পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, ‘শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সা¤প্রদায়িকতামুক্ত, অসা¤প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধন করেন।
ভারত সফরের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছি, আমার দেশে কিছু দুষ্ট লোক আছে, কিছু উগ্রবাদী আছে। আমাদের দেশ সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন না। আপনার দেশেও যেমন দুষ্টু লোক আছে, আমাদের দেশেও আছে। কিছুদিন আগে তাদের দেশেও এক ভদ্রমহিলা কিছু কথা বলেছিলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে একটি কথাও বলিনি। বিভিন্ন দেশ কথা বলেছে, আমরা বলিনি। এ ধরনের প্রটেকশন আমরা আপনাদের দিয়ে যাচ্ছি। সেটা আপনাদের মঙ্গলের জন্য, আমাদের মঙ্গলের জন্য। আমরা যদি একটু বলি, তখন উগ্রবাদীরা আরো সোচ্চার হয়ে আরো বেশি বেশি কথা বলবে। তাতে ক্ষতিটা হবে কী? আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে, স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতকে বলেছি, আমরা উসকানিমূলক কর্মকান্ড কখনও প্রশ্রয় দেব না। এটা যদি আমরা করতে পারি, ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ের মঙ্গল। শেখ হাসিনা আছেন বলে ভারতের যথেষ্ঠ মঙ্গল হচ্ছে। বর্ডারে অতিরিক্ত খরচ করতে হয় না। ২৮ লাখ লোক আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছর ভারতে বেড়াতে যায়। ভারতের কয়েক লাখ লোক আমাদের দেশে কাজ করে। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের সুন্দর অবস্থানের কারণে। সুতরাং আমরা উভয়ে এমনভাবে কাজ করব যাতে কোনো ধরনের উসকানিমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। ভারত সরকারকে বলেছি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে যদি আমরা উভয়ে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিই।’
২০২১ সালে দুর্গাপূজায় বিভিন্ন মন্ডপে হামলা ও সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের একটি বিবৃতি নিয়ে ক্ষুব্ধ সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন। বিভিন্ন সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে অংশ নিলে সেই বক্তব্যের ব্যাখা দাবি করেন সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের দুজন নেতা।
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঘটনাটি একবছর আগের। পূজার সময় কুমিল্লায় একটি দেবতার কাছে কোরআন শরীফ রেখে একটা ছবি তোলে। সেটা ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়ার পর কিছু গোষ্ঠী ওখানে আক্রমণ করে। আক্রমণ থামাতে গিয়ে পুলিশ গুলি করে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ ঘটনা আমরা জানি, তখনও আমরা কিন্তু কুড়িগ্রামের কাহিনী জানতাম না। তখন আমাদের মন্ত্রণালয় যেসব কথা বলেছে, সত্যি কথা বলেছে। আমি শিক্ষক লোক, সত্য কথা বলি। আমরা বলেছি, তখন পর্যন্ত মোট ছয়জন লোক মারা যায়। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, চারজন মুসলমান, দুজন হিন্দু। তবে আমরা একজন লোকও মারা যাক সেটা চাই না।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখানে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে অনেকে গল্প বলেছে, এটা খুবই দুঃখজনক। আমি যেটা করেছি, তা বিবেকের তাড়নায় করেছি। কিন্তু এটাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে, টুইস্ট করে আপনাদের কাছে বলা হয়েছে। আমি বলছি- কোথাও সত্যের অপলাপ হয়নি। জেনেশুনেও আপনারা যদি প্রতিক্রিয়া দেখান, তাহলে এটা তো বড় মুশকিল।’
উসকানি না দেয়ার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন কাজ করব না, ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমন কোনো উসকানি দেব না, যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমাদের প্রতিবেশি দেশে কিছু মসজিদ পুড়েছে। আমরা কোনোভাবে সেটা প্রচার করতে দিইনি। এর কারণ হচ্ছে কিছু দুষ্টু লোক আছে, কিছু জঙ্গি আছে যারা এটার বাহানায় আরো অপকর্ম করবে। আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করেছি। অনেকে আমাকে ভারতের দালাল বলে, কারণ অনেক কিছুই হয়, আমি স্ট্রং কোনো স্টেটমেন্ট দিই না।’
তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে খুনের আগে কত মিথ্যা প্রচার করা হয়েছিল। এভাবে একটি পরিস্থিতি তৈরি করে তারপর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এখনও আবার সেই ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন ধরনের লোক দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা শুরু করেছে, উদ্দেশ্য অস্থিতিশীলতা। আপনাদেরও স্মরণ করা দরকার, শেখ হাসিনার সরকারকে টলানোর জন্য দেশকে যদি অস্থিতিশীল পথে নিয়ে যান, তাহলে আপনার-আমার প্রত্যেকের জন্য বিপদ। সেই বিপদ যাতে না আসে সেজন্য স্থিতিশীলতা চাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।