সিলেট নগরীর একটি আবাসিক হোটেলের দুই তরুণীকে আটকে রেখে অভিযোগ উঠেছে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণের। গত ২৩ আগস্ট দিবাগত রাতে নগরীর পাঠানটুলাস্থ জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভিকটিম দুই তরুণী পৃথক মামলা দায়ের করেছেন এসএমপির জালালাবাদ থানায়।

সূত্র জানা গেছে, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার এক তরুণী (১৮) কয়েক মাস আগে আইএলটিএস পড়ার জন্য সিলেট মহানগরীতে আসেন। তারপর আরেক নাট্যশিল্পী তরুণী (২৫)-এর সঙ্গে শাহজালাল উপশহরের একটি বাসায় একত্রে বসবাস করেন তারা। উপশহর এলাকায় থাকার সুবাধে ওই এলাকার স্নেহা বিউটি পার্লারের গিয়ে তানজিনা আক্তার তানিয়া (২৫) নামের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তানিয়া সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়সিদ্দি গ্রামের দবির মিয়ার পূত্র। শাহজালাল উপশহরের এইচ ব্লকের ৪ নং রোডের আলী ভিলা নামক ৫তলা বাসায় ভাড়াটে থাকেন তিনি।

পরিচয়ের এক পর্যায়ে তানিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে সিলেটে আইএলটিএস করতে আসা সেই তরুণীর। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সুবাধে গত ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানিয়া ফোন করে ওই তরুণীকে বলে- তার ভাইয়ের জন্য এবি পজেটিভ রক্ত প্রয়োজন। ওই তরুণীর এবি পজেটিভ রক্ত হওয়ায় তিনি যেন এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার জন্য যান রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে। এমন ফোন পেয়ে ওই তরুণী তার বন্ধবীকে (২৫) নিয়ে তৎক্ষণাৎ রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালের সামনে যান।

সেখানে গিয়ে তানিয়াকে দেখতে পেয়ে রক্ত দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ওই দুই তরুণীকে তিনি জানান, রক্ত দেওয়ার আগে তার এক কাজিনের বাসায় একটু প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন শেষ করে হাসপাতালে যাবেন তারা। এ কথা বলে কৌশলে ওই দুই তরুণীকে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের ৪র্থ তলায় নিয়ে যান তানিয়া এবং তাদের দুজনকে আলাদা আলাদা কক্ষে বসিয়ে রাখেন। এসময় তানিয়ার সহযোগী কয়েকজন তরুণ ও যুবক এসে ওই দুই তরুণীকে আটকে রাখেন এবং রাত সাড়ে ১১টার থেকে একের পর এক ১০-১২ জন যুবক দুজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তাদের। এছাড়াও ভিকটিম এক তরুণীর (১৮) কাছ থেকে তার মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা পয়সা জোরপূর্বক নিয়ে যান তানিয়া ও ধর্ষকরা। পরদিন (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে ভিকটিম দুই তরুণীকে এক কক্ষে নিয়ে তাদের কাছ থেকে ‘ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি’ এ মর্মে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয় এবং এ কথাগুলো মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন তাদের ছেড়ে দেন তানিয়া ও তার ধর্ষক সহযোগিরা।

ঘটনার পর দুই ভিকটিম তরুণী জালালাবাদ থানায় দায়ের করেছেন পৃথক মামলা। তানিয়া ছাড়াও এই দুই মামলার আসমিরা হলেন- সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের পূত্র মোহাইমিন রহমান রাহি (৩৩), সুনামগঞ্জ ছাতকের গোবিগন্দগঞ্জ গ্রামের মৃত তহুর আলীর পূত্র জুবেল (৩১), সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকার আলী আকবরের পূত্র রানা আহমদ শিপলু ওরফে শিবলু (৩৫), সুনামগঞ্জ সদর থানার হরিনাপাট গ্রামের ফরহাদ রাজা চৌধুরীর পূত্র নাবিল রাজা চৌধুরী (৩৫) ও সুজন (৩৫) এবং আরও ৫-৬ জন অজ্ঞাত।