নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
কোমল পানীয় ‘মাউন্টেন ডিউ’ এর বিজ্ঞাপন চিত্রে ব্যবহৃত তাদের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ভয়ের পরেই জয়’। তবে বাংলাদেশ দলের এবারের সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর যেন বলছে ঠিক তার উল্টা কথা, ‘জয়ের পরও ভয়’! প্রথমটিতে হারতে হারতে বাঁচা, দ্বিতীয়টিতে কিছুটা ‘মানসম্মত’ জয়ের ২-০তে সিরিজ জয়। সবই প্রত্যাশিত। তবে নবাগত আমিরাতের বিপক্ষে এই সিরিজে তো জয়টাই মুখ্য নয়, বাংলাদেশের চাওয়া ছিল কিছু প্রশ্নের উত্তর। সেসব মেলেনি খুব একটা, বরং উঁকি দিচ্ছে আরও বেশি প্রশ্ন।
গতপরশু রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগের ম্যাচের উইকেটেই হলো এই ম্যাচ। কিছুটা শুষ্ক থাকলেও উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়কই। ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করতে পারল ২০ ওভারে ১৬৯। ব্যাটিংয়ে নামা সব ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট ১২২-এর বেশি। বাংলাদেশের বাস্তবতায় দারুণ ব্যাপার। কিন্তু ফিফটি নেই একজনেরও। শেষ ৫ ওভারে বাউন্ডারি ¯্রফে ৩টি! বোলিংয়ের শুরুটাও দুর্দান্ত। ৭ ওভার শেষে আমিরাতের রান ৪ উইকেটে ৩০। কিন্তু সেখান থেকে তারা খেলে ফেলল পুরো ২০ ওভার। ১৩৭ পর্যন্ত যেতে স্বাগতিকদের উইকেট পড়ল পরে আর মোটে একটি!
‘মেক শিফট’ থেকে নিয়মিত ওপেনার হওয়ার চেষ্টায় থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস দলের সর্বোচ্চ। আমিরাতের সঙ্গে অন্তত ১৮০ রান করতে না পারা কিংবা ব্যাটসম্যানদের কারও বড় ইনিংস খেলতে না পারার দিকে আঙুল তোলাই যায়। যেমন প্রশ্ন তোলা যায় বোলিং নিয়েও। ২৯ রানে ৪ উইকেট হারানো আমিরাত পরে করে ফেলল ৫ উইকেটে ১৩৭। আগের ম্যাচের মতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই এবার হলো না। তবু বাংলাদেশের ৩২ রানের এই জয়ে পুরো তৃপ্তি ধরা দিল না।
টস ভাগ্যকে এ দিনও পাশে পায়নি বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংয়ের শুরুটায় ছিল কিছুটা স্বস্তি। মিরাজ ও সাব্বির রহমান এ দিন দলকে মোটামুটি ভালো শুরু এনে দিতে পারেন। প্রথম ওভারে ব্যাটের কানায় লেগে চার পেলেও সাব্বির পরে ফ্রি হিট পেয়ে কাজে লাগান বিশাল ছক্কায়। প্রথম তিন ওভারে রান আসে ২৬। চতুর্থ ওভারে সাব্বির বিদায় নেন আলগা শটে। মিরাজ ও লিটন দাস মিলে তবু সচল রাখেন রানের ধারা। তাতে পাওয়ার প্লেতে রান আসে ৪৮। বাউন্ডারি আসতে থাকে পাওয়ার প্লে শেষেও। তবে দারুণ শুরুটাকে বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি লিটন। বাঁহাতি স্পিনার আয়ান আফগান খানকে জায়গা বানিয়ে কাট করে তার ইনিংস থামে ২০ বলে ২৫ রান করে।
মিরাজ অবশ্য মাঝের সময়টায় একটু ঝিমিয়ে পড়েন। আরেকপ্রান্তে তা পুষিয়ে দেন আফিফ হোসেন। আগের ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে তিনি উইকেটে যাওয়ার পর থেকে শুরু করেন ধুন্দুমার ব্যাটিং। লম্বা সময় অবশ্য টিকতে পারেননি, থেমে যান ১০ বলে ১৮ রানের ক্যামিও খেলে। উইকেটে যাওয়ার পরপর মোসাদ্দেকের ব্যাটও কথা বলতে শুরু করে আফিফের সুরে। দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। মিরাজও তাতে যেন জেগে ওঠেন। তিন বলের মধ্যে দুটি চার মেরে তিনি এগিয়ে যান টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটির পথে। কিন্তু আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তে সেই মাইলফলক আর ধরা দেয়নি। বাঁহাতি পেসার সাবির আলির বলে তাকে এলবিডবিøউ দেন আম্পায়ার। টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার বোঝা যায়, বল পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে।
ইয়াসির আলি উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই বাউন্ডারি আদায় করেন পুল শটে। তবে এরপর তিনি আর মোসাদ্দেক পারেননি প্রত্যাশিত দ্রæততায় রান তুলতে। মোসাদ্দেক শেষ পর্যন্ত বড় শটের চেষ্টায় আউট হন ২২ বলে ২৭ রান করে। ইয়াসির পরে জাহুর খানকে ছক্কা মারলেও যথেষ্ট দ্রæত রান তুলতে পারেনি। সেটা পারেননি সোহানও। শেষ ওভারে গিয়ে কিছুটা পুষিয়ে দেন অধিনায়ক। ওভারের প্রথম বলে মারেন চান, ঠিক আগের ম্যাচের মতোই শেষ বলটি ছক্কায় ওড়ান লং অফ দিয়ে। শেষ ৫ ওভারে আসে ৪৩ রান, বাউন্ডারি ছিল তাতে ¯্রফে ৩টি।
রান তাড়ায় আরব আমিরাত এ দিন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি আগের ম্যাচের মতো। শুরু থেকেই তাদের চেপে ধরে বাংলাদেশের বোলাররা। একাদশে ফেরা তাসকিন গতির সঙ্গে মুভমেন্টও আদায় করে নেন। নাসুম আহমেদ ক্রিজে আটকে রাখেন ব্যাটসম্যানদের। প্রথম ৪ ওভারে রান আসে কেবল ১১। পঞ্চম ওভারে মুহাম্মদ ওয়াসিম টানা দুটি বিশাল ছক্কা মারেন নাসুমকে। তবে পরের ওভারেই তাকে থামিয়ে দেন তাসকিন। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আক্রমণে এসে মোসাদ্দেক শিকার ধরেন টানা দুই বলে।
২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে পড়ে আমিরাত। সোহান এই সুযোগে সাব্বিরকে বোলিংয়ে বাজিয়ে দেখেন এক ওভার। পরে মূল বোলারদের কাছেই ফেরেন তিনি। কিন্তু সিপি রিজওয়ান ও বাসিল হামিদ দারুণ লড়াই করে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন দলকে। ১২ ওভারে ৯০ রানের জুটি গড়েন দুজন। ৪০ বলে ৪২ করে বাসিল আউট হন শেষের আগের ওভারে। অধিনায়ক রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৬ বলে ৫১ করে।
মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের বিশ্রামে সুযোগ পাওয়া তাসকিন-ইবাদত খারাপ করেননি বোলিং। তবে আরেক পেসার সাইফউদ্দিন এই ম্যাচেও ছিলেন একদম নির্বিষ। দেশের বাইরে অকার্যকর বোলিংয়ের ধারা থেকে বের হতে পারেননি নাসুম। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি পর্বে খুব বেশি আশার রসদ মিলল না এই আরব আমিরাত সফর থেকেও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।