নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টি-টোয়েন্টিতে শুরু থেকেই বিবর্ণ বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের খেলার ধরণ নিয়ে বরাবরই প্রশ্নের মুখে পড়ে দল। একেকটি আসরে ব্যর্থতার পর নতুন শুরুর কথা বলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ দল হাঁটে পুরনো পথেই। এবার বেশ ক’দিন ধরেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন শুরুর বার্তা দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শুরুটা এশিয়া কাপেই করতে চায় বাংলাদেশ। সেই কথার জের পাওয়া যাচ্ছে বেশ কিছু অদল-বদলে। নতুন শুরুর তোড়ে এবার অধিনায়কত্ব ও কোচিং প্যানেলে বদল এনেছে বাংলাদেশ দল। মাহমুদউল্লাহকে সরিয়ে টি-টোয়েন্টিরও দায়িত্ব পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। টেকনিক্যাল পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার শ্রীধরণ শ্রীরামকে। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে টি-টোয়েন্টি থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে কেবল ওয়ানডে ও টেস্টে। এতগুলো বদল ও নতুন শুরুর বার্তা কতটা মাঠের ক্রিকেটে ফলদায়ক হয় তা দেখা যাবে এশিয়া কাপে।
আইসিসির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর প্রথমে টেস্ট, এরপর টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাকিবকে। সেটিও অবশ্য বেটউইনার-বিতর্ক পেরিয়ে। প্রথম কবে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব শুধু সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘আন-অফিশিয়াল প্রস্তাব কবে দেওয়া হয়েছে বলাটা মুশকিল। অফিশিয়ালি বেশ অনেক দিন আগেই। তবে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। এ আলোচনা করলে আমাদের মূল আলোচনা থেকে দূরে সরে যাওয়া হবে। এ অবস্থায় সেটা খুব একটা আদর্শ নয়।’ এবার তাহলে মূল আলোচনায় ফেরা যাক। এর আগে এই ‘দিন বদলের গান’ পাওয়া হয়েছিল একাধিকবার। এবার সত্যিই কি বদল আসবে? নতুন মেয়াদে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব পাওয়া সাকিবও রাখঢাক না রেখেই প্রকাশ করে দেন নিজের হতাশা, ‘ব্যর্থতা চিহ্নিত করে অস্বীকার করার কিছু নেই। এটা অবশ্যই করে (ব্যর্থতা দেখিয়ে দেয়)। আর এটা আমরা শেষ বারের মতো শুনছি কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন। এরপরও আবার শুনতে হতে পারে, আমরা নতুন করে আবার শুরু করতে যাচ্ছি। এই শুরুর শেষ আছে কিনা আমি জানি না। আমরা যদি চেষ্টা না করি কখন জানতে পারব। চেষ্টা করাটাও জরুরী।’
সাকিব এমন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন টি-টোয়েন্টি দলের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ জিততে পারেনি কোনো সিরিজই। এ অবস্থায় অধিনায়কত্বের ব্যাপারে কেন আগ্রহী হলেন, সে ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি, ‘কঠিন প্রশ্ন... আমি জানি না কতটুকুৃতবে এখন আমি অনেক অনুপ্রাণিত। আমি চেষ্টা করব, আমার যে অভিজ্ঞতা আছে, সেটা দিয়ে যতটুকু দলের ভালো করানোর চেষ্টা করা যায়।’ তাঁকে অধিনায়ক করার পেছনে বোর্ডের ভাবনা কী, সেটি নিয়ে অবশ্য একটু মজাই করলেন সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার, ‘এমন হতে পারে পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) আমাকে চাপে রাখেন। এটা (অধিনায়কত্ব) থাকলে একটা চাপে রাখার সুযোগ থাকে। আমার কাছে মনে হয়, যেহেতু জায়গাগুলো (অধিনায়কত্ব) চ্যালেঞ্জিং এবং সেই জায়গাগুলোতে আমি বোর্ডের কাছে সেরা অপশন। হয়তো এ কারণে আমাকে নির্বাচন করা হয়েছে।’
তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথম খেলবে এশিয়া কাপেই, যে টুর্নামেন্টে আগে ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আছে সাকিবের। যদিও টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়, সেটি বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। সাকিব চিন্তা করতে চান দীর্ঘমেয়াদেই, ‘লক্ষ্য আসলে উন্নতির গ্রাফটা যতটা (উঁচু করা যায়)... (এ কারণে) প্রক্রিয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’ টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে ভাবনা কী, সেটি উদাহরণ দিয়েও বুঝিয়েছেন তিনি, ‘ধরেন, এশিয়া কাপে অনেক ভালো করলেন, চ্যাম্পিয়নই হলেন। কিন্তু বিশ্বকাপে ভালো করতে পারলেন না। তাহলে কিন্তু উন্নতির ধারাটা ঠিক হলো না। (আবার ধরেন) ২০২৪ সালে হয়তো বিশ্বকাপে আমরা সেরা দল, ২০২৬ সালেও হয়তো শেষ চারে যাওয়ার মতো। তখন আমরা ভালো দল। কিন্তু এশিয়া কাপ জিতলাম, পরে নিউজিল্যান্ডে সব হারলাম, বিশ্বকাপে হারলাম, আবার সিরিজ জিতলাম একটা—ও রকম হওয়ার চেয়ে এটা হওয়া অনেক ভালো। ভারত ২০০৭ সালের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই জেতেনি। কিন্তু প্রতিবারই ফেবারিটের তালিকায় আছে। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।’
অধিনায়ক বা দল হিসেবে বিশ্বকাপ ধরে ধরে পরিকল্পনা করা উচিত কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আপাতত বিশ্বকাপের আগে যে সময় আছে, সেটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে বলেছেন সাকিব, ‘এখন যেটা ফোকাসের জায়গা, সেটা আগামী দুই-আড়াই মাস। এ সময়ে আমরা যতটা উন্নতি করতে পারি। আমাদের অনেক চোটের সমস্যা আছে। এখন যে সময় যাচ্ছে, যে পরিমাণ খেলা হচ্ছে, এটা সব সময় হবে। এই প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা কীভাবে উন্নতি করতে পারি, সেটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ আপাতত যা হাতে আছে, সেগুলোই কাজে লাগাতে বলছেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক, ‘আমি বলছি না যে খেলাটার ধরন পুরোপুরি বদলে ফেলতে হবে। আমরা চাইলেই আমাদের শরীর হুট করে বড় করে ফেলতে পারব না। কিন্তু আমাদের যে রিসোর্স আছে, আমরা যেন তা ব্যবহার করতে পারি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমার কাছে তেল নেই। এখন তেল দিয়ে কী করতে পারি, সেটা ভেবে লাভ নেই। আমার কাছে গ্যাস আছে, তা দিয়ে কী কী কাজ করতে পারি, সেটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, আমরা ভালো দল। আমরা যদি রিসোর্স ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি... আমি যদি একবার-দুইবার-তিনবার করে দেখাতে পারি, তাহলে বুঝতে হবে যে আমাদের সে সামর্থ্য আছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।