Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পোশাকে শালীনতা-অশ্লীলতা

আধুনিকতার নামে কি আদিম যুগে ফিরে যাব?

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

আধুনিকতার নামে কয়েক তরুণীর পোশাক পরিধানে ‘মাই বডি মাই চয়েস’ কর্মসূচির প্রতিবাদে ‘ছোট পোশাক নারীকে বিজ্ঞানী নয়, পণ্য বানায়’ শীর্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষার্থী ব্যানার প্লাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সময় তারা ‘ছোট পোশাক নারীকে বিজ্ঞানী বানায় না, পণ্য বানায়’, ‘পোশাকের স্বাধীনতার নামে পাবলিক নুইসেন্স বন্ধ হোক’ প্রভৃতি লেখা সম্বলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড প্রদর্শন করে। তাদের ভাষ্য-পাবলিক নুইসেন্স এক ধরনের ক্রাইম। প্রাইভেট প্লেস আর পাবলিক প্লেসের ড্রেস কখনো এক না। অনেকে পোশাকের স্বাধীনতার নামে পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানি করে পাবলিক প্লেসে মানুষকে কষ্ট দেয়, এটা অবশ্যই অন্যায়। সে তার বাড়িতে সেই স্বাধীনতা পালন করুক, পাবলিক প্লেসে সবার মূল্যবোধ মেনেই তাকে চলতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীদের ‘মানববন্ধন কর্মসূচি এবং বক্তব্য’ পথচারীদের আকৃষ্ট করেছে। যারা ওই পথে চলাচল করেছেন তাদের সবাই ক্ষণিকের জন্য হলেও দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনেন। এই হলো ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চার রুচিবোধ। মনিষীরা বলে থাকেন, পোশাক মানুষের শিক্ষা, রুচিবোধ, সংস্কৃতি, পারিবারিক আভিজাত্য, মূল্যবোধের পরিচয় ফুটিয়ে তোলে। পশ্চিমাদের সংস্কৃতি, সামজিক মূল্যবোধ ও পোশাক পরিচ্ছেদ আর এশিয়ার সংস্কৃতি, সামজিক মূল্যবোধ ও পোশাক পরিচ্ছেদ এক নয়। কিন্তু দেশের এক শ্রেণীর তথাকথিত সংস্কৃতিসেবী ও উচ্চ শিক্ষিত মানুষ আধুনিকতার নামে পশ্চিমা সংস্কৃতি চর্চায় ব্রতী হয়ে দেশে কৃষ্টি কালচার, সভ্যতা-ভব্যতা বিনষ্টের চেষ্টা করছে। তারা অল্প বয়সী মেয়েদের দেশি ও পাশ্চাত্যের সমন্বয়ে আটোসাটো এক বিচিত্র পোশাক পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। ফ্যাশনেবল পিঠখোলা বা শরীরের কিছু অংশ প্রদর্শন করা পোশাককে আধুনিকতা মনে করেন।

এর আগে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী গত ১৮ মে নরসিংদী রেলস্টেশনে আটোসাটো পোশাক পড়ায় মারধরের শিকার হন। তার সঙ্গে থাকা দুই বন্ধুও মারধরের শিকার হন। ওই মারধোর ও গালিগালাজ করে পুরো দৃশ্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা-বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এরপর নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পক্ষ থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করা হয়। এ নিয়ে প্রতিবাদকারী মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলাকে গ্রেফতার করা হয়। এনিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গ্রফতারকৃত আসামীর জামিন ইস্যুতে ১৬ আগষ্ট হাইকোটে উঠে। নরসিংদী রেলস্টেশনে পোশাকের জন্য তরুণীকে হেনস্তার প্রসঙ্গ নিয়ে হাইকোর্ট প্রশ্ন রেখেছেন, সভ্য দেশে এমন পোশাক পরে রেলস্টেশনে যাওয়া যায় কি না। আদালত বলেছেন, ‘(ওই তরুণী) প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর অবস্থায় ছিল, সিডিতে দেখা যায়। এটি আপনার অধিকার? পোশাকের অধিকার?’ বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আদালত মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলাকে ৬ মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। শুনানির একপর্যায়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দা জাহিদা সুলতানা বলেন, ‘কী পোশাক পরবে, সে বিষয়ে ব্যক্তির অধিকার আছে’। তখন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করার অধিকার আছে কি না? পোশাক সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না? যে সমাজে যাবেন, সে সমাজের আর্থসামাজিক অবস্থাও একটি বিষয়। ঢাকায় এক ধরনের, গ্রামে অন্য ধরনের।’

আদালতের এমন সুচিন্তিত বক্তব্যের প্রতিবাদে ২২ আগষ্ট আদালত প্রাঙ্গণে ১৪ জন তরুণী বিক্ষোভ করেন। তথাকথিত আধুনিক এবং আটোসাটো পোশাক পড়তে অভ্যস্ত ওই তরুণীরা তাঁদের হাতে মুখে নানান সেøাগান দেন। তারা ‘মাই বডি মাই চয়েস’,‘অশ্লীল নজর অসভ্যতা’,‘নজর সামলে রাখুন’ সেøাগানের মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন। দাবি করা হয় ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন শিল্পী থেকে নাট্যকর্মী, গবেষক, শিক্ষক, ইত্যাদি পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকা মহিলারা। তাঁদের সবার একটাই মত ছিল সরকার বা আদালত কেউই কখনও ঠিক করে দিতে পারেন না যে মহিলারা কী পরবেন আর কী নয়। তাঁদের জীবন যখন, তাঁদের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে নিজের পছন্দ মতো পোশাক পরার। আদালত প্রাঙ্গণে আটোসাটো পোশাকের পক্ষ্যে অবস্থান নেয়া তরুণীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েদের মাথায় হিজাব বা ওড়না পরার বিপক্ষ্যে। তাদের বক্তব্য মেয়েরা আধুনিক হতে প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি পরা শুরু করেছে। তার বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মে কিছু ব্যাক্তি বিরোধিতা করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই বিক্ষোভ? যে তরুণীরা ‘মাই বডি মাই চয়েস’ শ্লোগান দেন তারা কারা? তাদের পরিচয় কি?
অপ্রিয় হলেও সত্য এক সময় মানুষ পশুর চামড়া, গাছের ছাল ও গাছের পাতা পরিধান করতেন। তখন ছিল আদিম যুগ। এখচ চলছে আধুনিক যুগ। আদিম আর আধুনিকতার মধ্যে বিস্তর ফারাক। ওই (আদিম) যুগে পোশাক ছিলো না বলে নারী-পুরুষ গাছের ছাল-বাকল দিয়ে লজ্জাস্থান ঢাকতেন। যদিও বাকি শরীর থাকতো নগ্ন। আর এখন আধুনিক হওয়ার পর আধুনিকতার নামে কিছু মানুষ ধীরে ধীরে আদিমযুগেই চলে যাচ্ছেন। এ যুগে হাজার রকম পোশাকের ভারে ভারাক্রান্ত মানুষ। একেকজনের সংগ্রহে রয়েছে কত বিচিত্র যে পোশাক তার ইয়ত্তা নেই। অথচ এখন ‘মাই বডি মাই চয়েস’ শ্লোগানের মাধ্যমে আধুনিক যুগের কিছু নারী-তরুণী সেই আদিম স্টাইলেই কোনোরকমে লজ্জাস্থান ঢেকে ঢুকে শরীরের সব অংশ বের করে রাখার পোশাক পড়ছে। তাহলে পোশাক উন্নত হওয়া বা পোশাকে বৈচিত্র আসায় কী লাভ হলো? আধুনিকতার নামে আদিম যুগের অর্ধনগ্ন পোশাক পড়ে শরীর প্রদর্শনের মধ্যে পোশাক থাকা আর না থাকার নামান্তর নয় কি?

ইউরোপ, আমেরিকার দিকে তাকালে কি দেখা যায়? সেখানেও নারীদের মধ্যে পারিবারিক কিংবা ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে হোক হোক, বিভিন্ন ডিজাইনের হিজাব/বোরখা পরার প্রবণতা বাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া তরুণীরা হিজাব, বোরকা পড়তে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সে চিত্রই দেখা যায়।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৬ আগস্ট একটি মামলার পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত পোশাকের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘সভ্য দেশে এমন পোশাক (আটোসাটো) পরে রেলস্টেশনে যাওয়া যায় কি না? কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করার অধিকার আছে। পোশাক সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না? যে সমাজে যাবেন, সে সমাজের আর্থসামাজিক অবস্থাও একটি বিষয়। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুহিউদ্দিন রাহাত বলেন, বাক স্বাধীনতার অর্থ যেমন অন্যকে গালি দেয়া নয়, ঠিক তেমনি ‘পোশাকের স্বাধীনতার’ অর্থ অন্যকে বিরক্ত করা নয়। পোশাকের স্বাধীনতার নামে এমন পোশাক পরা কখনই ঠিক না, যা পাবলিক নুইসেন্স বা গণ উৎপাত বা বিরক্তি তৈরি করে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়াদের একজন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রেহানা রাহী। তিনি বলেন, সংস্কৃতি অবশ্যই পরিবর্তনশীল। কিন্তু আমরা যে সংস্কৃতি গ্রহণ করবো, সেটা অবশ্যই আমাদের দেশীয় মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আজকাল পোশাকের স্বাধীনতার নামে যে পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানি করা হচ্ছে, তা আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। এটা এক ধরনের কালচারাল টেরোরিজম।

এসময় শিক্ষার্থীরা পোশাকের নামে ‘পশ্চিমা অপসংস্কৃতি’ আমদানিকারকদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রত্যেক তরুণীর সাজপোশাকে স্বাধীনতা থাকা উচিত। স্থান-কাল-সময় বুঝে পোশাক পরই পোশাকের স্বাধীনতা। পোশাকের মধ্য দিয়ে একজন নারীর রুচিশীলতা, ব্যক্তিত্ব ও সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। সাজপোশাকের মধ্য দিয়ে নগ্নতা বা উগ্রতা ফুটে তোলা আধুনিকতা নয়। ভারতের একটি প্রবাদ চালু রয়েছে ‘আপকা রুচি খানা/ পর রুচি পরনা’ (নিজের রুচি বা পছন্দমাফিক খাবার খাও, পরের রুচি বা পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক পরো)। ওটা বিধর্মীদের ক্ষেত্রে হলেও হতে পারে। কিন্তু মুসলমান তথা বাংলাদেশের সমাজের জন্য নয়। আটোসাটো, অর্ধলগ্ন শরীরের তথাকাথিত অধুনিক পোশাক নয়; বরং শালীন পোশাক স্মার্টলি ক্যারি করলেও তরুণী ও নারীদের সুন্দর দেখায়। আধুনিক হবার নামে ছেলেদের মতো প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি পরলে তরুণীদের আধুনিকতার প্রকাশ ঘটে না। প্রশ্ন হচ্ছে দেশের ছেলেরা শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি পরে এগিয়ে যাচ্ছে; আর মেয়েরা শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ পরে কি পিছিয়ে পড়েছে?

আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘(হে নারী জাতি, তোমরা সব গৃহে অবস্থান করো এবং প্রাক ইসলামি (জাহেলিয়াতী) যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে রেড়িওনা’ (সুরা আল আজহার, আয়াত-৩৩)।



 

Show all comments
  • Md Ifti Ahsan ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৩ এএম says : 0
    নাস্তিকরা এটাকেই আধুনিকতা বলে,, আসলে ওরা চায় নারীদের ভোগ করতে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nur Nobi ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১০ এএম says : 0
    সময়ের সঠিক কথা
    Total Reply(0) Reply
  • N S A R II ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১১ এএম says : 0
    আমি সহমত পোষণ করছি,
    Total Reply(0) Reply
  • Ibrahim Khan ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৩ এএম says : 0
    দেশ প্রেমিক জনগণের পক্ষ থেকে জানাই- অভিনন্দন
    Total Reply(0) Reply
  • HM Mahfuj Alahi ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১১ এএম says : 0
    এই বিষয়টি নিয়ে অভিনন্দন জানানোর জন্য ঢাবি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Ramjan Khan ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১১ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ ভোন চালিয়ে যান
    Total Reply(0) Reply
  • Alamgir Hussain ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১১ এএম says : 0
    ভালো কথা লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Sparkle Shimul ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১২ এএম says : 0
    যারা লেংটু কে স্বাধীনতা মনে করে তারা তখন যুক্তি দেখায় পশ্চিমা সংস্কৃতি দিয়ে। আবার যখন ধর্ষণের শিকার হয় তখন আবার সেই তাদের কথায় বরবর ইসলামিক আইন তথা সৌদি নিয়মে ফাসি চায় কেনো ভাই? তুমি লেংটু হয়ে হাটলে দোষ নাই আর তোমার দিকে সেই লেংটু দৃষ্টিতে তাকাইলেই দোষ??
    Total Reply(0) Reply
  • Jony ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:৩৬ এএম says : 0
    Right
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul khaleque Miah ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৫:৫৮ পিএম says : 0
    অশ্লীলতা কখনও আধুনিকতা হতে পারেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:১২ এএম says : 0
    অতীতে কন্যা সন্তান হলে তাকে জীবন্ত কবর দেওয়া হত| ছেলেরা পিতার মৃত্যুর পর সৎ মাকে বিয়ে করত| নারীদেরকে পণ্যের মত ব্যবহার করা হতো| গ্রীক ও রোমান সমাজে নারীকে মনে করা হতো সকল অনিষ্টের মূল এবং সবচে’ নিকৃষ্ট প্রাণী। পরিবারে মা, বোন, স্ত্রী ও কন্যা কোন নারীর মর্যাদাই দাসীর চেয়ে বেশী ছিলো না। নারী ছিলো বাজারে বেচা-কেনার পণ্য। পরিবার-প্রধান যে কোন নারীকে বাজারে বিক্রি করতে পারতো| এমনকি ১৮০৫ সাল পর্যন্ত বৃটিশ আইনে স্বামীর অধিকার ছিলো স্ত্রীকে বিক্রি করার। হিন্দুসমাজে নারীর অবস্থা ছিলো সবচে’ করুণ। এ প্রসঙ্গে শুধু সতীদাহ-এর কথা উল্লেখ করাই যথেষ্ট, যা এই মাত্র সেদিন সংস্কারবাদী নেতা রাজা রামমোহন রায় ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমে বাতিল করিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা নারীজাতিকে এত সম্মান দিয়েছেন| যখন একটা কন্যা শিশু জন্মগ্রহণ করে তখন একটা ফেরেশতা সেই শিশুটির মাথার কাছে বসে দোয়া করতে থাকে| প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এইভাবে বলেছেন যদি কেউ একটি নারী শিশু সন্তানকে কোরআন সুন্নত অনুযায়ী লালন পালন করে প্রকৃত মুসলিম লোকের সাথে বিবাহ দেয় তাহলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বলেছেন দুই আঙ্গুল দেখিয়ে দুই আঙ্গুলের মধ্যে যতোটুকু ফাক আছে তত কাছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ওই মা বাবা জান্নাতে থাকবে| নারী জাতির জন্য পবিত্র কোরআনে একটা সূরা আছে তার নাম হচ্ছে সূরা আন-নিসা| অথচ পুরুষ জাতির জন্য পবিত্র কোরআনে কোন সূরায় সূরা নাই|
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:১২ এএম says : 0
    ইবনু মাজাহ ৪১৮৫, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৯৭৪ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "প্রতিটি ধর্মে‌র একটি প্রাকৃতিক চরিত্র রয়েছে। ইসলামের প্রাকৃতিক চরিত্র হল হায়া (লজ্জা)" অথবা "প্রত্যেক দীনের বা ধর্মের একটি প্রাকৃতিক চরিত্র রয়েছে। ইসলামের চরিত্র শালীনতা (হায়া)।"
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:১৩ এএম says : 0
    — (বায়হাকি) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "এই পৃথিবী থেকে হায়া [লজ্জাশীলতা]এবং বিশ্বস্ততা সর্ব‌প্রথম উঠে যাবে, অতএব, আল্লাহর কাছে এগুলো বেশি বেশি চাইতে থাকো।" যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সরাসরি জাহান্নামের উল্লেখ করেছেন, বেপর্দা নারী তাদের অন্যতম। যা মানুষের জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। মানুষের ঈমান ধ্বংসেরও কারণ বটে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “পুরুষদের জন্য নারীর চেয়ে বেশি ক্ষতিকর কোন ফিতনা আমি আমার পিছনে রেখে যাইনি।” আল-বুখারী, ৫০৯৬ দ্বারা বর্ণিত; মুসলিম, 2740। নারীর পায়ের তলে বেহেস্ত, পুরুষের পায়ের তলে জুতা নারীদের জান্নাতে যাওয়া খুবই সহজ .তারা যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজানে রোজা রাখে, নিজের পবিত্রতা রক্ষা করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে, তাকে বলা হবে তুমি যে কোনো দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করো [মুসনাদে আহমদ হাদিস 1661] বেপর্দা নারী অভিশপ্ত [মুসনাদে আহমদ হাদিস: 7083] জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী মহিলা [বুখারি হাদিস: 3014] যখন কোন মহিলা সুগন্ধি লাগিয়ে বের হয় আর লোকেরা তার খোশবু পায় সে তখন ব্যভিচারী হিসাবে গণ্য হয় [নাসায়ী আহকামুল কুরআন থানভী: 3/488] একবার আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) তাঁর স্ত্রী ফাতিমাকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, একজন মুমিন নারীর কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস কি? ফাতিমা (রাঃ) উত্তর দিলেন, "অচেনা পুরুষ যেন আমাকে না দেখে আমিও অচেনা পুরুষকে যেন না দেখি।" যে মহিলারা পোশাক পরেন তারা নগ্ন বলে মনে হয়। তারা মন্দ কাজের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং এর দিকে আমন্ত্রণ জানায়। তাদের মাথা হবে ব্যাক্ট্রিয়ান উটের কুঁজের মতো। নবীর বাণী, “তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং এর ঘ্রাণও পাবে না”।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:১৪ এএম says : 0
    পর্দা মানার প্রচলন প্রথম পরিবার থেকেই হয় |Surah An-Nur:68: Ayat:58; “হে মুমিনগণ তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসী গণ এবং তোমাদের মধ্যে যারা বয়প্রাপ্ত হয়নি তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের সালাতের পূর্বে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ তখন এবং ‘এশার সালাতের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময় | এই সময় ব্যতীত অন্য সময় বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে | তাদের জন্য কোন দোষ নেই | তোমাদের একে অপরের নিকট যাতায়াত করতেই হয় | এভাবে আল্লাহ তোমাদের নিকট তার নির্দেশ সুষ্ঠুভাবে বিবৃত করেন | আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়” Surah An-Nur:68: Ayat:58: “এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততি বয়প্রাপ্ত হলে তারাও যেন অনুমতি প্রার্থনা করে তাদের বয়স্কদের ন্যায় | এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময় | ”
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:১৪ এএম says : 0
    ছেলে এবং মেয়ের বয়স যখন দশ বছর হয় তখন ভাই বোনকে এক বিছানায় শয়ন করবে না তাদেরকে পৃথক বিছানা দিতে হবে এবং পৃথক রাখতে হবে| ভাই ভাই এক বিছানায় শয়ন করলে এক চাদরের তলায় শয়ন করবে না| মা তার 10 বছরের ছেলের সাথে এক বিছানায় শয়ন করবে না| বাপ তার দশ বছরের মেয়ের সাথে এক বিছানায় শয়ন করবে না| মা ছেলের সামনে পর্দা করবে, এমন কাপড় পরিধান করবে না যাতে মায়ের গঠন প্রকাশ পায় যেমন টাইট কাপড় ও পাতলা কাপড় তদ্রুপ ছেলে মায়ের সামনে পর্দা করবে যখন যুবক হয়ে যায় পুরুষের লজ্জাস্থান হচ্ছে নাভির উপর থেকে হাঁটু পর্যন্ত তবে পুরুষের পাছা এবং রানের গঠন দেখানো যাবে না অতএব সেই জন্য পুরুষের টাইট কাপড় পরা হারাম পুরুষদের জন্য, তদ্রুপ ভাই ও বোনের সামনে পর্দা করবে| বোন ভাই ও বাপের সামনে বা মহরম এর সামনে পর্দা করবে, একইভাবে বাপ ও ছেলের সামনে পর্দা করবে যেমন বাপ নাভির উপর থেকে নিচে পর্যন্ত কাপড় পড়বে এবং কাপড় টাইট হবে না বাবা মেয়ের সামনে ও পর্দা করবে ঠিক একইভাবে
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:২০ এএম says : 0
    পৃথিবীতে যত দেশের মহিলারা অশালীন অসভ্য পোশাক পরে তারা সবাই কোনো না কোনো সময় ধর্ষিত হয় যারা ধর্ষণ করে তাদের কে দোষ দেওয়া যাবে না কেননা নারীরা তাদেরকে এমন ভাবে আকর্ষণ করে তখন তাদের মাথা নষ্ট হয়ে যায় সেই জন্যই তারা ধর্ষণ করে আর পর্দা করলে নারীদের ছবি দেখা যায় না তখন পুরুষরা তাদের দিকে তাকিয়েও দেখেনা আজকের পৃথিবীতে অনেক কাফের মহিলা যারা নায়িকা ছিল গায়িকা ছিল ডাক্তার ছিল ইঞ্জিনিয়ার ছিল তারা বেপর্দায় চলাফেরার যিনা-ব্যভিচার করত কিন্তু ইসলামের ছায়াতলে এসে দ্বারা সবকিছু ছেড়ে পর্দা করা আরম্ভ করুন আজকে আমাদের তথাকথিত মুসলিম প্রগতিশীল নারীরা নেংটা হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এরা মানুষ না জানোয়ার ও না এরা নরপিচাশ তাই এদেরকে বলা হয়েছে কোরানে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পোশাক

২৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ