Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তেলের দাম বৃদ্ধিতে বদলে গেছে মার্কিনিদের জীবনযাত্রার ধরন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২২, ১২:০৭ এএম

দাম খুব বেশি বেড়ে গেলে মানুষের খরচের সামঞ্জস্য বোঝানোর জন্য অর্থনীতিবিদরা দুটি শব্দ ব্যবহার করেন- ‘ডিমান্ড ডিস্ট্রাকশন’ বা চাহিদা ধ্বংস। এর মানে হচ্ছে, যখন একটি পণ্যের মূল্য বর্ধিত সময়ের জন্য ঐতিহাসিক নিয়মকে ছাড়িয়ে যায়, তখন এটি আক্ষরিক অর্থে সেই পণ্যের চাহিদাকে ধ্বংস করে। তেলের দাম বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের ক্ষেত্রে এখন ‘ডিমান্ড ডিস্ট্রাকশন’ শব্দমালা প্রয়োগ অযথার্থ হবে না। দেশটিতে গত ১৪ জুন পেট্রলের দাম প্রতি গ্যালন পাঁচ ডলারের বেশি ছিল। চলতি সপ্তাহে এই দাম ১৩ শতাংশে কমে মাত্র ৪ দশমিক ৩২ ডলারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ চাহিদা ধ্বংসের লক্ষণ পুরোটাই রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন সোমবার তেলের দাম কমায় টুইটারে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করে বলেছেন, তেলের দাম যখন সর্বোচ্চ ছিল সেই সময়ের তুলনায় এখন গড় আমেরিকান পরিবার প্রতি মাসে জ্বালানি বাবদ ৭০ ডলার সাশ্রয় করছে। অবশ্য তিনি যা উল্লেখ করেননি তা হচ্ছে, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় তেলের দাম এখন প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময় গ্যালন প্রতি জ্বালানির দাম ছিল মাত্র ৩ দশমিক ১৫ ডলার। গত এক বছরে দামের নাটকীয় বৃদ্ধি অনেক চালকের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেছে। আমেরিকান অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন (এএএ) এর একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে প্রায় ৬৪ শতাংশ আমেরিকান জানিয়েছেন, তারা তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে মার্চ থেকে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেছেন এবং ২৩ শতাংশ ‘বড় পরিবর্তনের’ কথা স্বীকার করেছেন। ৮৮ শতাংশ আমেরিকান জানিয়েছেন, তারা এখন গাড়ি কম চালান, ৭৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা এক ট্রিপেই যৌথভাবে কাজ সারা চেষ্টা করছেন এবং ৫৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা কেনাকাটা ও বাইরে খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মাত্র ২ শতাংশ জানিয়েছেন যে, জ্বালানির দামের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে তারা এখন ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহার করছেন। এর বাইরে ১৩ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা আরও বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী গাড়ি কিনেছেন এবং ১৬ শতাংশ জানিয়েছেন তারা প্রতিবেশী কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে গাড়ি ভাগাভাগি করে যাতায়াত করছেন। এএএ’র জরিপটি ২৩ থেকে ২৭ জুনের মধ্যে পরিচালিত হয়েছিল এবং এক হাজার দুজন আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক এতে অংশ নিয়েছিলেন। সমীক্ষা প্রকাশের সাথে একটি প্রতিবেদনে, এএএ জানিয়েছে, তাদের আশঙ্কা তেলের দাম ‘অদূর ভবিষ্যতে অস্থির’ থাকবে এবং ভোক্তাদের ‘আগের বছরের তুলনায় উচ্চ মূল্য’ প্রদানের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। ইনফ্রাস্ট্রাকচার ক্যাপিটাল পার্টনারস ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী এবং পোর্টফোলিও ম্যানেজার জে হ্যাটফিল্ড মার্চ মাসে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফরচুনকে বলেছিলেন, চাহিদা ধ্বংসের ফলে গ্যাসের দাম জাতীয়ভাবে প্রতি গ্যালন পাঁচ ডলারের উপরে থাকবে না এবং এএএ’র জরিপ সেই প্রবণতার প্রথম প্রমাণ। আমেরিকানরা চার দশকের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির সাথে লড়াই করছে। কফি থেকে শুরু করে ভাড়া পর্যন্ত সবকিছুর দামের ওপর প্রভাবিত পড়ছে। এর ফলে অর্থনীতিতে তাদের আস্থা কমে যাচ্ছে, ব্যয় সংকোচনে বাধ্য হচ্ছে। সিএনবিসি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তেলের দাম

১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৩০ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ