মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেনে রুশ অভিযানের ছয় মাস পার হলেও এখনও যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার বিভিন্ন পণ্যের প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। আক্রমণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়াকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার অঙ্গীকার করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ রাশিয়ার ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবু এখনও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে রুশ পণ্য। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এখবর জানিয়েছে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পর হতে এখন পর্যন্ত কাঠ, ধাতব বস্তু, রাবার ও বিভিন্ন পণ্যের ৩ হাজার ৬০০টিরও বেশি চালান যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বন্দরে পৌঁছেছে। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় তা প্রায় অর্ধেক। ওই সময় ৬ হাজার রুশ পণ্যের চালান যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছিল। কিন্তু তবু এই চালানগুলোর ফলে গড়ে প্রতি মাসে ১০০ কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, আক্রমণের পর রুশ-মার্কিন বাণিজ্য একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে বলে কেউ প্রত্যাশা করেনি। নির্দিষ্ট পণ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে রাশিয়ার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সমন্বয় কার্যালয়ের প্রধান রাষ্ট্রদূত জিম ও’ব্রায়েন বলেন, আমরা যখন নিষেধাজ্ঞা জারি করি তা বৈশ্বিক বাণিজ্যকে বিঘ্নিত করতে পারে। ফলে আমাদের দায়িত্ব হলো কোনও নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক বাণিজ্যকে সক্রিয় রেখে বেশি প্রভাব ফেলে তা নিশ্চিত করা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনীতি এখন ওতপ্রতভাবে জড়িত। ফলে ইতোমধ্যে অস্থিতিশীলত বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ এড়াতে নিষেধাজ্ঞা সীমিত করতে হবে। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা একেবারে শূন্যের ওপর জারি করা হয়নি। বিভিন্ন স্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার ফলে বাণিজ্যের নিয়মে পরিবর্তন এনেছে, দ্বিধায় পড়েছেন ক্রেতা, বিক্রেতা ও নীতি নির্ধারকরা। যেমন- বাইডেন প্রশাসন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পৃথক রুশ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে যেগুলো রফতানি করতে পারবে না। কিন্তু এসব কোম্পানির অন্তত একটি রুশ সেনাবাহিনীকে যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য ধাতব বস্তু সরবরাহ করে। যেসব বিমান এখন ইউক্রেনে বোমাবর্ষণ করছে। এই কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে মিলিয়ন ডলারের ধাতব বস্তু বিক্রি করে। যদিও কিছু মার্কিন আমদানিকারকরা বিকল্প উৎস থেকে কাঁচামাল সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। তবে অন্যরা বলছেন, তাদের কাছে কোনও বিকল্প নেই। কাঠ আমদানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার চেয়ে ভালো মানের কাঠ পাওয়া কঠিন। কারণ রাশিয়া ঘন জঙ্গলের গাছগুলো থেকে দৃঢ় ও শক্ত কাঠ পাওয়া যায়, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেণিকক্ষের জন্য আসবাবপত্র, ঘরের মেঝে তৈরি হয়। প্রতিদিন মার্কিন বন্দরে আসছে গ্রোটস, ভারোত্তলন জুতা, ক্রিপ্টো মাইনিং গিয়ার, এমনকি বালিশসহ বিভিন্ন পণ্যের চালান। রাশিয়া থেকে আমদানিকৃত পণ্যের তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এগুলো আমদানি বৈধ এবং বাইডেন প্রশাসন এসব পণ্য নিয়ে আসতে উৎসাহ দিচ্ছে। যেমন- আক্রমণ শুরুর পর শতাধিক সারের চালান এসে পৌঁছেছে। রুশ তেল ও গ্যাসের মতো নিষিদ্ধ পণ্য নিষেধাজ্ঞা জারির আগের চুক্তি বাস্তবায়নের সুযোগ পাচ্ছে। মার্কিন জ্বালানি কোম্পানিগুলো রুশ বন্দর দিয়ে কাজাখস্তান থেকে তেল আমদানি করছে। যদিও অনেক সময় এসব তেলে রুশ ফুয়েল মিশ্রিত থাকে। ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর রুশ অর্থনীতিবিদ কনস্টানটিন সোনিন বলেন, এটি স্বাভাবিক নিয়ম। যখন নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে তখন কৌশলী ও বেআইনি বাণিজ্য হয়। এরপরও নিষেধাজ্ঞার প্রভাব আছে। কারণ শতভাগ আয় বন্ধ করতে না পারলেও নিষেধাজ্ঞায় তা হ্রাস পায়। এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।