পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বারংবার সতর্ক করার পরেও দেশটির উস্কানিমূলক তৎপরতা বন্ধ না হওয়াটা চরম উদ্বেগজনক। খুব দ্রæত এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে বিলম্ব করা হলে সাধারণ মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অবিলম্বে জাতীয় সংসদে মিয়ানমানের উস্কানিমূলক আচরণের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করতে হবে। বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন : বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মর্টার সেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল সোমবার এক বিবৃতি দিয়েছেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা তারেকুল হাসান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের পররাষ্ট্র নীতি কতটুকু দুর্বল হলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রম করে মর্টার সেল ও গোলাগুলি করতে পারে। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ কঠিন ভাবে হুমকির সম্মুখীন। সরকারের প্রতি আহŸান মর্টার নিক্ষেপের প্রতিবাদ মর্টার দিয়েই করতে হয়। অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে এবং বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে মিয়ানমারকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে। মিয়ানমারকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সারা বিশ্ব জানে মিয়ানমার একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। এদেরকে ভয় করলে এরা ঘাড়ে উঠে নাচবে। সরকারের প্রতি আহŸান, আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করুন। ১৮ কোটি তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ নিন। অবিলম্বে জাতীয় সংসদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করুন। আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মামলা করুন।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট : বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ্এক বিবৃতিতে বলেন, পৃথিবীর জঘন্য গণহত্যাকারী মিয়ানমার সেনাবাহিনির ধৃষ্টতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের নিজ দেশের ১২ লক্ষ মানুষ শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে দেশত্যাগ বাধ্য করেছে। হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে । মানবিক কারণে আমরা ১২ লক্ষ মিয়ানমার নাগরিককে আ¯্রয় দিয়েছি। আমাদের সরকার প্রধানকে বিশ^সম্প্রদায় “মানবতার মা” বলে আখ্যায়িত করেছে। ইদানিং কালে এই বর্বর মিয়ানমার সেনাবাহিনী আমাদের সীমান্তে উস্কানিমূলক আচরণ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা লক্ষ করছি সরকারের ক‚টনৈতিক তৎপরতা প্রত্যাশা থেকে দূর্বল। কালবিলম্ব না করে জাতিসংঘ, ও আই.সি, আরব লীগ জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনসহ প্রতিটি বিশ^ফোরামে মিয়ানমারের বর্বর জান্তা ও তার বাহিনীর কর্মকান্ডের ঘটনা তুলে ধরা একই সাথে প্রয়োজনে যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রস্তুুত থাকতে হবে। সীমান্তে আমাদের উচ্চ পদস্ত সামরিক -বেসামরিক কর্মকর্তাদের সফর করা উচিৎ, তাদেরকে দেখলে সীমান্তবাসীর হিম্মত বৃদ্ধি পাবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : মিয়ানমার সীমান্তে গত কয়েক দিন যাবত গোলাগুলির কারণে হতাহতের ঘটনা ও সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। এক যৌথ বিবৃতিতে দলের সভাপতি আল্লামা শায়খ যিয়া উদ্দীন ও মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বারংবার সতর্ক করার পরেও এ সব উস্কানিমূলক তৎপরতা বন্ধ না হওয়াটা চরম উদ্বেগজনক। খুব দ্রæত এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে বিলম্ব করা হলে সাধারণ মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। নেতৃদ্বয় বলেছেন, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন জনগণ। মুহুর্মুহু গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শুনছেন তারা নিয়মিত। সরকারি ভাবে সংশ্লিষ্ট জনপদগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে এ অবস্থা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। নেতৃদ্বয় আরো বলেছেন, পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনা করে মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে ক‚টনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে সরকারকে অবিলম্বে এই সঙ্কট উত্তরণের পথ বের করতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহলেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
বাতিল প্রতিরোধ পরিষদ : বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দিন বকুল এক বিবৃতিতে বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমারের চরম উস্কানিমূলক তৎপরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে দেশটির সন্ত্রাসী কর্মকাÐ তুলে ধরে প্রতিকারের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, মিয়ানমানের জান্তা সরকারের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এসব আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে দেশটির উরপ চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে স্ব-সম্মানে প্রত্যাবর্তনের মূল ইস্যুর দৃষ্টি ভিন্নখাতে ফেরানোর অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার সরকার সশস্ত্র ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কারণেই মিয়ানমার সরকারও বাংলাদেশের সীমান্তে গোলাগুলির ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। সীমান্তে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে সরকারকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি তুমব্রæ সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের এই অব্যাহত সামরিক উস্কানিমূলক তৎপরতা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। দেশটির দখলদার সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপে রাখতেই এই অপতৎরতা চালাচ্ছে। তিনি অনতিবিলম্বে মিয়ানমারের এই উস্কানি বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ক‚টনৈতিক উদ্যোগ এবং সীমান্তে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার আহŸান জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, মিয়ানমারে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এ সংঘর্ষের জের বাংলাদেশে এসে পড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। মানুষ হতাহত হচ্ছে। সীমান্তবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মিয়ানমারের ঔদ্ধত্য দিন দিন লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর বেপরোয়া তৎপরতা ও নিক্ষিপ্ত মর্টার সেলের আঘাতে বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি হত্যাকাÐের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং জাতিসংঘসহ আর্ন্তজাতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।