পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "পৃথিবীতে যতদিন সূর্য উদিত হয়েছে আর হবে এ সবদিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত দিন হচ্ছে জুমার দিন। কারণ হযরত আদম (আ.) কে এ দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানোও হয়েছে। জুমার দিনের গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে আজ জুমার বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন।
ঢাকার শেওড়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি সিফাতুল্লাহ রহমানি আজ জুমার বয়ানে বলেন, জুমার দিন অত্যন্ত বরকতময় একটি দিন। এ দিনকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাইয়েদুল আইয়াম তথা সপ্তাহের শ্রেষ্ঠদিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। সপ্তাহের সবগুলো দিনকে আল্লাহপাক সৃষ্টি করলেও জুমার দিনকে তিনি নেতৃত্বদানকারী দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "পৃথিবীতে যতদিন সূর্য উদিত হয়েছে আর হবে এ সবদিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত দিন হচ্ছে জুমার দিন। কারণ হযরত আদম (আ.) কে এ দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানোও হয়েছে। যেদিন পৃথিবীর সবকিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া হবে অর্থাৎ কিয়ামত হবে সে দিনটিও হবে জুমার দিন।" (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৮৫৪)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিম জাতির জন্য এ জুমার দিনটিকে আল্লাহপাক সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবে নির্বাচন করেছেন। যে ব্যক্তি এ দিনে মসজিদে আসবে, সে যেন গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে আসে। সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে এবং অবশ্যই তোমরা মিসওয়াক করবে।" (ইবনু মাজাহ, হাদিস নং ১০৯৮) হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "নিশ্চয় জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সে সময়ে মানুষ যদি রব্বে কারীমের কাছে কোনো কল্যাণ চাইতে পারে, তাহলে তিনি তাকে সেটা অবশ্যই প্রদান করবেন। খালি হাতে ফেরাবেন না।" (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৮৫২)
জুমার দিনে বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়া সম্পর্কে দুটি মত পাওয়া যায়। প্রথমত মুসলিম শরিফের বর্ণনায় এসেছে আবু মুসা আশআরি (রা.) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ঐ সময়টি হলো, জুমার দিন খতিব সাহেব যখন খুতবা দেওয়ার জন্য মিমবারে বসেন তখন থেকে নামাজ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৮৫৩)
দ্বিতীয়ত হযরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে, জুমার দিন আসরের নামাজের পর থেকে সূর্য ডোবা পর্যন্ত তোমরা দোয়ার সময় বেছে নাও। (নাসাঈ শরিফ, হাদিস নং ১৩৮৯) পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- " হে ঈমানদারগণ! জুমার নামাজ আদায়ের জন্য যখনই তোমাদেরকে (আজানের মাধ্যমে) ডাকা হয়, তখনই আল্লাহর স্মরণপানে দ্রæতবেগে চগুটে যাও এবং ব্যবসা বাণিজ্য বর্জন করো। এটা তোমাদের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর হবে যদি তোমরা বোঝ।" (সুরাতুল জুমা, ০৯)
আল্লাহ আমাদের সকলকে জুমার দিনের গুরুত্ব অনুধাবন করে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাযসহ জুমার নামায আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমীন। মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, ব্যাপক ভাবে আল্লাহর হুকুম অমান্য ও পাপাচারে লিপ্ত হওয়াই অনাবৃষ্টি অতিবৃষ্টির অন্যতম কারণ। অনুরূপ জুলুম অত্যাচার , অনাচার, অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যবহার, যাকাত অনাদায়, মাতা পিতার নাফারমানি, ব্যাপক ভাবে গান বাজনা বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার, মসজিদে শোরগোল, মদ্য পান ও মানুষের অসৎ কৃতকর্মের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহামারি, বালামুসিবত ও বিপদাপদ তাসবীহের দানার ন্যায় একটার পর একটা আসতেই থাকে। এটা বান্দার হাতের কামাই। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, জলে স্থলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে । আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান যাতে তারা আল্লাহর পথে ফিরে আসে । (নাফারমানি ছেড়ে দেয়)। (সূরা রুম, আয়াত নং ৪১)। হযরত রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন অন্যের সম্পদকে ব্যক্তিগত মাল রুপে ব্যবহার করা, আমানতের খিয়ানত করা, যাকাতকে জরিমানা মনে করা, মাতা পিতার নাফারমানি করা,মসজিদে শোরগোল করা, জাতির নিকৃষ্ট ব্যক্তির নেতা হওয়া, গান বাজনা বাদ্য যন্ত্রের ব্যাপকতা ও মদ পান অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে তখন রক্তিম বর্নের ঝড়, ভূমিকম্প, ভূমিধস , অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি পাথর বৃষ্টির মত বিপদ একের পর এক আসতেই থাকে। (তিরমিযি শরীফ , মেশকাত, হাদীস নং ৫২১১)। খতিব বলেন, আসুন আমরা সকলে আল্লাহর পথে ফিরে যাই । অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনের অসারতা থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই । খাটি মনে পেছনের গুনাহের তওবা করি। আল্লাহ তওবা কারীকে ভালোবাসেন।
দিনাজপুর গোর এ শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম আজকের জুমার বয়ানে বলেন, চারটি আমল না করার কারণে জাহান্নামীরা জাহান্নামের চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবেন। প্রথমত নামাজ না পড়া, দ্বিতীয়ত অভাবগ্রস্ত ফকির মিসকিনকে আহার্য না দেয়া, তৃতীয়ত ভ্রান্ত লোকেরা ইসলাম নিয়ে যে ভ্রান্ত সমালোচনা করে তাদের মত করে সমালোচনা করা। চতুর্থত কেয়ামত অস্বীকার। কোরআনে কারীমের সূরা মুদ্দাসসীরের বর্ণনামতে, জাহান্নামী এবং জান্নাতীদের সংলাপে জাহান্নামীদেরকে জান্নাতীরা জিজ্ঞেস করবে, আজকে তোমাদের এই করুণ পরিণতির কারণ কি তা বলবে? তারা বলবে আমরা নামাজ পড়তাম না। অভাবগ্রস্তদেরকে আহার্য দিতাম না। সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম। এবং প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করতাম। আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত। অতএব সুপারিশ কারীদের সুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের কি হলো যে তারা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? যেন তারা ইতস্তত: বিক্ষিপ্ত গর্ধব (আল কোরআন)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।