পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : উত্তর আরাকানের (মংডু টাউনশিপের উত্তরে) ১০/১২টি গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে মিয়ানামার সেনা-পুলিশ ও বুডিস্ট সন্ত্রাসীরা। শুধু ওই এলাকা থেকেই গুলি করে, জবাই করে ও ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে হাজারো রোহিঙ্গা নারী শিশু পুরুষকে। শুধু তাই নয়, ওসব নারী শিশু-পুরুষকে গণকবরে মাটি চাপা দিয়ে প্রমাণ গোপন করা হয়েছে। এখান থেকে ভিটেবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়ে পালিয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। ওই গ্রামগুলোতে এখন কোনো মানুষ নেই। আছে শুধু মিয়ানমারের সেনা-পুলিশের পোড়ামাটি নীতির নিদর্শন। আছে আগুনে দগ্ধ গাছপালা আর ঘরশূন্য খা ঁখাঁ করা ভিটেবাড়ি। গতকাল ওই মৃত্যুপুরী জনপদ ভিজিট করেছেন জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। তিনি দেখেছেন রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্মূলে মিয়ানমারের সেনা-পুলিশ ও বুড্ডিষ্ট সন্ত্রাসীরা কী পরিমাণ নিষ্ঠুর ও বর্বরতম নির্যাতন চালিয়েছে।
সীমান্তে পালিয়ে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর আরাকানে সেনা-পুলিশে পোড়ামাটি নীতির লোমহর্ষক বর্ণনা। আব্দুর রহমান ও সমিরা খাতুন ওই এলাকার হাতির পাড়া এলাকার অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের দম্পতি। তারা মিয়ানমার বাহিনীর বর্বরতম নির্যাতনের প্রত্যক্ষদর্শী। তারা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী উপর থেকে হেলিকপ্টার গানশীপ থেকে গুলি করার সাথে সাথেই ওই পাড়ার চারপাশ সেনা, পুলিশ ও বুড্ডিস্ট সন্ত্রাসীরা ঘিরে ফেলে। ঘর থেকে বের হলে গুলি করে, জবাই করে হত্যা করে নারী-পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে সবাইকে। ওই সময় রোহিঙ্গা যুবতী নারীদেরকে ধরে নিয়ে তারা ইচ্ছেমত গণধর্ষণ করে। এসব কিছু দেখে প্রাণ বাঁচানোর জন্য তারা বাংলাদেশ সীমান্তে পালিয়ে আসে। এভাবে ওই এলাকার ১০/১২টি গ্রামের সেনাপুলিশের নির্যাতনে বেঁচে যাওয়া নারী-পুরুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
এদিকে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমের রাখাইন রাজ্যে (পূর্বের আরাকান) স্থানীয় মুসলমানদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শন করেছেন মিয়ানমার সফররত জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। তিনি কথা বলেছেন নির্যাতনের শিকার মানুষজনের সঙ্গে।
গতকাল সকাল ১১টার দিকে কফি আনানের নেতৃত্বাধীন ৬ জন দেশি ও ৩ জন বিদেশি সদস্যের প্রতিনিধিদল হেলিকপ্টারযোগে মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপের ফুটবল খেলার মাঠে অবতরণ করেন। পরে সেখান থেকে গাড়িযোগে মংডু কেয়ারিপাড়া, নাছিংপাড়া ঘুরে দেখেন। মিয়ানমার সরকারের মতে, প্রদেশটিতে সরকারি বাহিনীর অভিযানে ৮৬ জন মুসলিম নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১০ হাজার মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন। প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা অনেক বেশি। পরিদর্শনকালে সাবেক এই জাতিসংঘ প্রধান ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। তিনি মত দেন, সহিংসতা প্রদেশটিকে নতুন করে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং নতুন করে অনেককে ঘর-বাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছেÑ যা কখনোই কাম্য নয়। সরকারি বাহিনীকে সহিংসতা পরিত্যাগ করতেও মত দেন তিনি।
উল্লেখ্য, কফি আনানের সফরকালে সিটওয়ে বিমানবন্দরের সামনে বিক্ষোভ করেন কয়েকশ’ মানুষ। তাদের দাবি, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিরসনে কোনো বিদেশির হস্তক্ষেপ চান না তারা। কফি আনান কমিশন একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সেটি সরাসরি দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে দেবেন। গেল সেপ্টেম্বরেও এই কমিশন রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেছিল। সূত্র : ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।