Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘুমই সবচেয়ে প্রিয়, ঘুমিয়েই জিতলেন ৬ লাখ টাকা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:৪৫ এএম

ছোটবেলা থেকেই ঘুমকাতুরে ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী। তার এই দুর্নামই তাকে স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিতে নিয়েছেন পাঁচ লাখ ভারতীয় রুপি (প্রায় ৬ লাখ টাকা)।

একটি ম্যাট্রেস সংস্থার তরফে এই ঘুমের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এমবিএ করতে গিয়ে এই প্রতিযোগিতার কথা জানতে পেরেছিলেন তিনি।

ত্রিপর্ণা বলেন, 'যখন আবেদন করেছিলাম তখন বুঝতে পারিনি এটা প্রতিযোগিতা। ইন্টার্নশিপের মত ছিল বিষয়টা। পরে গিয়ে দেখি ঘুমানোর জন্য পয়সাও দেওয়া হবে।'

কীভাবে পুরো প্রক্রিয়াটা চলেছে? আয়োজক সংস্থা জানিয়েছে, একাধিক রাউন্ড ছিল। ইন্টারভিউ হয়েছে। সেখানে ঘুমকে কে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সেই বিষয়টা দেখা হয়েছে। সাড়ে পাঁচ লাখ আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে ১৫ জনকে বেছে নেওয়া হয়। তাদের ১০০ দিন ৯ ঘণ্টা করে ঘুমোতে বলা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল একটি ম্যাট্রেস ও স্লিপ ট্র্যাকার। সেখান থেকে ফাইনালের জন্য চারজনকে বেছে নেওয়া হয়। আর সেই চারজনের মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছিলেন ত্রিপর্ণা।

তবে এই প্রতিযোগিতার জন্য জোর করে ত্রিপর্ণাকে ঘুমোতে হয়নি। এই ঘুমের জন্যই একসময় চক্রবর্তী বাড়ির সকালটা শুরু হতো চিৎকার চেঁচামেচি দিয়ে। বেঁধে যেত তুলকালাম। ঘুমের জন্য মায়ের বকা তো খেতেই হত ত্রিপর্ণাকে। এমনকী, স্কুল কলেজেও ঘুমিয়ে যেতেন তিনি।

ত্রিপর্ণা বলেন, 'একবার অঙ্ক পরীক্ষা দিতে গিয়ে হলেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙে ৪০ মিনিট পরে। স্যাট পরীক্ষা দিতে গিয়েও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরীক্ষক ডেকে চা খাইয়েছিলেন।'

ঘুমের জন্যই ছোটবেলায় প্রতিদিন স্কুলের বাস মিস করাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল ত্রিপর্ণার। অগত্যা বাইকে মেয়েকে নিয়ে বাস ধরাতে ছুট দিতে হত বাবাকে। যেখানে সেখানে গভীর ঘুমে ডুবে যেতে পারার অভ্যেসটা তার ছিল ছোটবেলা থেকেই। খুব ছোট্টবেলায় ঘুমের মধ্যে বিছানা থেকে পড়ে মশারিতে ঝুললেও টের পাননি। বাবা মা ডাকতে তার ঘুম ভেঙেছিল। একবার তো কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছিলেন এক ঘুমে!

যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়াটা যে ভালো বিষয় নয় সেটা এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে বুঝেছেন ত্রিপর্ণা। প্রথম ১০০টা দিন যে তার সমস্যা হয়নি এমনটা নয়। কারণ রাতে অফিস থাকত বলে তাকে ঘুমাতে হত দিনের বেলায়। অন্য প্রতিযোগীরা যেখানে ঘুমাতেন রাতেই। আর কথায় আছে দিনে যতই কেউ ঘুমাক রাতের ঘুম রাতের ঘুমই। তাই সেটা ম্যানেজ করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বলে জানিয়েছেন তৃপর্ণা।

তিনি বলেন, 'ঘরে যখন তখন যে কেউ ঢুকে পড়ত। পূঁজা হত। কাজের লোক আসত। সমস্যা তো হতই। প্রথম প্রথম ঘুম আসত না। ভালো স্কোর হত না। পরে পেরেছি।'

ত্রিপর্ণার কথায়, 'আমি গর্বিত। কারণ মুম্বাইয়ের বাসিন্দারা যখন বলে তারা রাতে ঘুমান না, চেন্নাইয়ের বাসিন্দারা বলেন তারা নাকি একমাত্র মৃত্যুতেই ঘুমোন তখন বাঙালির ঘুম নিয়ে দুর্নাম রয়েছে। কিন্তু, এই ঘুম দিয়েই বাঙালিদের গর্বিত করতে পেরেছি।'

সূত্র: এই সময়

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘুমের প্রতিযোগিতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ