নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টেনিসের সাথে তার সখ্যতা সেই শৈশব থেকেই। সেই ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে সুইস ওপেন দিয়ে পা রেখেছিলেন পেশাদার জগতে। কালে কালে কেটে গেছে ২৪ বছর। দুই যুগের এই পথচলায় সময়কে বন্দী করেছেন অর্জনের টালিখাতায়। একে একে শেকেসে উঠেছে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামসহ অসংখ্য পুরস্কার, সঙ্গে নাম-যশ-খ্যাতি। প্রিয় সেই অঙ্গণকে রজার ফেদেরার বিদায় বলে দিয়েছেন গত সপ্তাহেই। আজ থেকে লন্ডনে শুরু হতে যাওয়া লেভার কাপ দিয়েই এই যাত্রার ইতি টানতে যাচ্ছেন সুইস কিংবদন্তি। তিন দিন আগেই লন্ডনে পৌঁছে গেছেন শেষ টুর্নামেন্ট খেলতে। জীবনের এই পথচলায় সত্যিকারের সঙ্গী হিসেবে পাওয়া স্ত্রী মিরকা, যাদের জন্য এই জগতে আসা সেই প্রিয় বাবা-মা এবং পরিবারের সদস্যরাও এসেছেন এই আবেগঘন প্রতিযোগিতার সাক্ষী হতে। যা চলবে আগামি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেই পর্যন্ত থাকবে কি না টেনিসে এই খেলার সবচাইতে আলোকিত সম্রাটের পথচলা তা সময়ই বলে দেবে। তবে ফেদেরারের শেষের শুরুটা যে হয়ে যাচ্ছে আজই!
লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই আসরে বলতে গেলে চাঁদের হাটই বসতে যাচ্ছে। কোন তারকা নেই এ আসরে! দলীয় এই আসরে টিম ইউরোপের হয়ে শেষবারের মতো মাঠে নামবেন ৪১ বছর বয়সী ফেদেরার। টেনিসের চার কিংবদন্তী প্রথমবারের মতো একে অপরের প্রতিপক্ষ হিসেবে নয় খেলবেন সতীর্থ হিসেবে। ফেদেরারের সাথে একই দলের হয়ে খেলবেন রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ, অ্যান্ডি মারে। ঐতিহাসিক এই দলের নেতৃত্বে থাকছেন আরেক কিংবদন্তি বিয়ন বর্গ। লেভার কাপকে নিয়ে এমনিতেই উত্তেজনার কোন কমতি ছিল না। ফেদেরারের শেষ আসর হিসেবে ঐতিহাসিক প্রতিযোগিতা হতে যাচ্ছে ২০২২ সালের লেভার কাপ। গত দুদিন অনুশীলনের সময় ফেদেরার ছিলেন এতটাই স্বমেজাজে, দেখে কে বলবে খেলোয়াড় জীবনের শেষ পেশাদার প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সুইস মহাতারকা!
এ প্রজন্মের টেনিসের সবচেয়ে বড় ত্রয়ী ফেদেরার, নাদাল ও জোকোভিচ। এ পর্যন্ত টেনিস কোটে ফেদেরার-নাদালের দেখা হয়েছে ৪০ বার যার মধ্যে ২৪টি জয় নাদালের এবং ফেদেরারের হাসি ১৬ বার। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ২০ বার ছুয়েঁই ক্যারিয়ারের ইতি টানতে হলো ফেদেরারকে। ২২ বার ছুঁয়ে দেখেছেন নাদাল এবং ২১ বার জোকোভিচ। শিরোপার হিসেব নিকেশ ছাপিয়ে ত্রয়ী এই তারকাকে শেষবারের মতো সতীর্থ হিসেবে দেখতে পুরো টেনিস বিশ্ব। ১৫ সেপ্টেম্বর ফেদেরারের বিদায়ের বার্তা পাওয়ার সাথে সাথেই কিছুটা আবেগঘন টুইট করেছিলেন নাদাল। যেখানে তিনি ফেদোরারকে একইসাথে বন্ধু ও প্রতিপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন। টুইট বার্তায় নাদাল জানিয়েছিলেন তিনি কখনই চাননি এমন দিন আসুক। শেষবারের মতো দুজনকে একই সাথে মাঠে দেখতে প্রস্তুত লন্ডন প্রস্তুত পুরো বিশ্ব।
তিন তিনবার হাটুতে অস্ত্রপচার করা ফেদেরার বয়সের ভারে টেনিস থেকে চলে গেলেও থাকবে তার অনন্য কীর্তি। ২০০৩ সালে অষ্ট্রেলিয়ার মার্ক ফিলিপ্পোসিসকে হারিয়ে সর্বপ্রথম উইম্বলডন জয়ের পর রেকোর্ড সংখ্যক আটবার উইম্বলডন শিরোপা নিজের করে নিয়েছেন সুইডিস তারকা। সর্বশেষ উইম্বলডন জয়ের স্বাদ পান ২০১৭ সালে। ২০ বার জিতেছেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা। জিতেছেন ১০৩টি এটিপি সিঙ্গেল শিরোপা। ফেদেরার তার ক্যারিয়ারে সর্বমোট ১২৫১টি ম্যাচে জয়ী হয়েছেন।
দীর্ঘ এ ক্যারিয়ারে কখনোই বিতর্কের সঙ্গে আপোস করেননি। বিতর্ক তাকে কখনই ছুঁয়ে দেখতে পারেনি। উল্টো টেনিসকে দিয়েছেন দুহাত ভরে। তিনি যেভাবে খেলেছেন তা ছিল চোখের সৌন্দর্য্য, তা ছিল শিল্প। খুবই অনায়াসে টেনিসটা খেলতেন দীর্ঘ সময় টেনিসের মুকুট পরে থাকা এই সম্রাট। আর কখনো টেনিস কোটে হাত না ঘুরালেও কোটি ভক্তের চোখে লেগে থাকবে ২০১৯ সালে মেলবোর্নের সেই ব্যাকহ্যান্ড, মনে থাকবে ২০১৮ সালে সর্বশেষ গ্র্যান্ডস্ল্যাম শিরোপা হাতে নিয়ে আনন্দে ভিজে যাওয়া অশ্রুশিক্ত চোখদুটো, মনে থাকবে আরো অনেক স্মৃতিই। টেনিসের শৈল্পিক এই জাদুকরের শেষ আসরটি হয়তো তার কোটি ভক্তের জন্য আবেগের, ভালোবাসার। এ আসর শেষে আর কখনোই সাবলীল ভঙ্গিতে হাত ঘুরাতে দেখা যাবে না ফেদেরারকে। এটি মেনে নেওয়া কঠিন হলেও এটিই সত্য, এটিই নিয়ম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।