পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্যাংয়ের খরচ জোগাতে চাঁদাবাজি-ছিনতাইসহ চুক্তিতে সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডই ছিলো ওমর আলী শিশিরের পেশা। মিরপুরের পূর্ব কাফরুল এলাকা থেকে সম্প্রতি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ সম্প্রতি গ্রেপ্তারকৃত শিশির ২ দিনের রিমান্ডে পুলিশকে এমনই তথ্য দিয়েছে। পুলিশকে সে জানিয়েছে, তার দলের ২০ -২৫ জন সদস্যের পেছনে মাসিক খরচ হয় বিপুল অংকের টাকা। সেই টাকা জোগাড় করতে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই এমনকি কারও জমি দখল নিতে চুক্তিতে কাজও নিতো তারা। মিরপুর কাফরুল, ভাষানটেক, ইসিবি চত্বর এলাকা ছাড়াও বাড্ডায় এরা আতঙ্ক। এসব অপরাধে ভয়ভীতি দেখাতে ব্যবহার করা হতো পিস্তল।
শুধু শিশির একাই নয়, এলাকাবাসির অভিযোগ, কাফরুল, মিরপুর, পল্লবী ও শাহআলীতে রয়েছে একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ। দেশের বাইরে থেকে নিজেকে নিরাপদে রেখে দাগী সন্ত্রাসীদের অনেকেই উঠতি সন্ত্রাসীদের দিয়ে এলাকায় আধিপত্য ও চাঁদাবাজি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আর্শিবাদে এসব সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মিরপুর-১০, মিরপুরর-১, দারুসসালাম, শাহআলী ও চিড়িয়াখানা রোডের ফুটপাতসহ শপিং মলের ব্যবসায়ীরা। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, ভারতে পলাতক সন্ত্রাসী শাহাদাতের নামে মনিরের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ মিরপুর-১, দারুসসালামও শাহআলী থানা এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা অমানবিক নির্যাতন চালায়। প্রতিকার পেতে ভূক্তভোগীরা থানায় গেলে পুলিশ মূল ঘটনা আড়াল করে সাধারণ ডাইরি দায়ের করে দায়িত্ব শেষ করছে। এতে সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে নির্যাতন চালাতে শুরু করে।
গত ২০ জুন মিলন নামে একজন ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহআলী থানায় একটি জিডি (নং-৯৮৩) দায়ের করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, এক সময়ের ফুটপাতের চাঁদাবাজ মনির, হাসান ও সিরাজ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে তাকে মারধর করে। বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনেও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের বিষয়টি গোপন করে তিনি সাধারণভাবেই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি জিডি করেছেন মাত্র। ভূক্তভোগী মিলন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করলে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বর্তমানে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন।
গত ২৪ জুন দারুস সালাম থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গৌতম কুমার নামে এক ব্যবসায়ী একটি সাধারণ ডাইরি (নং-১৪৫২)দাযের করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছন, ২৩ জুন নিজের মোবাইল ফোনে জনৈক মনির নামে এক সন্ত্রাসী তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ রাস্তায় ফেলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যবসায়ী ইনকিলাবকে বলেন, ওই সন্ত্রাসী তাকে অবর্ননীয় যন্ত্রনা দিচ্ছে।
নুর হোসেন নামে অপর একজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, এই দলে সাইদুল, হাসান, সিরাজ, বড় সুমন, বাবুসহ ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে।
এরা প্রত্যেকে এলাকা ভাগ করে চাঁদা আদায় করছে। কেউ দিতে না চাইলে এরা সবাই একসাথে গিয়ে হামলা চালাচ্ছে। চাঁদা না দেয়ায় তার দোকানে হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে। এই ঘটনায় তিনি দারুসসালাম থানায় একটি জিডি করেন। তিনি আরো বলেন, এদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয় না। ফলে সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এসব সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ মিরপুরের শান্তিপ্রিয় মানুষ।
রাবির দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
রাবি সংবাদদাতা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে এক হোটেল থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হল সংলগ্ন খাবারের হোটেল মালিক মানিক হোসেন বাবু। হোটেল মালিকের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা। দিনপ্রতি দুই হাজার করে দাবি করলেও প্রতিদিন এক হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছেন তারা। অভিযুক্তরা হলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
ভুক্তভোগী বাবু বলেন, ওনারা (রাশেদ এবং রাকিব) জিয়া হলের সভাপতি, সেক্রেটারি হওয়ার পরেই আমার সাথে কন্ট্রাক্ট করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে দোকান চালাতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। প্রথমে তারা প্রতিদিন দুই হাজার টাকা দাবি করে। এরপর আমি নিয়মিত তাদের এক হাজার করে দিতে রাজি হই। কিছুদিন ব্যবসা খারাপ থাকায় সপ্তাহে দুই হাজার করে নিলেও এখন প্রতিদিন এক হাজার করে নিচ্ছে। সর্বশেষ গত শনিবার দুপুরে রাশেদ এসে এক হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এই সপ্তাহে ছুটি থাকায় তিন-চার দিনের টাকা দিতে পারিনি। সেটা তারা ধরে রেখেছে। পরে নিয়ে নেবে। মানে রেগুলার এক হাজার করে দেয়াই লাগছে।
তিনি বলেন, তারা ফোন করে টাকা রেডি রাখতে বলে। কখনও রাশেদ, কখনও রাকিব এসে টাকা নিয়ে যায়। পরে তারা দুজন টাকাটা ভাগ করে নেয়। এছাড়া হল কমিটি হওয়ার পর থেকে রাকিব প্রতিদিন ২০০ টাকা থেকে আড়াই’শ টাকার খাবার খায়। কখনও তিনি বিল পরিশোধ করেননি। আমি পুরো হিসাব লিখে রেখেছি। এখন পর্যন্ত প্রায় দশ হাজার টাকার মত বাকি রয়েছে তার।
চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ মিয়া বলেন, এসব মিথ্যা। আমি তো সবার সামনেই টাকা দিয়ে খাই। ৫০ টাকার খাবার খেলে হয়ত ৪০ টাকা দেই। এখানে চাঁদা নেয়ার তো কোনো প্রশ্নই আসে না। আমাকে ফাঁসানোর জন্য হয়ত এটা করা হচ্ছে।
একই হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে আমি অবগত নই। আমার মনে হয় রাশেদ ভাইও এই বিষয়ে কিছু জানেন না। খাবারের বিল না দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি কোন মাসে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখতাম, আবার কোন মাসের শেষে টাকা দিতাম। সর্বশেষ দুই মাসের টাকা হয়তো বাকি আছে। সেটাও দিয়ে দেব।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমি বিষয়টি মাত্র জানলাম। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে টাকা চাঁদাবাজি করার এখতিয়ার কারোর নেই। আমি বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছি। সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ছাত্রলীগের সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। এ নিয়ে আমরা গতকালও মিটিং করেছি। আমরা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে জিড়ো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। ছাত্রলীগের কোন কর্মী অন্যায় করলে ছাড় দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস বলেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো দেখছি এবং সার্বিক খোঁজ-খবরও রাখছি। আমি এ ধরণের চাঁদাবাজির ঘটনাগুলো কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।