নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এক দশকের ব্যবধানে আবারও মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করবে বাংলাদেশ। আগামী ২০২৪ সালে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসবে বাংলাদেশে। এর আগে ২০১৪ সালে ছেলেদের ও মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশে। তখন প্রতিযোগিতা দুটি একসঙ্গে আয়োজিত হতো। ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে চলমান বার্ষিক বোর্ড সভায় গতপরশু রাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। পরের তিন বছরে মেয়েদের তিনটি বড় প্রতিযোগিতার আয়োজক কারা হবে সেটাও জানিয়ে দিয়েছে তারা। ২০২৫ সালে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে ভারতে। ইংল্যান্ড থাকবে ২০২৬ সালে অনুষ্ঠেয় মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ। শ্রীলঙ্কা যদি বাছাইপর্বের বাধা পেরিয়ে চ‚ড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিতে পারে, তাহলে ২০২৭ সালে সেখানে আয়োজিত হবে মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
২০২৪ সালেই প্রথমবারের মতো কেবল মেয়েদের কোনো বড় প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে বাংলাদেশ। ওই বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানে অংশ নেবে মোট ১০টি দল। আসরে সবমিলিয়ে ম্যাচ হবে ২৩টি। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ¡সিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি আইসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ‘২০২৪ মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দারুণ একটি খবর। যখন মেয়েদের ক্রিকেট সমৃদ্ধি ও বিস্তার লাভ করছে, এমন সময়ে মেয়েদের এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব দেয়ার জন্য বিসিবির পক্ষ থেকে আইসিসি বোর্ডকে ধন্যবাদ।’
দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদ, ফারজানা হকদের। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টির ওই আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা দলটির বেশির ভাগ সদস্য এখনও জাতীয় দলের অংশ। সেই টুর্নামেন্টের পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে নিয়মিতদের একজন হয়ে উঠেছেন নিগার সুলতানা। এবার দেশের মাটিতে কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে খেলার হাতছানিতে উচ্ছ¡সিত বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় কিপার-ব্যাটার নিগারের। আইসিসির কাছ থেকে সুখবর পাওয়ার পর তিনি বিভোর দেশের মাটিতে বিশ্বমঞ্চে খেলতে, ‘খবরটা শোনার পর আমি খুব রোমাঞ্চিত। কারণ নিজের দেশে বিশ্বকাপ খেলার মতো সৌভাগ্য সবার হয় না। খেলার সুযোগ পেলে আমাদের জন্য বড় একটা বিষয় হবে। নিজের দেশে একটা বাড়তি সুবিধা থাকে, দর্শকদের সমর্থন থাকে, যা দলকে উজ্জীবিত করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।’
লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার রুমানাও ভাসছেন খুশিতে। দুই বছরে দলকে আরও গুছিয়ে নিয়ে দেশের মাটিতে ভালো কিছু করার ব্যাপারেই আশাবাদী তিনি, ‘নিজেদের মাটিতে খেললে সুযোগটা অন্য সব জায়গার চেয়ে বেশি থাকে। এখানে আমরা নিয়মিত খেলার কারণে উইকেট ও কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি। বিশ্বকাপের আগে আমরা যদি প্রচুর ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই, আমাদের জন্য এটা দারুণ ব্যাপার হবে। আমরা আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি ম্যাচ খেলি। দলটাও আগের চেয়ে অনেক ভালো। খেলোয়াড়রা দিন দিন অনেক উন্নতি করছে। আমি মনে করি, ১০ বছর আগের চেয়ে এবার আমাদের অনেক ভালো হবে। কিছু প্রাপ্তি আমরা যোগ করতে পারব।’
এরই মধ্যে মেয়েদের হাত ধরে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা এসেছে বাংলাদেশের হাতে। শক্তি ও অভিজ্ঞতায় বেশ এগিয়ে থাকা ভারতকে দুইবার হারিয়ে নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় সালমা-জাহানারাদের দল। সব কিছু পক্ষে থাকলে বিশ্বমঞ্চেও চমক জাগানিয়া কিছু করা সম্ভব বলে বিশ্বাস রুমানার, ‘বড় কিছু অর্জন করতে গেলে আমাদের অনেক বেশি ম্যাচ খেলতে হবে। কিছুদিন পর থেকেই আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত স‚চি শুরু হবে। দম ফেলার সময়ও পাব না। সামনেই (দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয়) আগামী বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব আছে। প্রচুর ম্যাচ খেলতে পারলে নিজেদের ভ‚লত্রæটিগুলো আমরা জনতে পারব। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারব। আমরা আইসিসির কাছ থেকে অনেক ম্যাচ পেয়েছি। যার কারণে ম্যাচ নিয়ে আমাদের ভাবনা নেই, আমরা অনেক বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাব। আর যেহেতু ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, আশা করি বিসিবিও আমাদের এখানে অনেক ম্যাচ আয়োজন করবে। যেসব আমাদের বিশ্বকাপে কাজে দেবে।’
আয়োজক হওয়ার জন্য ক্রিকেট বোর্ডগুলোকে তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যে উপ-কমিটি গোটা প্রক্রিয়া তদারকি করেছে, সেটার নেতৃত্বে ছিলেন মার্টিন স্নেডেন। তার পাশাপাশি ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী ও রিকি স্কেরিট। তাদের সুপারিশ পরবর্তীতে আইসিসির সভায় গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে, ২০২৬ সালে। সেখানে বাড়বে দল ও ম্যাচের সংখ্যা। ১২ দলের টুর্নামেন্টে ম্যাচ হবে ৩৩টি। ২০২৫ সালে ভারতে হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ৮ দলের টুর্নামেন্টে ম্যাচ হবে ৩১টি। শ্রীলঙ্কা খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে ২০২৭ সালে ৬ দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে সেখানে। নইলে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এই টুর্নামেন্ট অন্য দেশে সরিয়ে নেবে আইসিসি।
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৩ ও ২০২৫ সালের ফাইনালের ভেন্যুও নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ দুটি। প্রথম আসরের ভেন্যুও ছিল ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেট তীর্থ। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সেখান থেকে ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল সাউদাম্পটনে। ছেলেদের ও মেয়েদের আগামী ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের চক্রের ভবিষ্যৎ সফরস‚চিও অনুমোদন দিয়েছে আইসিসি বোর্ড। সামনে পুরো স‚চি প্রকাশ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।