মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীন থেকে ছয়টি বিমান কিনে বিশাল লোকসানের মুখে পড়েছে নেপালের বিমান খাত। ছয়টি উড়োজাহাজই এখন অকেজো এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
নেপালের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সেবা পৌঁছে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এই বিমানগুলো কেনা হলেও, তার মধ্যে একটি বিমান নেপালগঞ্জে বিদ্ধস্ত হয়েছে। আর বাকি পাঁচটির মধ্যে দুইটি ১৭ আসনের ওহাই-১২-ই এবং তিনটি ৫৬ আসনের এম-এ-৬০ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে নেপালের ভুবনেশ্বর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
এই পাঁচটি বিমানের জন্য ২০১২ সালের নভেম্বরে নেপালের সরকারি বিমান সংস্থা নেপাল এয়ারলাইনস করপোরেশন (এনএসি), চীনের অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন অব চায়না নামে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি সই করেছিল। সে সময় এগুলো কেনার জন্য চীন নেপালকে ৪০৮ মিলিয়ন চাইনিজ ইউয়ান বা ৬.৭ বিলিয়ন নেপালি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা) ঋণ প্রদান করে।
ঋণের মোট অংকের প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ইউয়ান বা ২.৯ বিলিয়ন নেপালি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২১৬ কোটি টাকা) খরচ হয় শুধুমাত্র একটি ১৭ আসনের ওহাই-১২-ই এবং একটি ৫৬ আসনের এম-এ-৬০ বিমান কিনতেই। বাকি বিমানগুলো কিনতে চীনের এক্সিম ব্যাংক নেপালকে লোন প্রদান করে প্রায় ২২৮ মিলিয়ন ইউয়ান বা ৩.৭২ বিলিয়ন নেপালি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৩২ কোটি টাকা)।
তবে বিমানগুলো নেপালে পৌঁছানোর কিছুদিনের মধ্যেই এনএসি কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে এই বিমানগুলো কেনার থেকেও বেশি ব্যয়বহুল এগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা। ফলে ২০২০ সালের জুলাইয়ে এই বিমানগুলোর সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় নেপাল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে এগুলো অবহেলিতভাবেই পড়ে আছে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
যদিও নেপাল সরকার এই বিমানগুলোর উচ্চ রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বহন করতে না পেরে এর কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, তবে এই বিমানগুলো কিনতে তারা যে ঋণ নিয়েছিল তা তাদেরকে নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে।
নেপালের অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডেবট ম্যানেজমেন্ট অফিসের মুখপাত্র হিরা নিউপানে জানিয়েছেন, ‘১.৫ শতাংশ হারে বার্ষিক সুদ এবং সার্ভিস চার্জ ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ০.৪ শতাংশ হারে ঋণ শোধ করার কথা। এরমধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংকের থেকে যে ঋণ নেওয়া হয়েছিল তার দুইটি কিস্তি সুদসহ পরিশোধ করা হয়েছে।’
২০১২ সালে করা ওই বাণিজ্যিক চুক্তি অনুসারে চীন নেপালকে একটি ‘গ্রেস পিরিওড’ প্রদান করেছিল যার অধীনে সাত বছর নেপালকে সুদসহ ঋণের কিস্তি প্রদান মওকুফ করা হয়। চুক্তিতে আরও বলা হয়েছিল, নেপালকে এই সমুদয় ঋণ ২০ বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০৩৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। নেপাল ইতোমধ্যেই ওই সাত বছরের ‘গ্রেস পিরিওড’ পার করে ফেলেছে।
নেপার ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ঋণের প্রথম কিস্তি হিসেবে চীনকে ১০.৯ মিলিয়ন ইউয়ান বা ২০৫.৬৭ মিলিয়ন নেপালি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা) প্রদান করেছে। আর ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি প্রদান করা হয়েছে চলতি বছরের মার্চে। পাঁচটি প্লেন কেনায় এখন পর্যন্ত নেপালের প্রায় ২ বিলিয়ন নেপালি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৪৯ কোটি টাকা) ক্ষতি হয়েছে।
যখন এই পাঁচটি প্লেন সচল ছিল, তখন এগুলোর জন্য নেপালকে প্রায় ১.৯ বিলিয়ন নেপালি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১১৮ কোটি টাকা) লোকসান গুনতে হয়েছে, যা এদের মূল্যের প্রায় অর্ধেক। যদিও বিমানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় এর রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমেছে, তবুও নেপালকে বিমানগুলোর বিভিন্ন যন্ত্রাংশের জন্য বীমার টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।