দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হলো হজ। এই ফরজ কাজটি পালনের জন্য মুসলমানদের যেতে হয় মক্কা নগরীতে। ফলে মক্কায় কা’বা ঘর হয়ে উঠেছে মুসলমানদের প্রধান পুণ্যভূমি। প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মুসলমান হজ পালন করেন। হজ বিশ্ব অর্থনীতির বড় প্রভাবক। আর সউদী অর্থনীতির বড় অংশ। এরপরও হাজীদের ঘর ভাড়ার চার্জ বেড়েই চলেছে।
এই হজ ইতোমধ্যে চল্লিশ (৪০) বারের মতো পুরো অথবা আংশিক স্থগিত হয়েছে নানা কারণে- কখনো যুদ্ধ, কখনো রাজনৈতিক চাল; কখনো ঘাতক মহামারির হানা; কখনো বা শুধু প্রাকৃতিক বৈরিতা ছিল এর কারণ।
হজযাত্রীদের ওপর সাফাকের হামলা : ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ইসমাইল ইবনে ইউসুফ আল-সাফাক বাগদাদের আব্বাসী সালতানাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আচমকা আরাফাতের ময়দানে হজযাত্রীদের ওপর হামলা করে। কয়েক শ’ হাজীর মৃত্যু হয়। এরপর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সেবারের হজ বাতিল করা হয়।
কারামতীয়দের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ : মক্কা নগরীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ বলা হয় এ আক্রমণকে। ৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে কারামতীয়দের নেতা আবু তাহের আল জানাবি মক্কার ওপর হামলা করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। ঐতিহাসিক জাহাবি তার-তারিখ-আল ইসলাম গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন-৩১৬ হিজরীর ঘটনার কারণে কারামতীয়দের ভয়ে সে বছর কেউ আর হজ পালন করেননি। আবু তাহের হজ চলাকালে কা’বা গৃহের সামনে সশস্ত্র দাঁড়িয়ে থেকে তার যোদ্ধাদের দিয়ে হজযাত্রীদের নির্বিচারে হত্যা করিয়েছে।
রিয়াদের গবেষণা সংস্থা ‘কিং আবদুল আজিজ ফাউন্ডেশন আর রিসার্চ অ্যান্ড আর্কাইভস’ তাদের সম্প্রতি প্রকাশিত জার্নালে উল্লেখ করেছে, কারামতীয়রা ‘মসজিদুল হারাম’ লুট করে পবিত্র কা’বা ঘর থেকে হাজরে আসওয়াদ পাথরটি নিয়ে বাহরাইনে ফিরে যায়। পরবর্তী সময়ে বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাথরটি ফিরিয়ে আনার আগ পর্যন্ত দশ বছর হজ আদায় বন্ধ থাকে।
আব্বাসী ও ফাতেমি খেলাফতের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব : এর ফলে হজ পালনে বাধাগ্রস্ত হতে হয়েছে ধার্মিকদের। ৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ইরাক ও সিরিয়ার আব্বাসী খেলাফত এবং মিসরের ফাতেমি খেলাফতের মধ্যে শুরু হওয়া বিরোধ মুসলমানদের হজ পালনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই বিরোধের আট বছর পর ৯৯১ সালে আবার আনুষ্ঠানিকভাবে হজ পালন শুরু হয়।
১৮৩১ সালের প্লেগ : এ মহামারির কারণে কয়েকবার হজ বন্ধ ছিল। ১৮৩১ সালের পর ১৮৩৭ সালে আবার মহামারি দেখা দেয় মক্কায়। এ কারণে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত লাগাতার হজ বন্ধ থাকে।
কলেরার কবলে মক্কা : পাঁচ বছর পর ১৮৪৬ সালে কলেরা মহামারি শুরু হয়। তাতে মক্কায় পনের হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এ জন্য বার বার হজ স্থগিত রাখতে হয়।
এবার অর্থাৎ ২০২০ সালে বিশ্বের নানা দেশের মুসলমানদের পক্ষে প্রস্তুতি নিয়েও মহামারি ‘করোনাভাইরাস’-এর কারণে হজ পালন সম্ভব হলো না। কেবল সউদী আরবে অবস্থানরত দশ হাজার মুসলমান এবার হজ পালন করে। তারা পবিত্র কা’বা ঘরকে স্পর্শ করতে ও হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করতে পারেননি। (দ্র: দৈনিক প্রথম আলো ৩১-১-২০ শুক্রবার)
পবিত্র হজের সময় যত প্রাণহানি : সউদী আরবের মিনায় হজের শেষ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতার সময় শয়তানকে লক্ষ করে প্রতীকী পাথর ছুড়তে যাওয়ার সময় পদদলিত হয়ে প্রায় আটশ’ হাজীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দেশ-বিদেশের বেশ কয়েক শ’ হাজী। সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ মুসলমান হজ পালন করেন। হজ পালন করতে গিয়ে নানা সময়ে পদদলিত হয়ে বহু হাজীর মৃত্যুর তালিকা দেয়া হলো :
* ১৯৯০ সালে : মক্কায় পদদলিত হয়ে ১ হাজার ৪২৬ জন হাজী মারা যান। * ১৯৯৪ সালে : মিনায় শয়তানকে পাথর ছুড়ে মারার সময় ২৭০ জন মারা যান।
* ১৯৯৭ সালে : মিনায় হাজীদের থাকার তাঁবুতে আগুন লেগে ৩৪০ জনের মৃত্যু। আর ১ হাজার ৫০০ জান আহত হন।
* ১৯৯৮ সালেও মিনায় শয়তানকে লক্ষ করে পাথর ছুড়ে মারার সময় ২৮০ জন হাজীর মৃত্যু হয়। পদদলিত হয়ে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
* ২০০১ সালে : মিনায় পদদলিত হয়ে ৩৫ জনের মৃত্যু।
* ২০০৪ সালে : হজ চলাকালে ২৪৪ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক আহত।
* ২০০৬ সালে : মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় দুর্ঘটনায় ৩৬০ এর বেশি মৃত্যু।
* ২০১৫ সালে : এ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর হজ চলাকালে মক্কায় মসজিদুল হারামে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ক্রেন ভেঙে পড়ে ১১১ জন নিহত হন। ৪০০ জন আহত। (সূত্র : পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত ডন পত্রিকা)
* হজে ২৫ বছরের মধ্যে ভয়াবহ ঘটনা ও প্রথম আলো ডেস্ক।
সউদী আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর অদূরে মিনায় পদপিষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ৭৬৯ জন হাজী নিহত ও আরো ৯৩৪ জন আহত হয়েছেন। গত ২৫ বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। এর কয়েকদিন আগে ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ মক্কায় পবিত্র মসজিদুল হারামে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত বিশাল আকারের এক ক্রেন ভেঙে নিহত হন অন্তত ১১১ জন। হজের সময় সংঘটিত দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯০ সালে মক্কার এক টানেলে। সে সময় পদদলিত হয়ে মারা যান ১ হাজার ৪২৬ জন হাজী। এদিকে বিপুল সংখ্যক হাজীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ছে সউদী আরব। সউদী সিভিল ডিফেন্সের পরিচালকের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, হজের শেষ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা মিনার বড় জামারাকে (বড় শয়তানের প্রতীকী স্তম্ভ) লক্ষ করে কঙ্কর মারতে যাওয়ার পথে পদদলিত হয়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। মিনা থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা বাসমা আতাসি জানান, মিনায় হাজীদের অবস্থানের জন্য নির্মিত তাঁবুগুলোর মাঝের একটি সড়কে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কটি ‘স্ট্রিট-২০৪’ নামে পরিচিত। শয়তানকে লক্ষ করে কঙ্কর নিক্ষেপের স্থানটাতে দুর্ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থল থেকে আল জাজিরার আরেক সংবাদদাতা ওমর আল সালেহ বলেন, আমি এমন কিছু দৃশ্য দেখেছি, যা সত্যিই হৃদয়বিদারক। একজনের ওপর আরেকজন এভাবে স্তূপাকারে মৃতাবস্থায় পড়ে ছিলেন হাজীরা।
মক্কা ট্র্যাজেডি-১৯৭৫-২০১৫
১৯৭৫ আগুনে ২০০
১৯৭৯ বন্দুকধারীর হামলা ১৫৩
১৯৮৭ ইরানী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান ৪০২
১৯৯০ বাতাস চলাচল বন্ধে পদদলিত হয়ে মৃত্যু ১৪২৬
১৯৯৪ পদদলিত হয়ে মৃত্যু ২৭০
১৯৯৭-৯৮ পদদলিত ও আগুন ২৭০-৩৪৩-২৫১-৩৬৪
২০০৪-০৬ ক্রেন ভেঙে ও পদদলিত হয়ে ১১১-৭৬৯
(দ্র: এএফপি নিউইয়র্ক টাইমস) কেন এমন হলো!
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বাংলাদেশ প্রতিদিন ২৯-০৯-১৫ মঙ্গলবার বলেছেন : ‘‘মুসলিম জাহান আল্লাহর গভীর অসন্তুষ্টিতে নিপতিত কি না বুঝতে পারছি না। হজের আগে রিগ ভেঙে শতাধিক প্রাণ গেল। হজের সময় আবার শয়তানকে পাথর ছুড়তে গিয়ে মিনায় পদদলিত হয়ে কত মানুষ মারা গেল। সরকারি হিসাবে ৭০০ কয়েকজন, হাজারের ওপর আহত বললেও সংখ্যা যে ঠিক নয় এ ব্যাপারে সবাই একমত। কী হলো দুনিয়ায়! যেখানে অবরাহা আল্লাহর ঘর ধ্বংস করতে এসে বিফল হয়েছিল। আবাবিল পাখির দ্বারা আল্লাহ তাঁর ঘর রক্ষা করেছিলেন। সেই কা’বায় এমন কেন হবেÑ ভেবে পাই না, নাকি দুনিয়া থেকে দিন দিন আল্লাহর রহমত বরকত উঠে যাচ্ছে।”
সুফী সাধক বারো শরীফের মহান ইমাম বলে গেছেন ‘ইব্রাহীমীর সময় শেষ।’ মোহাম্মদী এখন প্রকাশিত হচ্ছে। তাই শান্তি ও মুক্তির পথ এখন মোহাম্মদী। ইবরাহীমির একটা অংশ পবিত্র হজ। তাই এর আধ্যাত্মিক শক্তিও আগের তুলনায় কমে যাবে। এরই বাহ্যিক প্রকাশ এসব দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। তাই, সময় এসেছে এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করার। আর সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে পথ চলা এবং মুসলিম বিশ্বকে পথ দেখানো। খ্রিষ্টানরা তাদের নবীর দিন রবিবার; ইহুদিরা শনিবার-কে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে। তারা কেবল নিজ নিজ নবীকে মান্য করে। তাই, দেখা যায় হযরত ঈসা ও হযরত মূসা নবীর অনুসারীরা যে আধ্যত্মিক এবাদত করেন তা সবই তাদের নবীর মাধ্যমে শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। উরাবৎংরভরপধঃরড়হ হচ্ছে না। (কারণ প্রতিটি নবীর এক একটা আধ্যাত্মিক বলয় আছে)। এক আধ্যাত্মিক কেন্দ্রবিন্দুতে যেয়ে যে আধ্যাত্মিক শক্তি সৃষ্টি হচ্ছে তা তাদের চালিত করছে। তাই ঈসা ও মূসা নবীর অনুসারীদের মধ্যে আমাদের মতবিভেদ বা অনৈক্য নেই। তারা শান্তিতে শক্তি সঞ্চয় করে জ্ঞান ও বিজ্ঞানে আজ এগিয়ে যাচ্ছে। যত বিভেদ অনৈক্য মুসলমানদের মধ্যে। কারণ, আমরা মোহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত হয়ে ও বহু নবীকে মেনে নিয়ে তাদের অনুসরণ করছি, বিশেষ করে ইব্রাহিমী। যার ফলে আমরা সম্মিলিতভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে এবাদত করে যে আধ্যাত্মিক শক্তি সৃষ্টি করছি তা উরাবৎংরভরপধঃরড়হ হচ্ছে, ছড়িয়ে পড়ছে অণুপরমাণুর মতো বিভিন্ন শক্তিতে। যার ফলে আমাদের মধ্যে বিভেদ। প্রেম বা ঐক্য বা শক্তি সৃষ্টি হচ্ছে না।
বারো শরীফের মহান ইমাম হযরত শাহ সুফী মীর মাসউদ হেলাল (র.) বলেছিলেন, ‘ইব্রাহীমিই তো এ বিভেদ সৃষ্টি করে রেখেছে। যত দিন না আমরা মোহাম্মদীতে আসব, ততদিন আমাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি হবে না। মোহাম্মদীই পারবে বিশ্বের মুসলমানকে একতাবদ্ধ করতে। বিশ্বে শান্তি আনতে।’
বিজ্ঞানসম্মতভাবে বলা যায়, তখন এক বড় আধ্যাত্মিক শক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে এসে শক্তি সৃষ্টি হবে তা উম্মতে মোহাম্মদীর আত্মায় প্রভাব ফেলবে, যা তাকে একতাবদ্ধ করবে। শান্তি আসবে; শান্তিতেই তো শক্তি। জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমান এগিয়ে যাবে; বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হবে।
আমরা ইব্রাহিমী মানতে গিয়ে নিজ নবীকে যতটা দরকার ততটা মানতে বা ভালোবাসতে পারছি না; আধ্যাত্মিক প্রেম বা শক্তি অন্য জায়গায় ভাগ হয়ে যাচ্ছে। কারণ আমরা পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাজ পড়ছি, যা আল্লাহ পাঁচজন নবীকে পড়তে বলেছিলেন। যেমন : ফরয নামাজ হযরত আদম (আ.); জোহরের নামায হযরত ইব্রাহীম (আ.); হযরত ইউনুস নবীর আসর; হযরত ঈসা (আ:)=এর মাগরিব, হযরত মূসা বা দাউদ (আ.)-এর এশা। হযরত দাউদ (আ.) হতে এসেছে রমযানের রোযা ও ঈদ; হযরত ইব্রাহিম হতে হজ ও কোরবানি; হযরত যাকারিয়া হতে জাকাত। এসব ক্ষেত্রে আমাদের শ্রেষ্ঠ নবীর বিষয়গুলোকে দূরে রাখা হয়েছে। আল্লাহ ও রাসূল (সা.) দয়া করেছেন; এখন সময় এসেছে। বারো শরীফ তথা মোহাম্মদী প্রচারিত হচ্ছে আসেন, আমরা বারো শরীফ তথা মোহাম্মদীতে এসে বিশ্ব ও শক্তিতে পরিণত হই। আমাদের আত্মার শক্তি মোহাম্মদের (সা.) বিশ্ব আত্মায় একাকার হয়ে। তবেই নূরে মোহাম্মদী অণু (অঃড়স) এক স্থানে এক শক্তিতে কেন্দ্রিভূত হয়ে বিশ্বশক্তিতে রূপ নিবে। আমরা বিশ্ব নেতৃত্বে পরিণত হব। প্রেম থেকেই তো শক্তি সৃষ্টি; তথা জ্ঞান-বিজ্ঞান-সভ্যতা-নৈতিকতা নেতৃত্ব। শক্তি (ঊহবৎমু) নিজে নিজে তৈরি কিংবা ধ্বংস হতে পারে না। তবে একরূপ থেকে আরেক রূপে রূপান্তির হতে পারে। শক্তির ৯টি রূপ দিয়ে শক্তি সংশ্লিষ্ট প্রায় সব ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া যায়। এ রূপগুলো হলো :
১. যান্ত্রিক শক্তি, ২. তাপ শক্তি, ৩. আলোক শক্তি, ৪. শব্দ শক্তি, ৫. চৌম্বক শক্তি, ৬. বিদ্যুৎ শক্তি, ৭. রাসায়নিক শক্তি, ৮. পারমাণবিক শক্তি, ৯. সৌর শক্তি, ১০. আধ্যাত্মিক বা ঐশী শক্তি। উল্লেখ্য যে, ১-১০ পর্যন্ত সমস্ত শক্তির উৎস আহাদ হতে আহমদ-এর নূর বা আলো এবং শক্তি। পাত্র ও অবস্থা ভেদে যা বিভিন্ন রূপ নেয়। হযরত ওমর (রা.) ও হযরত ওয়ায়েশকুরনী (রা.) কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট ছিলেন। কোথা হতে তারা শক্তি পেলেন, যা নিয়ে একজন অর্ধ্ব পৃথিবী শাসন করলেন আর একজন আধ্যাত্মিক জগতে নেতৃত্ব দিলেন। বিশ্বস্রষ্টা তো মোহাম্মদের (দ.) মাধ্যমেই বিশ্ব শাসনও নিয়ন্ত্রণ করছেন। আমাদের আত্মাকে শক্তিতে পরিণত করার জন্য মোহাম্মদীতে আসতেই হবে, এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ আর নেই। কারণ, আত্মা, পরমাত্মা হতে আগত। আর পরমাত্মার শক্তিতে শক্তিমান আহমদ বা মোহাম্মদ (সা.)-এর বিশ্বআত্মা। আর বিশ্বআত্মা হতে আমাদের আত্মা। তাই যতক্ষণ না পরিপূর্ণরূপে আসব ততক্ষণ এ ঞযবড়ৎু বা তত্ত্ব যা বিজ্ঞানসম্মত দর্শনসম্মত তা কার্যকরী হবে না। তখন মোহাম্মদী নূর বা আলো বা অণু আমাদের মধ্যে নিরঙ্কুশভাবে ভেতরে ভেতরে কাজ শুরু করবে অদৃশ্যভাবে।
১.
আসুন আমরা সবাই মদীনামুখী হয়ে যাই। এ জন্যই তো রাসূল (সা.) মক্কা ছেড়ে মদীনায় সেজদায় পড়ে আছেন আমাদের জন্য। রাসূলকে, ইব্রাহিমী মানতে ও প্রচার করতে বলা হয়েছিল বলেই তো বারো শরীফ রাসূল প্রচার করে যেতে পারেননি। তাই বহু বছর পর্যন্ত তাঁর রওজা মোবারকে সাদা গম্বুজ ছিল। তিনি জীবিতকালে সাদা পোশাক পরতেন। কারণ সাদা রঙ হলো ইব্রাহিমী প্রতীক। বহু রওজার পরে রাসূল (সা.)-এর রওজার গম্বুজ সবুজ হয়। সবুজ হলো রাসূল (সা.)-এর জাতিসত্তা বা নূর। আল্লাহ তো নিজেই মোহাম্মদী আর ইব্রাহিমীকে পৃথক করে দিয়েছেন রাসূল (সা.)-কে শুক্রবারে দুনিয়ায় না পাঠিয়ে; আর সম্মানিত চার মাসে না পাঠিয়ে। সবুজ নূরেই সারা বিশ্ব প্রকৃতি সৃষ্টি। আসুন; আমরা মোহাম্মদী করতে করতে বাঁচি; মোহাম্মদী করতে করতে মরি। এর চেয়ে আর সুখের মরণ আর কি হতে পারে? (আল্লাহ আমাদের দয়া করুন। আমীন-সুম্মা-আমীন।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত হিসাব কর্মকর্তা, কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।