নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে টানা চারটি ম্যাচ হারের পর অবশেষ জিতলো পাকিস্তান। চলমান এশিয়া কাপে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। এ নিয়ে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ইনকিলাব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।
টস জিতে এই মাঠের ইতিহাস মাথায় রেখে বাবর আজম বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রথমত এটাই পাকিস্তানকে এগিয়ে রেখেছে।
শুরুতে ব্যাট করে ভারত তুলেছিল ১৮১ রান, জবাবে পাকিস্তান এক বল ও পাঁচ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নিয়েছে।
তবে মাঠের খেলাতেও ভারতকে চমকে দিয়েছে পাকিস্তান।
ভালো শুরু করেও ধরে রাখতে পারেনি ভারত
ভারতের টপ অর্ডারে প্রত্যাশিত শুরু এনে দিয়েছেন লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মা।
আগের দেখায় নাসিম শাহ'র বলে প্রথমেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরা রাহুল এই ম্যাচে তাকে দুটি ছক্কা মেরেছেন একই ওভারে।
রোহিত শর্মাও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে শুরু করেন ব্যাটিং।
কিন্তু দুজনের কেউই ২০ বলের বেশি টিকতে পারেননি।
চার ওভার ২ বলে ৫০ রান তোলা ভারত, ১০ ওভার শেষে রান করেছিল ৯৩।
এই উইকেটে আগে ব্যাট করে যা শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয়নি।
পাকিস্তানের বোলারদের কৃতিত্ব তারা ভারতের ব্যাটসম্যানদের পুরোপুরি হাত খুলতে দেননি।
স্পিনাররা আট ওভার বল করে মাত্র ৫৬ রান দিয়েছেন, তিনটি উইকেটও নিয়েছেন।
পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপে পরিবর্তন
বাবর আজম এই ম্যাচেও সুবিধা করতে পারেননি। দুটি চার মেরে ১০ বলে ১৪ রান করে তিনি সাজঘরে ফিরেছেন তরুণ স্পিনার রাভি বিষ্ণইয়ের বলে।
ফখর জামানও নিজের মতো ব্যাট চালাতে পারেননি। তিনি ১৮ বলে তুলতে পারেন ১৫ রান।
তবে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট ফখরের উইকেটের পরে কৌশলগত একটি পরিবর্তন আনে যা শেষ পর্যন্ত ফল দিয়েছে।
মোহাম্মদ নাওয়াজকে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরের দিকে পাঠিয়েছে।
সাধারণত নাওয়াজ লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেন কিন্তু গত রাতে দুবাইয়ে দুই উইকেট যাওয়ার পরই তিনি ব্যাট করতে নামেন।
কুড়ি বলে ৪২ রান নেন তিনি। মূলত মাঝের ওভারগুলো ভারতের লেগস্পিনারদের তিনি খুব ভালোভাবে সামলেছেন।
নাওয়াজ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত এই ধরনের টার্গেট তাড়া করে ম্যাচ জেতান, পাকিস্তান সুপার লিগে হার্ড হিটিংয়ের জন্য সুপরিচিত তিনি।
রিজওয়ান যখন উইকেটে ছিলেন, রিজওয়ানের চাপ নিজে নিয়ে ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন নাওয়াজ।
তিনি মাঠে নামার পর পাকিস্তান টানা ছয় ওভারে রান নেয় এমন- ৯, ১০, ১০, ১১, ১২, ১৬।
নাওয়াজ খেলেছেন প্রথম ম্যাচের হার্দিক পান্ডিয়ার মতো, পান্ডিয়া অবশ্য গত ম্যাচে ২ বলে ০ রান করে আউট হয়ে গেছেন।
মোহাম্মাদ নাওয়াজ বল হাতেও ছিলেন প্রভাবশালী, তিনি ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে ১টি উইকেট নিয়েছেন।
ভারতের ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া বলছেন, "মোহাম্মদ নাওয়াজ ভারতের জন্য ছিলেন আউট অফ সিলেবাস প্রশ্ন।"
তিনি রাভিন্দ্রা জাদেজার চোটের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন, "একটা মাত্র পরিবর্তন, ভারতের পুরো দৃশ্যপট বদলে গেছে।"
জাদেজা আর নাওয়াজ একই ধরনের ক্রিকেটার, বাঁ হাতে বল করেন, বা হাতে ব্যাট করেন, দুই ক্ষেত্রেই তারা পটু।
মোহাম্মদ রিজওয়ানের ফর্ম
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে রিজওয়ানের ব্যাটিং নিয়ে বেশ প্রশ্ন উঠেছিল, বিশেষত বাবরের সাথে নামলে দুজন পাকিস্তানের ব্যাটিং মন্থর করে দেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিশ্লেষকরা।
তবে রান তাড়া করার সময় রিজওয়ানের মতো একজনেরও প্রয়োজন রয়েছে সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন।
হংকংয়ের বিপক্ষে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার পর ভারতের বিপক্ষে তিনি ৫১ বলে করলেন ৭১।
রিজওয়ান ইনিংসটাকে ধরে রেখেছেন।
এই ধরনের রান তাড়ায় উইকেট পড়ে গেলে যারা নামেন তাদের মাথায় একটা চাপ থাকে, রিজওয়ান চেষ্টা করেছেন উইকেটে টিকে থাকতে এবং ডট বল না দিতে।
শেষ পর্যন্ত স্নায়ু ধরে রাখা
ভারত শেষ পর্যন্ত স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারেনি।
ম্যাচে রোহিত শর্মাকে খুবই উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল, বিশেষ করে শেষ কয়েকটি ওভারে ফিল্ডিং সাজানোর সময় বা নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করার সময় মনে হচ্ছিল তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
শেষ ওভারে ভারতকে বৃত্তের ভেতর একজন ফিল্ডার বাড়তি নিয়ে খেলতে হয়েছে, ওভার রেট ধরে না রাখার শাস্তি হিসেবে।
আঠারোতম ওভারে সহজ একটি ক্যাচ ফেলে দেন আরশদিপ সিং।
ভারতে অনেকেই এই ক্যাচটিকেই ম্যাচ হারার কারণ হিসেবে দেখছেন।
তবে সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং টুইটারে লিখেছেন, "কেউ ইচ্ছা করে ক্যাচ ছাড়ে না। তরুণ আরশদিপকে নিয়ে সমালোচনা বন্ধ করুন।"
আসিফ আলির রান ছিল তখন ১, পরে আরও ৭ বল খেলে তিনি একটি ছক্কা ও দুটি চার মেরে পাকিস্তানের জয় সহজ করে তোলেন।
এই সময় পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমের দৃশ্য ছিল দেখার মতো, প্রতিটি রান, প্রতিটি বলের উত্তেজনা টের পাওয়া যাচ্ছিল।
পাকিস্তান ক্রিকেট- অফিসিয়াল টুইটার পাতার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা রীতিমতো অস্থির হয়ে ছিলেন মাঠের পরিস্থিতি দেখে।
ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজ টুইট করেছেন, "পয়সা উসুল ম্যাচ।"
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।