নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অনেকটা অনুমিতই ছিল। তবে মাঝের একটি ঘটনায় জমেছিল সংশয়ের কালো মেঘ। তবে সেটি আপাতত সরে গিয়ে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আকাশে উঠেছে নতুন সূর্য। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসন্ন এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ডে পাকিস্তানকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক ঘোষণা করেছে বিসিবি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগের রাতে দেশে ফেরা সাকিবের সঙ্গে গতকাল দীর্ঘক্ষণ বৈঠক শেষে বিষয়টি জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস।
একই সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে এশিয়া কাপের দলও। তাতে চমক হিসেবে প্রায় তিন বছর পর জাতীয় দলে ফিরলেন সাব্বির রহমান। সৌম্য সরকারের ফেরার গুঞ্জন উঠলেও ১৭ সদস্যের দলে ঠাঁই মেলেনি এই ওপেনারের। অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকেও ফিরিয়ে আনা হয়েছে জাতীয় দলে। গত বছর অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ খেলেন সাইফউদ্দিন। এরপর চোটের কারণে আর খেলা হয়নি। হতাশ পারফরম্যান্সের পরও টিকে গেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দল ঘোষণার চাইতে এদিন সাকিবকে ঘিরেই ছিল সকল দৃষ্টি।
আগের দিন গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরা সাকিব গতকাল বিকেলে যান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের গুলশানের বাসভবনে। সেখানে ছিলেন বিসিবির অন্য কর্মকর্তা এবং নির্বাচক কমিটির সদস্যরাও। সাকিবের সঙ্গে সভার পরই জালাল ইউনুস জানান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত সাকিবের হাতেই টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব তুলে দিচ্ছেন তারা। জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘সামনে আমাদের এশিয়া কাপ আছে। এরপর নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ, পরে বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়াতে। আমরা বোর্ডে আগেই একটি সভা করেছিলাম, অধিনায়কত্ব নিয়ে সেই সভার একটি সিদ্ধান্ত ছিল। আজকে (গতকাল) আবার আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। বোর্ড সভাপতি ছিলেন, নির্বাচকরা ছিলেন। আমরা এই কয়েকটি সিরিজের জন্য সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করছি।’
এর আগে সাকিবকে আগামী দুই বছরের জন্যই টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল বিসিবি। কিন্তু বেটউইনার নিউজ নামে একটি ওয়েবসাইটের সঙ্গে বিতর্কিত চুক্তির কারণে সাকিবের এশিয়া কাপের দলে থাকাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। বিসিবির কঠোর অবস্থানের পর তিনি সরে আসেন এই চুক্তি থেকে এবং জানান থাকবেন দেশের ক্রিকেটের সঙ্গেই। তবুও নিয়মভঙ্গের কোন সাজা পেলেন না সাকিব, উল্টো পেলেন অধিনায়কত্ব। এ ব্যপারে সাকিবের কাছ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি এদিন। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের জালাল ইউনুস বলেন, সাকিব তার ভুল স্বীকার করেছেন এবং ভবিষ্যতে আর এ রকম বিতর্কে জড়াবেন না বলে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, ‘এটা নিয়ে অনেক আলাপ আলোচনা হয়েছে। সাকিব তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। তার আসলে এটার সঙ্গে যুক্ত হওয়া ঠিক হয়নি। নিশ্চিতভাবে সাকিব আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রিকেটার। বোর্ডের আগের মিটিংয়ে সাকিবকে অধিনায়ক করার চিন্তা ভাবনা ছিল। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা সেই পরিকল্পনায় স্থির থাকব।’ সাকিবকে দলের সেরা খেলোয়াড় বলে জালাল ইউনুস যোগ করেন, ‘সে আমাদের সেরা খেলোয়াড়। সে বলেছে, সামনে এমন কোনো ভুল হবে না। সে আশ্বাস দিয়েছে আমাদের বোর্ড সভাপতির সামনে, আমরা সেটা মেনে নিয়েছি।’
বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্ব আগে থেকেই ছিল সাকিবের। এবার টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বে ফেরার পর ফিরে এলো ২০১৯ সালের বাস্তবতা। সেবার জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়ার আগে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মাহমুদউল্লাহ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের চরম ব্যর্থতার পর নেতৃত্বে রেখে দেওয়া হয় তাকেই। তবে গত কিছুদিনে তার নিজের ফর্মহীনতা ও দলের বাজে পারফরম্যান্সে সমালোচনা হতে থাকে তীব্র। সম্প্রতি জিম্বাবুয়ে সফরে মাহমুদউল্লাহকে দলের বাইরে রেখে অধিনায়ক করা হয় নুরুল হাসান সোহানকে। বিসিবি তখন বলেছিল, এই সফরে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। জিম্বাবুয়ে সফরে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির পর আঙুলে চোট পেয়ে ছিটকে যান সোহান। ওয়ানডে দলে থাকা মাহমুদউল্লাহকে তখন টি-টোয়েন্টি দলে আনা হয় শেষ ম্যাচের জন্য। তবে সেই ম্যাচের নেতৃত্ব পান মোসাদ্দেক হোসেন। মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ তখনই অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত অনুমিত পথেই এগোল সবকিছু।
সাকিবের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টিতে ২১টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে জয় ৭টিতে, পরাজয় ১৪টি। এবার এই মাসের শেষ দিকে এশিয়া কাপ দিয়ে শুরু হবে সাকিবের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্বের নতুন অধ্যায়। পরে অক্টোবরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।