Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনশুমারি তথ্য নিয়ে বিতর্ক

বাদ পড়ার হার ৫ শতাংশের নিচে হলে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য : প্রফেসর নুরুন্নবী চৌধুরী জনসংখ্যার আকার নিয়ে সন্দেহ ও দ্বন্দ্ব থাকা উচিত নয় : প্রফেসর মো. মঈনুল ইসলাম শুমারি ভুল হলে দে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০২২, ১২:০৫ এএম

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর দেশের মানুষের সংখ্যা তথ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে শুমারি করা ঠিক হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের এই লোকসংখ্যা গণনার তথ্য নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে। নেটিজেনরা বলছেন, বিশ্ববাসীকে সরকার মূলত মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্যই কৌশল করে জনসংখ্যা কম দেখানো হচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এই অভিযোগ তুলেছেন সরকারের বিরুদ্ধে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গণনায় শতকরা ৫ জন বাদ পড়তে পারেন। তবে যারা বাদ পড়েছেন তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেছেন, দেশের জনসংখ্যার শুমারি বর্ষাকালে করা ঠিক হয়নি। জনসংখ্যার আকার নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকা উচিত নয়। জনশুমারি শুরু হওয়ার পর থেকে গণনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় তা কাক্সিক্ষত নয়। সবাইকে গণনার আওতায় আনতে হয়। গণনাকারীদের তথ্যসংগ্রহ করতে হবে। মনিটরিং করতে হবে। কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। সঠিক জনসংখ্যা না এলে সে ক্ষেত্রে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ যথাযথ হবে না। বিতর্ক থাকলে অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অবশ্য জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন বলেছেন, অনেকের বাসায় গণনাকর্মীরা যাননি বলে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেগুলো আমাদের সিস্টেমে যাচাইয়ে সত্যতা পাওয়া যায়নি। এরপরও এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

২০২১ সালের জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০ প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১ হাজার। এ হিসাবে গত ২ বছরে আরও ৪০ লাখ জনসংখ্যা জনমিতিতে যুক্ত হওয়ার কথা। দুই হিসাব মিলে দেশে জনসংখ্যা হওয়ার কথা ১৭ কোটি ৩১ লাখ ১ হাজার জন। কি কারণে জনসংখ্যা কমে গেল এ নিয়ে সর্বমহলে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে এবারের জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম নিয়ে নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় খানা পর্যায়ে গণনাকর্মীরা যাননি। কোনো কোনো বাসার দরজায় শুধু স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন গণনাকর্মীরা। বাদ পড়া অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনশুমারি বিষয়ে নানা মন্তব্য ছুড়ছেন। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও অনেকে নিজেদের বাদ পড়ার তথ্য জানিয়েছেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। জনশুমারি ও গৃহগণনার ভুলত্রুটি খুঁজে বের করতে থার্ড পার্টির (তৃতীয় পক্ষ) মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। পোস্ট ইনুমারেশন চেক (পিইসি) নামে এই পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (বিআইডিএস)। আগামী আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে মাঠপর্যায়ে (প্রায় ৫৪০টি নমুনা এলাকা) ফের জরিপ করবে সংস্থাটি। এর মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে কভারেজ ইরোর (বাদ পড়া কত) এবং কনটেইন ইরোর (প্রশ্নপত্রের তথ্যের ভুল)। এতে দেশের জনসংখ্যা আরও অন্তত ৪ শতাংশ বাড়তে পারে। আগের জনশুমারিগুলোতে একইভাবে প্রাথমিক প্রতিবেদনের চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে গড়ে একই হারে জনসংখ্যা বেড়েছিল। এরপরই সমন্বয় করা হবে দেশের মোট জনসংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য। আর তাই চূড়ান্ত হিসাবে দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটির ওপরে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাশাপাশি সঠিক জনসংখ্যার হিসাব না এলে সে ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ যথাযথ হবে না। জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নসহ যে কোনো নীতিকৌশল নির্ধারণে জনসংখ্যার প্রকৃত তথ্য অত্যন্ত জরুরি। এর ভিত্তিতে দেশের মোট খাদ্যসহ সব পণ্যের চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া হয়। জনসংখ্যার সঠিক তথ্যের অভাবে এ ধরনের যে কোনো পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। জনসংখ্যার হেরফেরের কারণে মাথাপিছু আয় বেড়ে যাবে। এ কারণে বিদেশি সহায়তা, ঋণ, অনুদান ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সুবিধার ক্ষেত্রে বেকাদায় পড়তে হবে বলে মনে করে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। বিদেশি ঋণ এবং অনুদান নেওয়ার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বশীল বিভাগ ইআরডি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইআরডির শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, জনসংখ্যা কম দেখানোর কারণে মাথাপিছু আয় আরও বাড়বে। এতে নমনীয় সুদে ঋণ পাওয়া কঠিন হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে কোনো শুমারিতে ৫ শতাংশের মধ্যে ভুলত্রুটি বা গণনায় বাদ পড়া গ্রহণযোগ্য। সেই সঙ্গে বিদেশে যেসব প্রবাসী আছেন (প্রায় ৮০ লাখ), তাদের তথ্য নেয়া হলেও সেটি প্রাথমিক হিসাবে যোগ হয়নি। সব মিলিয়ে জনসংখ্যা আরও বাড়বে। তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যে কমছে, এটি বাস্তব তথ্য বলে মনে করছেন তারা।

যদিও অনেকের মতে, মাঠ পর্যায়ে গণনা কার্যক্রমে গাফিলতির কারণে অনেকেই গণনা থেকে বাদ পড়েছেন। মূলত এ কারণেই এবারের প্রতিবেদনে এত বড় তথ্য বিভ্রাট হয়েছে। তাদের মতে, জনশুমারি সব সময় শুষ্ক মৌসুমে পরিচালিত হয়। এবারই প্রথম গণনা কার্যক্রম বর্ষায় হলো। বর্ষার সঙ্গে বন্যা মিলে গণনা কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। তবে এ বছর সার্বক্ষণিক হটলাইন চালু ছিল। কেউ বাদ পড়লে তা জানানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু নাগরিকদের অসচেতনতার কারণে যা সম্ভব হয়নি।

রাজধানীর উত্তরা, বনানী, মিরপুর, মতিঝিল, পল্টন, মালিবাগ, খিলগাঁও এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, কোনো কোনো ভবনের কিছু ফ্ল্যাটে গণনাকারী এসেছিলেন, অনেক ফ্ল্যাটেই যায়নি। আবার অনেক ভবন থেকে কোনো তথ্যই সংগ্রহ করা হয়নি। খিলগাঁওয়ের রফিক মুহাম্মদ জানান, তাদেরসহ একই ভবনের অনেক ফ্ল্যাটের কোনো তথ্য নিতে কেউ আসেনি। পরে জানতে পেরেছেন বাসার দারোয়ানের কাছ থেকেই তথ্য নিয়েছে। রাজধানীর পান্থপথ সিগন্যাল-সংলগ্ন একটি বহুতল ভবনে কোনো গণনাকারী যাননি। ভবনে ৮৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। মিরপুরের বাসিন্দা শারমিন জানান, তাদের বাসায় কেউ না এলেও দরজার বাইরে স্টিকার লাগানো হয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা বাপ্পাদিত্য চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, বাসায় গিয়ে কেউ তথ্য নেয়নি, অথচ তাদের বাসার গেটে স্টিকার লাগানো হয়েছে। সাংবাদিক প্রবাস আমিন জানিয়েছেন, তাদের ভবনেও কোনো গণনাকারী আসেননি। বাড্ডার বাসিন্দা মোস্তফা জানান, তার বাসায় জনশুমারির কোনো লোক আসেনি। উত্তরার বাসিন্দা কাজি মাহমুদুর রহমান জানান, তাদের বাসার আশপাশের কয়েকটি ভবনে কোনো গণনাকারী আসেনি।

দুই বছর আগের বিবিএসের নিজস্ব এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১ হাজার। গত বছরের জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবছরের তথ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস তৈরি করে থাকে বিবিএস। দুই বছর আগের তথ্যের চেয়ে গত বুধবার প্রকাশিত জনশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ কম। আবার বিবিএসের জনমিতির হিসাবে দেশে প্রতি ১০ বছরে মানুষ বাড়ে দুই কোটির মতো। অর্থাৎ প্রতিবছর মানুষ বাড়ে ২০ লাখ। এ হিসাবে গত দুই বছরে আরও ৪০ লাখ জনসংখ্যা জনমিতিতে যুক্ত হওয়ার কথা। দুই হিসাব মিলে দেশে জনসংখ্যা হওয়ার কথা ১৭ কোটি ৩১ লাখ ১ হাজার জন। এদিকে, এবার দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি হতে পারে বলে শুমারির প্রস্তুতিবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। ২০১১ সালের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ জন। প্রতি ১০ বছর পরপর এ শুমারি হওয়ার কথা। বিবিএসের তথ্য বলছে, প্রতি ১০ বছরে জনসংখ্যা গড়ে দুই কোটি বেড়ে থাকে। সর্বশেষ জনশুমারির পর ১১ বছর পার হয়েছে। সে হিসাবে এবারের জনশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি হতে পারে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমও একই অনুমানের কথা জানিয়েছেন। এদিকে আগামী তিন মাসের মধ্যেই শুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে বিবিএস। ১৯৭৪ সাল থেকে শুরু হয়ে দেশে এ পর্যন্ত পাঁচটি জনশুমারি হয়েছে। এবারের শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ বলা হয়েছে। অর্থাৎ অনুমিত জনসংখ্যা থেকে প্রতিবেদনে প্রকাশিত জনসংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ কম।

এদিকে বিবিএসের প্রতিবেদনে রাজধানীর জনসংখ্যার হিসাবেও অস্বাভাবিক গরমিল পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, দুই সিটি করপোরেশন মিলে রাজধানী ঢাকা শহরে ১ কোটি ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮২ জন মানুষ বাস করেন। মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় রাজধানীর জনসংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ। ২০২০ সালের হিসাব এটি। ২০১৬ সালে প্রকাশিত জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা সিটির জনসংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখ। ৬ বছর আগের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এ জনসংখ্যার সঙ্গে প্রতিদিন অতিরিক্ত ১ হাজার ৭০০ মানুষ ঢাকায় আসেন। সব মিলে বিবিএসের এবারের জনশুমারি এবং গৃহগণনা প্রতিবেদনে ঢাকার জনসংখ্যা কমবেশি প্রায় ১ কোটি উধাও।

এছাড়া নতুন পরিসংখ্যানে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত নয়। সরকারি হিসাবে বিদেশি শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি। শ্রমিকের বাইরেও পড়ালেখা এবং অভিবাসী হিসেবে কিছুসংখ্যক মানুষ বিদেশে রয়েছেন।

জনসংখ্যাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর নুরুন্নবী চৌধুরী বলেন, জনসংখ্যা গণনায় ভুল বা বাদ পড়ার হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে তা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য। ডিজিটাল ট্যাব ব্যবহারের মাধ্যমে গণনা করায় এবার আন্তর্জাতিক এ সীমার হারের অতিরিক্ত ভুল থাকার কথা নয়। বিবিএস শুমারি-পরবর্তী যাচাই কার্যক্রম করবে। এতে বাদ পড়াদেরও বড় একটা অংশের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পদ্ধতিতেই রয়েছে। ঢাকার জনসংখ্যা কম দেখানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেকেই আশপাশের জেলা থেকে ঢাকায় দিনে কাজ করেন, রাতে চলে যান। ফলে খুব স্বাভাবিক কারণেই রাজধানীর জনসংখ্যা গণনাকালে তারা অন্তর্ভুক্ত হননি। তিনি বলেন, গবেষণা কাজে বিআইডিএস একটি গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠান। তাদের যাচাইয়ে প্রকৃত চিত্র ফুটে আসবে বলে আশা করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. রবিউল হক ইনকিলাবকে বলেন, শুমারি নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। এটা কখনো শতভাগ সঠিক হয় না। কারণ আমরা এখনও সবাই সচেতন নয়। কারণ সচেতন হলে এ বছর হটলাইন চালু ছিল, সেখানে ফোন করে বলতে পারত। নাগরিক হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করিনি আমরা। শুমারি ভুল হলে অবশ্যই দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাজেট প্রণয়নসহ সার্বিক ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে। তবে এখনই শুমারি নিয়ে প্রশ্ন করার সময় নয়। সামনে পোস্ট ইনুমারেশন চেক (পিইসি) হয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন এলে এরপরই প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে। কেননা, জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, ৫ শতাংশের মধ্যে ভুল গ্রহণযোগ্য। পিইসি এটা সব দেশই করে। প্রফেসর ড. মো. রবিউল হক বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যা বাড়ছে। এটা বাড়বে। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে।

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২-এর প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন বলেন, যে কোনো শুমারিতে কিছু মানুষ বাদ পড়তে পারেন। কিন্তু তারা যাতে হিসাবের বাইরে না থাকেন, সেজন্য জাতিসংঘ স্বীকৃত পদ্ধতি অনুযায়ী পোস্ট ইনুমারেশন চেক করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আন্ডার কাউন্ট (বাদ পড়া) বা ওভার কাউন্ট (একাধিকবার গোনা) যাই থাকুক, বেরিয়ে আসবে। দিলদার হোসেন বলেন, এবারই প্রথম ডিজিটাল শুমারি হওয়ায় ভুলত্রুটি অনেক কম হয়েছে। এছাড়া বিগত শুমারির তথ্য পেতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এবার সবার সহযোগিতায় আমরা মাত্র ২৯ দিনেই জনশুমারির ফলাফল প্রকাশ করেতে পেরেছি। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করেছে, এরই ছোঁয়া লেগেছে জনশুমারিতে। যে কারণে প্রথম এই ডিজিটাল জনশুমারিতে ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাবলেট ব্যবহার করে কম্পিউটার অ্যাসিসটেড পার্সনাল ইন্টারভিউইং (ক্যাপি) পদ্ধতিতে তথ্য-সংগ্রহ করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • Motaleb Hossain ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৩ এএম says : 0
    এই আদমশুমারীতে প্রকৃত তথ্য উঠে আসেনি, তথ্য সংগ্রহকারিরা ছিল অপেশাদারমনভাবের, কোন বাসায় একবার গেছে কাউকে পায়নি কিন্তু পরে আর যায়নি।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ibrahim Kazi ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৬ এএম says : 0
    আদমশুমারি কয়জনের বাড়িতে গেছে এখানে কেউ বলতে পারবেন। সরকার মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর পলিটিক্স করতেছে। আসলে তো এটা সব সরকারের চালাকি।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abdul Quddus Badal ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৩ এএম says : 0
    একমাত্র জনশক্তি দিয়ে আয়কৃত রেমিটেন্সে টিকে আছে প্রিয় বাংলাদেশ , বাংলাদেশের জনসংখ্যাই আর্শিবাদ। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন আত্বঘাতী সিদ্ধান্ত, জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রুপান্তরই বড় চ্যালেন্জ।
    Total Reply(0) Reply
  • Pyr Ahmad Rubel ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৪ এএম says : 0
    আসল কথা এবার আদমশুমারীতে কর্মীরা ফাকিবাজি করেছে। আমার তালিকা কারা করেছে আমি নিজেও জানিনা! হা হা হা।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ হাতেম আলী ৩০ জুলাই, ২০২২, ৯:০১ এএম says : 0
    বেসরকারি চাকুরীজীবী অনেকেই এই গণনায় বাদ পরেছে। কারণ তাদের অনেকেরই অফিস টাইম সকাল ৭টা অথবা ৮টা থেকে রাত ৮টা বা ৯টা। এই সময়ের মধ্যে যারা বাসায় ছিল না তাদের বাসায় শুধু স্টিকার লাগিয়ে গণনাকারীরা দায়িত্ব শেষ করে চলে গেছে।এলাকা ভিত্তিক গণনায় যারা বাদ পরেছে তাদের সংখ্যা নেহায়েত কম না।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Shadhin Hossain ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৪ এএম says : 0
    সরকার জনসংখ্যা কম দেখাচ্ছে যাতে মাথাপিছু আয় বেশি দেখানো যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • সৈয়দ তৌহীদ আল রাজীব ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৫ এএম says : 0
    জন্মহার আর মৃত্যু হার মূলত একটি গাঁজাখুরি হিসেব। এর সাথে মানুষের হায়াত মউয়ত এর কোনো সম্পর্ক নাই। দুনিয়ার কারোর সাধ্য নাই যে জন্মাবে তার জন্ম রোধ করার, যে মারা যাবে তার মৃত্যু আটকানোর। যার যে ক'দিন রিজিক সে ঠিক ততোদিনই বাঁচবে। তাহলে সেই হার বাড়লে কার কি আর মরলেই কার কি... কেয়ামত পর্যন্ত যতো মানুষ আসার কথা আল্লাহর হুকুমে আসবেই... আল্লাহ মহান...
    Total Reply(0) Reply
  • MOHIUDDIN UZZAL ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৬ এএম says : 0
    এই নিউজ দেখে নিশ্চিত হলাম জনশুমারিতেও যথেষ্ট দুর্নীতি এবং অনিয়ম হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Jashim Chowdhury ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৩ এএম says : 0
    মন্দের ভালো। আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো সবসময় অনুন্নত দেশ গুলোকে চাপে রাখে জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। সে হিসেবে বাংলাদেশ ভালো পর্যায়ে অবস্থান করছে। আবার অধিক জনসংখ্যা যে বোঝা নয়, চীনের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট!
    Total Reply(0) Reply
  • Agni Sena ৩১ জুলাই, ২০২২, ২:৫২ এএম says : 0
    No one believes and data coming out of this government agencies. All informations are lies and deception. Remind me of North Korea. One man one party deception show.
    Total Reply(0) Reply
  • MD.MANIRUL ISLAM ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:৪৭ পিএম says : 0
    আমার বিল্ডিং এ ৫টি ফ্লাটের মধ্যে ১টিতে ২টি ষ্টিকার লাগানো আছে। আমি নিজেও গননার বাহিরে।
    Total Reply(0) Reply
  • MOHIUDDIN UZZAL ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৬ এএম says : 0
    এই নিউজ দেখে নিশ্চিত হলাম জনশুমারিতেও যথেষ্ট দুর্নীতি এবং অনিয়ম হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Hafizur Rahman ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৫ এএম says : 0
    ভূয়া তথ্য দিয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। দেশে জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।।
    Total Reply(0) Reply
  • Masbah U Ahmed ৩০ জুলাই, ২০২২, ৩:০৩ এএম says : 0
    So many observation are there. Specially in survey conduction by appointed students and youths. Most of the house owner even can not see any of them. So, don't know how to express my personal views in this regard.
    Total Reply(0) Reply
  • Sakshar Sen Christopher ১ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৫ পিএম says : 0
    দেশের জনসংখ্যা 17 কোটি এর বেশি।এবং যার মধ্যে মুসলিম 15 কোটি ও নন মুসলিম 2 কোটি। বা তার সামান্য বেশি সরকারের তথ্যঅনুযায়ী 1.5 কোটি দেখানো হচ্ছে যা ভুল। অনেক হিন্দু,বা বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বাড়িতে গণনা হয়নি। অনেকের আবার নামের পাশে ইসলাম ও আসছে। আমি নিজেও গণনার বাহিরে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিবিএস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ