পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিজেল-অকটেন-পেট্রল-কেরোসিনের দাম লিটারে ৫ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাত ১২টার পর থেকেই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে লিটারপ্রতি ডিজেল ১১৪ টাকা থেকে কমে ১০৯ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা থেকে কমে ১৩০ টাকা, পেট্রল ১৩০ টাকা থেকে কমে ১২৫ টাকা এবং কেরোসিন ১১৪ টাকা থেকে কমে ১০৯ টাকায় নামছে। গতকাল সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে দুপুরে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে হিসাব যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, জ্বালানি তেল আমদানিতে করার ব্যাপারে আমাদের কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সেই সুবিধার কারণে আমরা চিন্তা করছি তেলের দাম সমন্বয় করতে পারব।
গত রোববার রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের আগাম কর মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগে ডিজেলে শুল্ক-কর মিলিয়ে ৩৪ শতাংশ কর প্রযোজ্য ছিল। নতুন আদেশের ফলে সবমিলিয়ে তা কমে ২২.৭৫ শতাংশ হলো।
নতুন আদেশ অনুযায়ী, ডিজেল আমদানিতে এখন ব্যবসায়ীদের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ, আগাম আয়কর ৩ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এই আদেশ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট রাত ১২টার পর থেকে দেশে সব ধরনের জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়। সেদিন প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রলের মূল্য ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তার আগে ডিজেল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা এবং পেট্রলের দাম ছিল এক লিটার ৮৬ টাকা। জ্বালানি বিভগের একজন কর্মকর্তা জানান, জ্বালানি তেলের আমদানি শুল্ক কমানোর পর আজই প্রস্তাব পাঠিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। ডিজেল-পেট্রল-কেরোসিন-অকটেনের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানো হতে পারে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি তেল আমদানিতে করের ব্যাপারে আমাদের কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সেই সুবিধার কারণে আমরা হয়তো চিন্তা করছি যে, তেলের দাম হয়তো আমরা সমন্বয় করতে পারব। সেটার হিসাবটা এখনও যাচাই-বাছাই চলছে। আমরা আশা করছি, এখানে হয়তো একটা পরিবর্তন আসবে। সরকার যেহেতু শুল্ক ছাড় দিয়েছে। সেটা হয়তো কিছুটা আমাদের জন্য তেলের মার্কেট আবার বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, তেলের বাজার এখন ১৫০-এর ওপরে চলে গেছে, যেটা আগে ১৩০ ছিল। এই অবস্থায় আমরা দাম কতটুকু সমন্বয় করতে পারব, কারণ এখানে ভর্তুতির বড় একটা অংশ আবার যোগ হবে। যখন ডিজেল ১১৪ টাকা ছিল ডিজেল তখন ৮ টাকার ওপরে ভর্তুকি ছিল, এখন হয়তো সেই জায়গাটা আরও বাড়বে। তারপরও এটা কমাতে কতটুকু সমন্বয় হবে এখনও আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। হয়তো আজ-কালকের মধ্যে আমরা একটা সিদ্ধান্তে যাব। এই এতটুকুই বলতে পারি।
সমন্বয়টা কবে নাগাদ হবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি তো আশা করি, কাল-পরশুর মধ্যে একটা কতটুকু যেতে পারি, সেটার একটা ব্যবস্থা নেবো আরকি, মাঠপর্যায়ে সমন্বয়ের সুফল পৌঁছাতে আরেকটু সময় লাগবে- আমার মনে হয় তাই। সমন্বয় বলতে কী দাম কমবে এমন প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, আমি তো কখনোই কম-বেশির কথা বলিনি। আমি সমন্বয় করতে বলেছি। আমরা চাচ্ছি, ট্যাক্স যে ৫ শতাংশ কমল, সেটার কতটুকু প্রভাব পড়বে। এটা আমদানির ক্ষেত্রে কমল; কিন্তু খুচরা পর্যায়ে একটা কতটা প্রভাবে ফেলবে সেটা তো আমাকে দেখতে হবে। সমন্বয়টা যাতে বড় আকারে করতে পারি, সেটাই আমরা চাই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেখলাম ওরকমভাবে হলো না, তখনও তো হিসাবের একটা বিষয় আছে। এদিকে তেলের দামও প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গেছে। এটা আমরা আশাই করিনি। আমরা মনে করেছিলাম ট্রেন্ডটা হয়তো নিচের দিকে নামবে। এখন ১৫০-এ ঊর্ধ্বে চলে গেছে, এখনও ভয় পাচ্ছি আরও নাকি বেড়ে যায়।
এদিকে পেট্রল পাম্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের আগাম কর মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। জ্বালানি তেলের দামের ওপর এর প্রভাব পড়বে কি-না, সেটা জানতে আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে। জ্বালানি তেল আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমানোর বিষয়টা মাত্র ২টা জায়গায় আংশিক কমেছে। এটি নিয়ে আমাদের হিসাব শাখা কাজ করছে। কর এবং আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে জ্বালানি তেলের দাম কতটুকু কমবে, সেটা আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে।
বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, দাম কমার বিষয়ে যদি আপনাদের সর্বশেষ তথ্য দেই, এভারেজে আগস্ট মাসে গত ২৮ দিনের যে রেট, যেটা রিফাইন অয়েলে সেটা এখনও ১৩২ ডলার প্রতি ব্যারেলে পড়ছে। যেটা আমার কস্টিংয়ে চেয়ে সাড়ে ৯ থেকে ১০ টাকা বেশি প্রতি লিটারে। আমি ডিজেলের কথা বলছি। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, তেল পাচার ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কমানোর কথা বলে গত ৫ আগস্ট সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল। এতে প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়।
গত ৫ আগস্ট রাত ১২টার পর থেকে ডিজেল, পেট্রল, কেরোসিন ও অকটেনের দাম বাড়িয়েছে সরকার। দাম বেড়েছে প্রতি লিটার ডিজেলে ৩৪ টাকা, কেরোসিনে ৩৪ টাকা, অকটেনে ৪৬ টাকা ও পেট্রলে ৪৪ টাকা। দাম বাড়ার পর প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রল ১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই ভারতের মতো রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল কেনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী উপায় খোঁজার নির্দেশনা দিয়েছেন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনা দেওয়ার পর কাজ শুরু করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি নির্দেশনা পাওয়ার পরে পরে জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বিপিসি তেল আমদানিতে যাচ্ছে। তবে আপাতত ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত তেল) আমদানিতে যাচ্ছে সরকার। তা আগামী এক মাস আগে আমদানি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ দেশে মাত্র ৩০ দিনের ডিজেল এবং ১৮ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত আছে। সে জ্বালানি তেল শেষ হওয়ার পথে বলে জানা গেছে। এদিকে জ্বালানি তেলের বাজার খুজতে আমেরিকা গেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।