নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গত শতাব্দীর শেষ বছর ১৯৯৯ সালের উইম্বলডনের পর চোটের কারণে ইউ এস ওপেনে অংশ না নিয়েই টেনিসকে বিদায় বলেন স্টেফি গ্রাফ। ২২ বারের চ্যাম্পিয়ন গ্রাফের অনুপস্থিতিতে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ইউএস ওপেন জিতে গেলেন ১৮ বছরের এক আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ তরুণী। নাম তার সেরেনা উইলিয়ামস। তখন কে ভেবেছিল যে একদিন সেই সেরানা তার নামের পাশে যোগ হবে আরও ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। গতকাল সকালে চলমান ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে সেরেনা ৫-৭, ৭-৬, ১-৬ গেমে হেরে যান তামলিয়ানোভিচের বিপক্ষে। তাতেই যেন একটি যুগের অবসান। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই ৪১ বছর বয়সী সেরিনা তার টেনিসজীবনেরও ইতি টেনে দিলেন। সেরেনার তাই অধরা রয়ে গেল ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট মার্গারেটের রেকর্ড।
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে তাৎক্ষনিত প্রতিক্রিয়াতে উপস্থাপিকা জানতে চান, অবসর ভেঙ্গে ফিরে আসবেন কি? সেরেনা জানালেন, ‘আমি নিশ্চিত না। তবে বলা যায় না (হাসি)।’ এরপরেই তিনি ধন্যবাদ জানালেন তার মা-বাবাকে, ‘বাবা-মায়ের জন্যই এ সবকিছুর শুরু হয়েছিল। সব সাফল্য তাদেরই প্রাপ্য।’ কিন্তু অনেক্ষন কথা বলার পরও তার বড় বোন ও ৭ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী ভেনাসের নাম নিচ্ছিলেন না। একদম শেষ দিকে বোনকে স্মরণ করলেন খুবই আবগঘন কন্ঠে, ‘ভেনাসকে ধন্যবাদ। ভেনাস না থাকলে আমি সেরেনা হতাম না। এই সময় স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেনাসকে দেখা যায়। তখন ছোট বোন বলে উঠলেন, ‘তোমার জন্যই সেরেনার জন্ম হয়েছে।’
সেরেনা তার বর্তমান ফিটনেস ও ট্যাকনিকে এখনও আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু সন্তানের জন্যই টেনিস ক্যারিয়ার ত্যাগের সিধান্ত তিনি নিয়েছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে এখনও আমার সামর্থ্য আছে। তবে এখন আমি মা হওইয়ার জন্য প্রস্তুত। সেরেনার আরেক সংস্করণ মেলে ধরতে চাই।’
এবারের ইউএস ওপেন শুরুর আগেই সেরিনা জানিয়ে দিয়েছিলেন, আসরটির পরেই বিদায় বলবেন। ভোগ পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন তারকা। সেরিনা বলেছিলেন, ‘এটা আমার কাছে সব থেকে কঠিন সিদ্ধান্ত। আমি খেলা ছাড়তে চাই না। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও বলব যে আমি ভবিষ্যতের জন্য তৈরি।’ সেরিনার এই কথার পরেই জল্পনা ছড়ায়, তবে কি এবার টেনিস দুনিয়াকে বিদায় জানাতে চলেছেন ২৩ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকি!
ম্যাচ শেষে এত দিন ধরে তাকে ভালবাসা দেওয়ার জন্য দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না সেরিনা, ‘সবার কাছে এত বছর ধরে যে ভালবাসা পেয়েছি তা কথায় প্রকাশ করতে পারব না। এত এত সুন্দর জয়ের মুহূর্তে আপনারা আমার পাশে থেকেছেন। এই দিনগুলোর জন্য মন খারাপ হবে।’
সেরেনা যখন কথা বলছিলেন তখন প্রতিপক্ষ তামলিইয়ানোভিচ কোর্টের পাশে তার নির্ধারিত চেয়ারে বস। ম্যাচ জেতার পরও আলোর বাহিরে এই ক্রোয়েট-অস্ট্রেলিয়ান তারকা। ২৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় জানালেন জয় পেয়ে তার নাকি মন খারাপ, ‘খুবই খারাপ লাগছে। সে এই খেলার জন্য, আমার জন্য যা করেছে, তা অবিশ্বাস্য। কখনো ভাবিনি তার শেষ ম্যাচে আমি কোর্টে থাকব।’
ম্যাচ শেষে হ্যালারিতে বাজছিল টিনা টার্নারের গান ‘সিপমিলি দ্যা বেস্ট’। এই শতাব্দীর সেরা মহিলা টেনিস প্লেয়ারকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার জন্য এরচেয়ে অর্থবহ কোন কথা আসলেই নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।