নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুই জনই। ওনস জাবির জিতলে, প্রথম আফ্রিকান নারী হিসেবে তুলে ধরতে পারতেন ইউএস ওপেনের শিরোপা। অন্যদিকে ইগা শিয়েনটেকর সামনে ছিল পোল্যান্ডের নারী হিসেবে প্রথমবারের মত এই শিরোপায় চুমু আঁকার সুযোগ। আসরের প্রথম থেকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়া জাবিরের ছন্দ পতন হলো শিয়েনটেকর সামনে। আগের ৬ খেলায় মাত্র এক সেটে হারা জাবির এদিন সরাসরি ৬-২, ৭-৬ (৭-৫) গেমে পরাজিত হলেন। ফলে এই বছরের ফ্রেঞ্চ ওপেনর পর ইউএস ওপেনের শিরোপাও উঁচিয়ে ধরলেন শিয়েনটেক। ম্যাচ ও শিরোপা জিতে এই ২১ বছর বয়সী তারকা ঘোষণা দিলেন, আকাশ নাকি তার সাফল্যের শেষ সীমানা। তাতেই টেনিসে পাওয়া যাচ্ছে সেরেনা উইলিয়ামস পরবর্তী সুপারস্টারের আগমনী বার্তা। এই জয়ের ফলে নিশ্চিত হল এই পোলিশের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আহরণ করাটা। আর হেরে গিয়েও তিউনেশিয়ার ‘আনন্দের মন্ত্রী’ নামে খ্যাত জাবির চূড়ান্ত করলেন র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানটি।
চলতি বছরের উইম্বলডনের ফাইনালে প্রথম আফ্রিকান নারী হিসেবে উঠেও শিরোপার স্বাদ নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন জাবির। সেই দুঃখ মোচনের সুযোগ ছিল বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ইউএস ওপেনের মঞ্চে। তবে শিয়েনটেক এদিন প্রথমেই ঘাবড়ে দেন তিউনেশিয়ানকে। নিউ ইউর্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে, খেলা শুরুর ৮ মিনিটের মাঝেই ১টি ব্রেক পয়েন্ট নিয়ে ৩-০ গেমে এগিয়ে যান পোলিশ তারকা। তবে ফিরে আসেন জাবির। একটি সার্ব ভেঙ্গে দিয়ে ও নিজেরটা ধরে রেখে খেলা ২-৩ ব্যবধানে নিয়ে আসেন। তবে তিনি এরপরে আরও দুটি সার্ব খুইয়ে বসেলে ৬-২ ব্যবধানে গেম জিতে নেন শিয়েনটেক।
দ্বিতীয় সেটে আবারও ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যান তৃতীয় গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের লক্ষ্যে অবিচল শিয়েনটেক। কিন্তু এরপর খেলায় ফিরে আসে উত্তেজনা। কথায় আছে আরবের মানুষ কঠিন মানুসিকতার। জাবির দুটি ব্রেক পয়েন্ট নিয়ে সেটা প্রমাণ করলেন। এরমাঝে পোলিশ তারকাও একবার সার্ব ভেঙ্গে পয়েন্ট জোগাড় করেছেন। সেট ৪-৪ সমতায় আসার পর কেউ আর প্রতিপক্ষকে ব্রেক পয়েন্ট না দিলে, খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও ৪-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েন জাবির। তবে আবার ফিরেও এসে ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে যান। কিন্তু সেখানেই শেষ হয় এই আনন্দের ফেরিওয়ালার প্রতিরোধের যুদ্ধ।
ইউএস ওপেন ফাইনাল হেরে গেলেও নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের জয়ের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন জাবির, ‘আমার কষ্ট পাওয়ার মত কিছু নেই। আমি সম্ভাব্য সেরা চেষ্টাই করেছি। আর আমি আশা ছেড়ে দেওয়ার মানুষ নই। আমি জানি, আবার ফাইনাল খেলব এবং আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাই করব।’
এই দুই প্রতিপক্ষের আগের ৪ মোকাবেলায়, দুই জনই দুটি করে ম্যাচ জিতেছিলেন। তবে পরশু রাতে পোল্যান্ডের তারকা সেই দ্বৈরথে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন। তবে প্রতিপক্ষকে সম্মান জানাতে ভুললেন না শিয়েনটেক,‘আমাদের এই লড়াই আগামী দিনেও চলবে। আমি নিশ্চিত তুমি(জাবির) ভবিষ্যতে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবে।‘ ২৮ বছরের জাবিরকে তার অনুপ্রেরণা বলেও জানিয়েছেন ২১ বছরের শিয়েনটেক।
ম্যাচ শেষে শিয়েনটেক জানান, তিনি আগে থেকে খুব বেশি পরিকল্পনা করেননি। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন,‘আমার জন্য খুব কঠিন সময় ছিল। যদিও আমি দুই বার ফরাসি ওপেন জিতেছি, তার পরেও বেশ কিছু দিন শির্টের বাইরে থেকে ফেরা সহজ ছিল না। তাই আগে থেকে খুব বেশি পরিকল্পনা করিনি। চাপ সামলাতে পেরে আমি খুব খুশি।’ ম্যাচের পরে শিয়েনটেকের জন্য চমক রেখেছিলেন আয়োজকরা। সাংবাদ সম্মেলনে শেষে ইউএস ওপেন সংশ্লিষ্ট এক জন বলেন, ‘আপনি ট্রফির উপরটা সরিয়ে দেখুন। ওখানে কিছু থাকতে পারে।‘ সেটা শুনে শিয়েনটেক ট্রফির উপর সরিয়ে দেখেন ভিতরে তার পছন্দের খাবার ‘টিরামিসু’। সেটা দেখে খুব খুশি হয়ে যান পোলিশ তরুণী। সাংবাদ সম্মেলনের পরেই খেয়ে নেবেন বলে জানান। এই প্রসঙ্গে ইউএস ওপেনের সংশ্লিষ্ট ক্রিস উইডমায়ের বলেন, ‘আমরা দেখেছি আপনি প্রতি বার শিরোপা জেতার পরে এর ভিতরটা দেখে নেন। তাই আমরা এইবার ভিতরে আপনার পছন্দের কিছু রেখেছিলাম। এটা ইউএস ওপেনের তরফে আপনাকে উপহার।‘
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।