Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

| প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০২ এএম

প্রশ্ন : আমার মামার কাছে আমার মা ওয়ারিশের সম্পত্তি চাইতে গেলে মামা বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করে মায়ের সম্পত্তি না দেয়ার জন্য। বলেন যে, ওয়ারিশের সম্পত্তি নিলে মানুষ ধ্বংস হয়ে যায়। এ ব্যাপারে ইসলামে কী নিয়ম আছে দয়া করে বলবেন কি? একপর্যায়ে দিতে চাইলেও মামা পাওনা সম্পত্তির অর্ধেক দিতে চায়, কিন্তু মা অর্ধেক নিতে নারাজ, এখন আমাদের কী করা উচিত? এখন যদি মা নিজের নামে মায়ের পাওনা জমি খারিজ করে ভোগদখল করে তাহলে ইসলামে কোনো বাধা আছে কি?
উত্তর : আপনার মা যা বলছেন তাই ঠিক। আপনার মামার বক্তব্য ও আচরণ ঠিক নয়। এ দেশে একটি কথা চালু আছেÑ বোনেরা ওয়ারিশ নিলে বাবার বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অবাস্তব। অন্য ধর্মের বুলি। আসলে বোনদের ওয়ারিশ না দিলে সময়ে এ বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়। প্রকাশ্যে ধ্বংস না হলেও এর মানুষগুলো শান্তিহীন জীবন-যাপন করে। নৈতিকভাবে ধ্বংস হয়। আর বড় ধ্বংসটি থাকে আখেরাতে। ওয়ারিশ না দিয়ে কিংবা নির্দোষ উপায়ে মাফ না করিয়ে কোনো লোক আখেরাতে নাজাত পাবে না। তা সে যত বড় নামাজি বা পরহেজগারই হোক। এ মামলায় আমাদের দেশের শতকরা ৯০ ভাগের চেয়েও বেশি মানুষ পরকালে ধরা খাবে বলে আমার ভয় হয়। কারণ, বান্দার হক আল্লাহ নিজে ক্ষমা করবেন না। যতক্ষণ বান্দা ক্ষমা না করে। নতুবা এর বদলে নিজে সওয়াব দিয়ে কিংবা তার গুনাহ নিয়ে এর বিনিময় শেষ করতে হবে। যার ফলে জান্নাতি লোক জাহান্নামি সাব্যস্ত হয়ে যেতে পারে। আপনার মা’কে তার শরিয়তসম্মত পাওনার অর্ধেক দিলেও মামা দায়মুক্ত হবেন না। পুরোটাই দিতে হবে। দেয়া সম্ভব না হলে কেন সম্ভব নয়, তা ভালোভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে মা ছাড় দিলে মামা কিছু কমে রেহাই পেতে পারেন। জোর করে কোনোটাই সম্ভব নয়। আপনার মা আইনগত উপায়ে নিজে সম্পত্তি কাগজপত্রে ও দখলসূত্রে বুঝে নিয়ে আরামসে ভোগ দখল করতে পারেন। এতে তার কোনো গুনাহ বা অপরাধ হবে না। মামাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার কারণে সওয়াব হতে পারে। বাবার বাড়িটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য তিনি প্রশংসিত হতে পারেন। সব নারীর জন্য এ মাসআলা প্রযোজ্য। সারা দেশের সব মা বোন যদি এ বিষয়ে সতর্ক ও সোচ্চার হন, তাহলে বহু বাপ-চাচা ও ভাই-ভাতিজারা বান্দার হক মারার গজব থেকে রক্ষা পেতে পারে।
প্রশ্ন : কোনো স্ত্রী যদি অন্যায়ভাবে প্রায় সময় স্বামীর গায়ে হাত তোলে, অর্থাৎ স্বামীকে মারধর করে। সে ক্ষেত্রে স্বামীর করণীয় কি?
উত্তর : অন্যায়ভাবে কেন, ন্যায়ভাবেও তো স্ত্রী স্বামীর গায়ে হাত তুলতে পারে না। এমন কোনো সমস্যা হলে স্ত্রী অভিভাবকদের বলবে, নিকটজনদের সহায়তা নেবে, প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবে। কোনো কারণেই স্ত্রী স্বামীকে মারধর করতে পারবে না। স্বামীও সম্পর্ক, কর্তৃত্ব, বয়স ইত্যাদি বিবেচনায় স্ত্রীকে প্রয়োজনে সহনীয় পর্যায়ের শাসন করতে পারলেও মারধর করতে পারে না। পিতা যেমন সন্তানদের পরিমিত শাসনে রাখেন, স্বামীও সম্ভাব্যক্ষেত্রে স্ত্রীকে এ পর্যায়ের শাসন করতে পারে। মারধর কোনো সময়ই করতে পারে না। আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত মারধর কি স্ত্রীর কোনো স্বভাবগত আচরণ কি না, মানসিক অসুস্থতা বা সীমাতিরিক্ত রাগ কি না, তা ভালো করে বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার পক্ষ থেকে যদি এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়ার কোনো উস্কানী বা ত্রæটি থেকে থাকে, তাহলে সেটাও দূর করার চেষ্টা করুন। যদি নিজের দিক থেকে আপনি পরিষ্কার হয়ে থাকেন আর স্ত্রী অস্বাভাবিক বা রোগী না হয়ে থাকে, তাহলে এর যৌক্তিক প্রতিকার করুন। তবে, তা হতে হবে শরীয়ত, সামাজিকতা ও আইনের ভেতরে থেকে। বিষয়টি নিয়ে একজন প্রকৃত জ্ঞানী মুফতি ও আলেমের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।



 

Show all comments
  • Shahadat Hasan ১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৩৫ এএম says : 0
    এটাই এখনকার পরিস্থিতি
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Jashim Uddin ১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৩৬ এএম says : 0
    বর্তমানে বেশিরভাগ ভাই বোনের হক মেরে খায়
    Total Reply(0) Reply
  • Md Amin ১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৩৫ এএম says : 0
    এটি তার হক মা ভোগ করবে এটি ইসলামের তার অধিকার আর মামা একটা না দিতে চায় তার জন্য কঠিন শাস্তি দিবে এই আল্লাহ বলেছেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ