নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যর্থতার গল্প নতুন নয়। তবে সেই ক্ষতে নুনের ছিটার মতন হয়ে এসেছে সর্বশেষ টি-২০ সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হারের কলঙ্ক। বোর্ডের নীতি নির্ধারকদের সুপরিকল্পনার অভাব থেকে শুরু করে মাঠে ক্রিকেটারদের বাজে ক্রিকেটীয় নিদর্শন, এসবের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে দেশের ক্রিকেটের। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বলতে যা বুঝায়, জিম্বাবুয়ে সফরে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অবস্থা এখন ঠিক তাই। সর্বশেষ দুই বছর ধরে এমন দূরাবস্থা থেকে ক্রিকেটকে সব সময় টেনে তুলুছেন একজন ত্রানকর্তা। যখনই বাকি দুই সংস্করণে দুমড়ে মুচড়ে দল আইসিইউতে যায়, তখনই দলের অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্ব বর্তায় ওডিআই অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাঁধে। পূর্নাঙ্গভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ৭ সিরিজের ৬টিতেই সেই করণীয় অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন তিনি। তাই হরেক ঝামেলার পরও আজ থেকে হারারেতে ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুরুর আগে বলা যায়, বাংলাদেশের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার মিশন।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৭৮ বার মুখোমুখি হয়েছে জিম্বাবুয়ের। টাইগারদের ৫০ জয়ের বিপরীতে উইলিয়ামস-রাজাদের জয় ২৮টি। অন্যদিকে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে ১৫ বার বাংলাদেশকে হারাতে পেরেছে, তবে বাংলাদেশ ১৬ বার জিতেছে এই প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে। সর্বশেষ ৫ মোকাবেলায় প্রতিবারই জয়ী দলটির নামও বাংলাদেশ। কাগজ কলমের হিসেব কষলে বাংলাদেশ ওয়ানডে দল অনেক এগিয়ে প্রিয় প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের তুলনায়। কিন্তু ক্রিকেটতো ব্যাট বলের লড়াই, মাঠে যেকোন দিন যে কেউই জিততে পারে। দুদিন আগেই স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ জয়টা, প্রশ্নাতীত ভাবেই তাদেরকে অনেক চাঙ্গা ও আত্মবিশ্বাসী রাখবে আজকের ৫০ ওভারের ম্যাচে। যার কিছু নমুনা পাওয়া যায় সর্বশেষ টি-২০র নায়ক রায়ান বার্লের কথাতেই। সেই ম্যাচের ঘন্টা খানেক বাদে হারারে স্পোর্টিং ক্লাব সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশী গনমাধ্যমের কয়েকজনের সামনে খোশমেজাজে থাকা বার্ল বলে বসেন, ‘সাকিব কোথায়? ও এই সফরে এলো না যে? নাসুমের ওভারে ৩৪ নিয়েছি। কে জানে, সে ও হয়তো সামনেরবার সাকিবের মত জিম্বাবুয়ে সিরিজে আসবে না!’
কথাটির মাহাত্ন্য বোঝাতে একটি ভুলে যাওয়া স্মৃতি মনে করিয়ে দিই। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নাসুমের এক ওভারে ৩৪ নেওয়ার আগে, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মিরপুরে সাকিবের এক ওভারেও ৩০ রান নিয়েছিলেন এই বার্ল! অনেক সময় ছোটখাট কিছু ঘটনার মারপ্যাচে বদলে যায় অনেক হিসেব। এই মুহূর্তে জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটারও সেই ধরনের এক ঘটনার হাওয়াতেই দুলছেন। কেবল বার্লই নন। বাংলাদেশের বিপক্ষে বরাবরই ব্যাটিং ও বোলিংয়ে আলো ছড়ান সিকান্দার রাজা ও শেন উইলিয়ামস। রাজা ১৯ ম্যাচ খেলে ৫৬৭ রান ও ১০ উইকেট নিয়েছেন টাইগারদের বিপক্ষে। উইলিয়ামস ৯১১ রান করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে, যা কোন নির্দিষ্ট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তার সর্বোচ্চ। সঙ্গে পেয়েছেন ৭ উইকেট। তাছাড়া তরুণ ওয়েসলে মাধেভেরের ক্যারিয়ারে ৩৮২ রানের মধ্যে ১৯৭ এসেছে টাইগারদের বিপক্ষে, আর ৭ উইকেটের ৫টিও এই প্রতিপক্ষের সাথে। ৯৯ সালের বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার ল্যান্স ক্লুজনার এই বছরের মার্চ থেকে জিম্বাবুয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বদলে যাচ্ছে দলটির চেহরা।
অন্যদিকে তামিমের বাংলাদেশ বলে কয়ে এখন যে কোন দলকে ওয়ানডেতে পরাজিত করার সামর্থ্য রাখে। নিকট অতীতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বাজে পারফরম্যান্স সব সময় ঢেকে গিয়েছে তার নেতৃত্বে দল ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ভাল করার মাধ্যমেই। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খোয়ালেও ওয়ানডেতে ঠিকই জয় পায় টাইগাররা। চলতি বছরও সেই ধারা বজায় রেখে চলেছে তামিমবাহীনি। আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার পর এই জিম্বাবুয়ে সফরের আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই তিন সিরিজে যখনই টি-২০ বা টেস্টে ম্যাচের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাতে বেশ বাজে অভিজ্ঞতাই হয়েছে টাইগারদের। তামিম তো আছেনই, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সেই ধাক্কা কাটাতে বাড়তি রসদ হিসেবে ওয়ানডে দলে যোগ দিয়েছেন মুশফিক, মিরাজ ও তাইজুলরা। অনেকটা নাটকীয়ভাবে টি-টোয়েন্টি খেলা রিয়াদও আছেন ৫০ ওভারের সংস্করণে। সঙ্গে তামিমের নেতৃত্বতো আছেই জাদুর ছড়ির মত। যদিও ওয়ানডে অধিনাক সতর্ক। গতকাল সিরিজ-পূর্ব সংবাদসম্মেলনে তিনি বলেছেন, নিজেদের কন্ডিশনে জিম্বাবুয়ে সব সময়ই বিপজ্জনক দল, ‘দুই দলের শক্তি বিচার করলে আমরাই এগিয়ে। তবে ক্রিকেটে নির্দিষ্ট দিনে যে ভালো করবে, জিতবে সেই দলই। টি-টোয়েন্টিতে তো জিম্বাবুয়ে আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে বলেই সিরিজ জিতেছে। এখানেও একই কথা। যদি ওদের হারাতে চাই, নিজেদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। নিজেদের কন্ডিশনে জিম্বাবুয়ে বিপজ্জনক দল।’
এই ভীতি কাটিয়ে আত্মবিশ্বাস ফেরানোর চ্যালেঞ্জ নিতে কতটুকু প্রস্তুত বাংলাদেশ, তা জানা যাবে আজ দুপুর সোয়া একটা থেকেই!
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
র্যাঙ্কিং : বাংলাদেশ ৭, জিম্বাবুয়ে ১৫
মুখোমুখি বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে
৭৮ ৫০ ২৮
জিম্বাবুয়েতে ৩১ ১৬ ১৫
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।