পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
এজিয়ান সাগর ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করলে তুরস্কের যুদ্ধবিমানগুলোকে ‘রাডার লক’ করে গ্রিস। একে ‘হয়রানিমূলক’ আচরণ বলে আখ্যায়িত করেছে তুরস্ক। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গ্রিসের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ তুর্কি যুদ্ধবিমানগুলোকে মিসাইল হামলার জন্য লক করেছিল। গত ২৩ আগস্ট এই ঘটনা ঘটে। গ্রিসের এমন আগ্রাসী আচরণের নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা। তুরস্ক এবং গ্রিস উভয়েই সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। কিন্তু তারপরেও দুই দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে। তুরস্কের দাবি, গ্রিস এমন সব দ্বীপ ও সমুদ্রাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে যা আসলে তুরস্কের অংশ। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রায়ই উত্তেজনা দেখা যায়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় একটি অভিযান পরিচালনা করতে গেলে তুর্কি যুদ্ধবিমানগুলোকে টার্গেট করে গ্রিস। শেষ পর্যন্ত মিসাইল না ছুঁড়লেও গ্রিসের এই পদক্ষেপ তুরস্ককে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ওই এস-৩০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রিসের ক্রিট দ্বীপে অবস্থিত। যেসময় এফ-১৬ বিমানগুলোকে লক করা হয় তখন সেগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ কিলোমিটার উপরে ছিল। ন্যাটোর আইন অনুযায়ী রাডার লক করা একটি আগ্রাসী পদক্ষেপ। যদিও তুরস্কের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে গ্রিস। তুরস্ক নিজেও রাশিয়া থেকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তুরস্কের দাবি, রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ কেনার কারণে তুরস্কের বিরোধিতায় লিপ্ত হলেও, গ্রিসের এস-৩০০ ব্যবহার নিয়ে পশ্চিমাদের কোনো উদ্বেগ নেই। দেশটি প্রায় ২৫ বছর আগে রাশিয়ার এস-৩০০ কিনেছিল। তুরস্কের বক্তব্য, গ্রিস একটি ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশ। রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ সিস্টেমের মাধ্যমে অন্য ন্যাটো দেশের যুদ্ধবিমানকে হয়রানি করা ন্যাটো জোটের নীতির পরিপন্থী। ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ন্যাটোর সদস্য গ্রিস। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অঞ্চলে গ্রিস বারবার উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটি প্রায়ই তুরস্কের সাথে বাগযুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে। এই ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বশান্তির প্রেক্ষাপটে হতাশাজনক। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের এপ্রিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার দীর্ঘ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তুরস্ক রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ে। অনেকটা উপায় না পেয়ে রাশিয়ার অত্যাধুনিক এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অর্জনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল তুরস্ক। মার্কিন কর্মকর্তারাও এস-৪০০ মোতায়েনের বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, এটি ন্যাটো সিস্টেমের সাথে বেমানান। তবে তুরস্ক জোর দিয়ে জানিয়েছে, তারা এস-৪০০ ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত করতে ব্যবহার করবে না। ন্যাটো জোট বা এর অস্ত্রশস্ত্রের জন্য কোনো প্রকার হুমকি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা তুরস্কের নেই। বারবার বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাবও করেছে তুরস্ক। আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।