নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে যখন একের পর এক ডিসিপ্লিনে লাল-সবুজের ক্রীড়াবিদরা ব্যর্থ তখন অ্যাথলেটিক্সে পুরুষদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে লন্ডন প্রবাসী অ্যাথলেট ইমরানুর রহমানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বপ্নপূরণ হয়নি। ভালো টাইমিংয়ে দৌঁড় শেষ করলেও হিটের গন্ডি পেরুতে পারলেন না ইমরানুর। গতকাল বার্মিংহামের আলেকজান্ডার স্টেডিয়মে শুরু হয়েছে গেমসের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের লড়াই। এদিন অ্যাথলেটিক্সের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট পুরুষ ও মহিলাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের হিট অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ডের সময় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে সাত নং হিটের ৮ নং লেনে দৌঁড় শুরু করলেও কাঙ্খিত সাফল্য পাননি ইমরানুর। নিজের হিটে ১০.৪৬ সেকেন্ড সময়ে দৌঁড় শেষ করে তৃতীয় হয়ে ছিটকে পড়েন বাংলাদেশের দ্রæততম মানব ইমরানুর রহমান। অন্যদিকে মহিলাদের এই ইভেন্টে বাংলাদেশের দ্রæততম মানবী সুমাইয়া দেওয়ান নিজের হিটে (তিন নম্বর) সাতজনের মধ্যে সপ্তম হন। তিনি সময় নেন ১২.৪২ সেকেন্ড।
গত জানুয়ারিতে ঢাকায় সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মো. ইসমাইলকে হারিয়ে জাতীয় রেকর্ড গড়ে প্রথমবারের মতো দ্রæততম মানবের খেতাব জেতেন ইমরানুর। তখন হ্যান্ড টাইমিংয়ে ১০.৩০ ও ইলেকট্রনিকে ১০.৫০ সেকেন্ড সময়ে দৌড় শেষ করেন তিনি। ইলেকট্রনিকের হিসেবে এটিই বাংলাদেশের সেরা টাইমিং। এই টাইমিং নিয়ে গত ২২ বছর আগে গড়া প্রয়াত মাহবুবুল আলমের রেকর্ড ভাঙ্গেন ২৮ বছর বয়সি প্রবাসী এই অ্যাথলেট। ১৯৯৯ সালে ১০.৫৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেরা হয়েছিলেন মাহবুব। বার্মিংহামে খেলার আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগনে শেষ হওয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলে ইমরানুর। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের হিটে ১০.৪৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে তৃতীয় হয়ে দ্বিতীয় পর্বে উঠলেও শেষ পর্যন্ত চোটের কারণে আর দৌঁড়ানো হয়নি তার। এছাড়া বিশ^ ইনডোর অ্যাথলেটিকসেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ইমরানুরের। তাই কাল আলেকজান্ডার স্টেডিয়ামে উপস্থিত ১১জন বাংলাদেশি সাংবাদিকসহ গোটা জাতিরই চোখ ছিল ইমরানুরের উপর। প্রবাসী এই অ্যাথলেট হিট টপকে মূল প্রতিযোগিতায় দৌঁড়ানোর সুযোগ পাবেন এমন আশাই ছিল সবার। কিন্তু ঘানার বেনজামিন ১০.১৯ সেকেন্ড এবং ওয়েলসের জেরেমিয়া ১০.৩৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেমিফাইনালে উঠলে তাদের পরের অবস্থানে থাকা ইমরানুর ছিটকে পড়েন।
কমনওয়েলথ গেমসে তার চেষ্টা ছিল নিজের সেরাটা দেয়া। কিন্তু সেখানে সফল হননি তিনি। কারণ তার ইমরানুরের সেরা টাইমিং ১০.৩২। খেলা শেষে ইমরানুর বলেন, ‘খুব খারাপ নয়, খুব ভালোও নয়। ১০.৪৬ ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে অবশ্যই আরও ভালো করতে হবে।’ দৌঁড়ের আগে শেষ লেনে জায়গা পেয়ে দ্বিধায় পড়ে যান ইমরানুর, ‘কঠিন হয়ে পড়ে যখন আপনি লেনের শেষ দিকে থাকবেন। বুঝতে পারছিলাম না আমার সাথে কি হতে যাচ্ছে?’ বাংলাদেশে সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ইমরানুরের টাইমিং ছিল ১০.৫০। তার চেয়ে ভালো হয়েছে বার্মিংহামে। সেটাই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি। তার কথায়, ‘বাংলাদেশের বিবেচনায় এটি জাতীয় রেকর্ড। এটাই একমাত্র ইতিবাচক বিষয়।’ কমনওয়েলথ গেমসে ব্যর্থ হলেও তুরস্কের কোনিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বড় কিছু আশা করছেন ইমরানুর। তিনি বলেন, ‘আমাকে ফোকাসড থাকতে হবে পরবর্তী প্রতিযোগিতার জন্য। মনোযোগ দিতে হবে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের দিকে।’
এদিকে কমনওয়েলথ গেমসের মতো বড় আসরে এই প্রথমবার অংশ নিয়েছেন সুমাইয়া দেওয়ান। যদিও এর আগে কেনিয়ায় বিশ^ অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছিলেন সুমাইয়া। দেশে জানুয়ারিতে সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সাবেক দ্রæততম মানবী শিরিন আক্তারকে পেছনে ফেলে সেরা হন সুমাইয়া। বিকেএসপির ১৭ বছর বয়সি এই অ্যাথলেটের দেশে টাইমিং ১২.২০ (হ্যান্ডটাইমিং) এবং ১২.৩০ (ইলেকট্রনিক)। কাল বার্মিংহামে ১২.৪২ সেকেন্ডে দৌঁড় শেষ করে সবার শেষে জায়গা পেলও দারুণ খুশি সুমাইয়া। কারণ এখানে বিশ^মানের অ্যাথলেটদের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি। ১১.০২ সেকেন্ড সময় নিয়ে হিটে প্রথম হয়েছেন ইংল্যান্ডের ড্যারেল নেইটা। তার সঙ্গে কোয়ালিফাই করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্রি মাস্টার্স ও অ্যান্টিগার জোয়েলা। নিজ ইভেন্ট শেষে সুমাইয়া বলেন, ‘আসলে এখানে সবাই আমার চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ, বয়সেও বড়। আমি একটু নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। তারপরও যেটা করেছি, তাতে আমি সন্তুষ্ট। আশাকরি উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে পারলে অনেক ভালো করতে পারবো।’
আগামীকাল পুরুষদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টের হিটে আবারও ট্র্যাকে নামবেন ইমরানুর রহমান। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে আলেকজান্ডার স্টেডিয়ামে তার সঙ্গী হবেন বাংলাদেশের আরেক অ্যাথলেট রাকিবুল হাসান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।