Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতের নিকট হেফাজতের স্মারকলিপি

নারী পুরুষ শিশু গণহত্যা ও বর্বরতা প্রমাণ করেছে মিয়ানমার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র : বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মিয়ানমারের নারী-পুরুষ ও শিশু গণহত্যাসহ বর্বর নির্যাতন চালাচ্ছে সরকারি জান্তা ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা। মিয়ানমার জান্তা গণহত্যা ও বর্বরতার পাশাপাশি বাংলাদেশের দিকে কামান তাক করেছে। সুতরাং মুসলমান নিধনের পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাই রোহিঙ্গাদের পূর্ণবাসন নিশ্চিত করতে ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনা অভিযানের নির্দেশ দেয়া, পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের পূর্ণবাসন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখা বিশ্বের প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বর্বর গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মিয়ানমার দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান নারী-পুরুষ ও শিশুদের নৃশংস গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন করে নিজেদের বিশ্বমানচিত্রে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। চলমান মুসলমান নিধন ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধে এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘকে তরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়ে এখন অং সান সূচি মিয়ানমারে গণহত্যা চালাচ্ছেন। মুসলমান নিধনে তার নিরবতা প্রমাণ করে তিনি নোবেল পুরস্কারের যোগ্য নন। আমরা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নিকট অশান্তির বিষকন্যা সূচির নোবেল পুরস্কার ফেরত নেওয়ার দাবি করছি।  
তারা সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলমানদের পক্ষে। আপনারাও নির্যাতিত মুসলিম ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়ান। রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়ে তাদের জীবন বাঁচান। মিয়ানমারের সাথে কূটনৈতিক সকল সম্পর্ক ছিন্ন করুন। তা না হলে জনমত ভিন্ন হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা বর্বতা বন্ধের দাবিতে ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল পূর্ব সূচনা সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের ইসলাম ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী। বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগরীর সহ-সভাপতি মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশওয়ারী, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মুহিউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা শফিকউদ্দিন, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, শান্তি, নিরাপত্তা, ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিটি মানুষের জন্মগত অধিকার। মিয়ানমার সরকার মুসলমানদের সেই অধিকার ক্ষুন্ন করে তাদের খুন করছে। অবিলম্বে মুসলমানদের উপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাসমূহের প্রতি মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, এদেশের মুসলমানরা বার্মার নিপীড়িত মুসলমানদের পক্ষে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের সুরক্ষায় সরকারকে বর্ডার খুলে দিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে হবে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল নিয়ে রওনা হলে পল্টন মোড়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে গণমিছিল সমাপ্ত হয়। পরে মহানগর সভাপতি আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে হেফাজতের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার দূতাবাসে গিয়ে রাষ্ট্রদূতের হাতে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।  
জমিয়ত ঢাকা মহানগরী
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেছেন, মিয়ানমার সরকার আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের দিকেও তাদের কামান তাক করে রেখেছে। এতে বুঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য মুসলিম নিধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং তাদের উদ্দেশ্য আরো কিছু। তাই প্রয়োজন মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি তারা যাতে স্বাধীন আরাকানে পুনরায় ফিরে যেতে পারে সে জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সাময়িক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয়া।  
গতকাল বাদ আসর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর এর উদ্যোগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অব্যাহত নির্যাতন এর প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা জহিরুল হক ভূইয়া, মাওলানা বাহা উদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা তোফায়েল গাজালি প্রমূখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আফেন্দী বলেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া সব দেশের সব মানুষের দায়িত্ব।
কর্মসূচি : নেজামে ইসলাম পার্টির উদ্যোগে আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি
মাসব্যাপী সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি উদ্বোধন
মাসব্যাপী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধনী সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি মাও. মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মাও. জহিরুল হক ভূইয়া, মাও. আবদুর রব ইউসুফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. বাহা উদ্দীন জাকারিয়া, মহানগর সেক্রেটারি মাও. মতিউর রহমান গাজ্জালী। দলের শতাধিক নেতা দেশের ২১টি সাংগঠনিক জেলায় নতুন সদস্য সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবেন।



 

Show all comments
  • Zubair ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৫:১২ পিএম says : 0
    রোহিঙ্গাদের পূর্ণবাসন নিশ্চিত করতে ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় -সরকারকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া উছিত।
    Total Reply(0) Reply
  • ফয়সাল ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৫:১৮ পিএম says : 0
    শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়ে এখন অং সান সূচি মিয়ানমারে গণহত্যা চালাচ্ছেন এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ