Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের অর্থনী‌তিতে আরেক‌টি ধাক্কা আসবে : ড. আহসান এইচ মনসুর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২২, ৪:৪৭ পিএম

বৈ‌দে‌শিক মুদ্রার বাজা‌রে যে অ‌স্থিরতা বিরাজ কর‌ছে, সেটি নিয়ন্ত্র‌ণে চ‌লে আস‌বে। ত‌বে সাম‌নে দেশের অর্থনীতিতে যে বড় ধাক্কা আস‌বে সেটা হ‌লো মূল্যস্ফী‌তি। এটি মোকা‌বিলায় আমা‌দের তেমন কো‌নো প‌লি‌সি নেই, এ‌টি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না, কারণ আমরা নয়-ছয় প‌লি‌সিতে বাঁধা। রবিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর পল্ট‌নে বাংলা‌দে‌শের অর্থনী‌তি‌তে নতুন চ্যা‌লেঞ্জ শীর্ষক আ‌লোচনা সভায় এ আশঙ্কার কথা জানান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর।

অর্থ‌নৈ‌তিক প্র‌তি‌বেদক‌দের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আ‌য়ো‌জিত সভায় প্রধান অ‌তি‌থি ছি‌লেন পরিকল্পনা প্র‌তিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এসময় উপ‌স্থিত বাংলা‌দেশ ব্যাং‌কে প্রধান অর্থনী‌তি‌বিদ হা‌বিবুর রহমান, রিসোর্স পারসন হিসেবে ছিলেন বিল্ড চেয়ারপারসন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ইআরএফের সভাপতি শারমীন রিনভী, সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ। ওভারভ্যালু এক‌চেঞ্জ রেট প‌লি‌সির কার‌ণে এখন বৈ‌দে‌শিক মুদ্রার বাজারে অ‌স্থিরতা বিরাজ কর‌ছে জা‌নি‌য়ে আহসান এইচ মনসুর ব‌লেন, সরকা‌র ওভারভ্যালু এক‌চেঞ্জ রেট প‌লি‌সি করে আস‌ছে। এটা আজ‌কে শুধু নয়, দীর্ঘ সময় ধ‌রে হয়ে আসছে।

তিনি বলেন, আমরা অ‌নেক আ‌গে থে‌কেই ব‌লে আস‌ছি, এটা সমন্বয় করার জন্য; কিন্তু তা করা হয়‌নি। ‌তি‌নি জানান, ১৮ মি‌লিয়ন ডলার কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যা‌লেন্স নে‌গে‌টিভ। বা‌ণিজ্য ঘাট‌তি ৩৩ মি‌লিয়ন ডলার, এটা একদি‌নে হয়‌নি। ১২ মা‌সে লে‌গে‌ছে। প্র‌তি মা‌সেই বে‌ড়ে‌ছে। কিন্তু তেমন কো‌নো পদ‌ক্ষেপ নেওয়া হয়‌নি। এক্স‌চেঞ্জ রেট এখন নে‌মে এ‌সে‌ছে, আশা কর‌ছি এটা স্থি‌তিশীল হ‌য়ে যা‌বে। ত‌বে সাম‌নে বড় ধাক্কা আস‌বে মূল্যস্ফী‌তি।

আগামী‌তে ১০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যস্ফী‌তি বাড়‌তে পা‌রে, এটা হ‌লে সাম‌নে খারাপ সময় আস‌ছে আশঙ্কা ক‌রে পিআরআইবির নির্বাহী পরিচালক জানান, আমা‌দের বা‌ণিজ্য ঘাট‌তি সমন্বয় হ‌য়ে যা‌বে। আমা‌দের রপ্তা‌নি রে‌মিট্যান্স বাড়‌বে, আমদা‌নি কম‌বে। আমা‌দের ব্যা‌লেন্স শিট অ‌ধিকাং‌শ সমন্বয় হ‌য়ে যা‌বে। কিন্তু সমস্যা হ‌বে মূল্যস্ফী‌তি। এ‌টি মোকা‌বিলায় কো‌নো পদ‌ক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নি‌য়ে এখনই ভাব‌তে হ‌বে। মূল্যস্ফী‌তি বে‌ড়ে গে‌লে চাপ আস‌বে, এখন চা বাগা‌নের শ্র‌মিকরা মজু‌রি বাড়া‌নোর জন্য এ‌সে‌ছে, আগামী‌তে গা‌র্মেন্টের শ্র‌মিকরা আস‌বে, এভাবে অন্যরাও আস‌বে। আমা‌দের মূল্যস্ফী‌তির অবস্থা ভা‌লো না। চা‌লের দা‌ম বে‌শি। সাম‌নে আ‌রো বাড়‌বে। কারণ উৎপাদন কম হ‌য়ে‌ছে।

বা‌জেট ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখ‌তে হ‌লে রাজস্ব বাড়া‌তে হ‌বে। ত‌বে চলমান নী‌তি‌তে এটি বাড়া‌তে হ‌লে ভোগা‌ন্তি বাড়‌বে। তাই নী‌তির প‌রিবর্তন আনার পরামর্শ দেন পিআরআইবির এই নির্বাহী পরিচালক। তবে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হয়ে যাওয়ার যতটা আশঙ্কা করা হ‌চ্ছে ততটা বাড়‌বে না ব‌লে জা‌নান পরিকল্পনা প্র‌তিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তি‌নি ব‌লেন, অর্থনী‌তি‌বিদ‌রা এমন আশঙ্কা কর‌লেও আমরা তা‌দের এ শঙ্কা গুরত্বরভা‌বে নেই না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে তথ্য অনুযায়ী, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এ হার গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থাৎ, গত বছরের জুন মাসে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিলেন, এ বছর জু‌ন মাসে তা কিনতে খরচ করতে হয়েছে ১০৭ টাকা ৫৬ পয়সা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ড. আহসান এইচ মনসুর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ