতারণা করেছেন। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা ও সরকারের এমপি রয়েছেন। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে ষ্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন।

 

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জাকির ৫-৬ জনের সহযোগীর সহায়তায় সে প্রতারণা করতো। সে আনুমানিক হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। মুন্সীগঞ্জ, বিক্রমপুরে একটি গ্রামে লোকদের কাছে ১২২ টি গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করেছেন। জাকির হোসেন তার প্রতিষ্ঠান আর. কে. মটরস এর নামে এবং তার আত্মীয় স্বজনের নামে ২৭ টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১২ টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে।

 

অধিক মুনাফা লাভের আশায় লোভের বশবর্তী হয়ে এধরণের প্রতারণার ফাঁদে পা দিতে সাধারণ মানুষকে নিষেধ করেণ ডিবি প্রধান। গাড়ি বা জমি কেনার আগে কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাই করার অনুরোধ করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংবাদ সম্মেলন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ