Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেনীতে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে অনীহা ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হয় মানুষ

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

 ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে যাত্রী ও সাধারণ মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে ও নির্বিঘেœ সড়ক পারাপারের জন্য সরকার মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে যেসব ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করেছিল সেগুলো এখন আর কোনো কাজেই আসছে না। একতলা বা দোতলা বিশিষ্ট স্ট্রিল ফুটওভারব্রিজের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে সড়ক পার হবে এ রকম ধৈর্য আপাতত মানুষের মধ্যে নেই বললে চলে।
গতকাল সরেজমিনে গেলে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর অংশে লালপোলে ফুটওভারব্রিজের নিচে নির্মিত ডিভাইডারের ফাঁক দিয়ে পথচারী, যাত্রী, প্রতিবন্ধী, পঙ্গুলোক ও স্কুল শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে দেখা যায়। সেখানে দেখা যায় প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিটে প্রায় ৫০-৬০ জন মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে। পথচারী ও স্থানীয়রা বলেন, মানুষ নিরাপদে পার হবার পথ নিচ দিয়ে করা আছে। মানুষ কোর দু:খে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করবে। লালপোল এলাকায় গাড়ির যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি। কারণ যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে গাড়ির জন্য ভিড় করে এছাড়াও এখানে অসংখ্য যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করে ডিভাইডারের ফাঁক দিয়ে তড়িঘড়ি করে পার হয়।
গত ২ বছরে এভাবে পার হতে গিয়ে প্রায় ৫০ জনের মতো মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে এবং অনেক মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। তবুও মানুষের শিক্ষা হয় না। এসব অনিয়ম বন্ধে সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষ, হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা কখনো চোখে পড়েনা।
এছাড়াও মহাসড়কের ফাজিলপুর, মোহাম্মদ আলী বাজার, লেমুয়া ও মহিপালে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারের কোনো দৃশ্য চোখে পড়েনি। এদিকে সচেতন মহল মনে করছেন, মহাসড়কে বা পৌরশহরে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে অভিভাবকদেরকে সচেতন হতে হবে আগে। কারণ তারা বিভিন্ন সময় তাদের ছেলে-মেয়ে নিয়ে সড়ক পার হতে হয়। তখন তারাই ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করে তাদেরকে ব্রিজের নিচ দিয়ে নিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে ছেলে মেয়েরা এসব অনিয়ম শিখছেন। পাশাপাশি সমাজের মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
তারা বলেন, মহাসড়কের উপর নির্মিত ফুটওভারব্রিজ সঠিকস্থানে করা হয়নি। তাছাড়া মহাসড়কের উপর নির্মিত ফুটওভারব্রিজের ওপর বখাটে, মাদকসেবীদের আড্ডা, যৌনকর্মী, ভিক্ষুক ও হকারদের দখলদারিত্বের কারণে বেশিরভাগ মানুষ ব্রিজের ওপর উঠতে চান না। এগুলো দেখভাল করার জন্য কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেই। এজন্য মানুষ মহাসড়কে এলোমেলো চলাচল করে এবং মানুষের অনীহা কাজ করে। মহাসড়কে এসব অনিয়ম বন্ধে সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে, পাশাপাশি মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি আরো বাড়াতে হবে।
ফেনী সওজ ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল ইনকিলাবকে বলেন, ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে মানুষের সচেতনতার বিকল্প আর কিছু নেই। মহাসড়কে মানুষের চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অনিয়ম বন্ধে আমরা হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতা নিচ্ছি এবং মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারের অনীহা দূর করতে ইতোমধ্যে চান্দিনা থেকে ডিভাইডারের ফাঁক বন্ধ করার কাজ শুরু হয়েছে। মহাসড়ক নিয়ে সরকারের আরো নতুন নতুন পরিকল্পনা রয়েছে যা আগামীতে দৃশ্যমান হবে।
ফেনী হাইওয়ে থানার (ওসি) মোস্তফা কামাল ইনকিলাবকে বলেন, মানুষ নিজের জীবনের মায়া না করলে অন্য কারো পক্ষে সম্ভব না তাদেরকে বাঁচানো। মানুষ আইনভঙ্গকে গর্ববোধ মনে করে। এ ব্যাপারে আমরা মাঝে মধ্যে সমাজের মানুষ, বিভিন্ন পেশাজীবী, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে সচেতনতা মূলক সভা করি। যাতে তারা জীবনের ঝুঁকি এড়াতে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করে এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ