Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চা খাওয়ানোর মত পানি মজুত আছে? প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২২, ৭:০৪ পিএম | আপডেট : ৭:৪৪ পিএম, ২৭ জুলাই, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী অজান্তেই চা খাওয়ার কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে চা দিয়ে আমন্ত্রণ করবেন। আপনার বাড়ি ঘেরাও করতে হলে যত লোক যাবে, সেই লোকের চা খাওয়ানোর মতো পানি মজুত আছে? নেই। আপনার চায়ের দাওয়াতে হয়ত যাবে না; যদি দেশের জনগণ গণভবন ঘেরাও করতে যান, জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলি দিয়ে আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে। হয়ত আপনি মনের অজান্তে কথাটা চা খাওয়ার কথাটা বলছেন।

বুধবার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর রায় বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়াকে টুস করে পানিতে ফেলে দেওয়া এটা একান্তই হিউমার। অর্থাৎ শেখ হাসিনা ঠাট্টাও জানে। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সাথে করেন কিন্তু জাতির সামনে যে ঠাট্টা ১৪ বছর যাবৎ করছেন, এটার হিসাব জনগণ একদিন নিতেই পারে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিদ্যুতখাতের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের গল্প ছয় মাস আগেও শুনেছি। প্রয়োজন আমাদের ১১ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু এখন ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতও নেই। এখন বিদ্যুৎ যায় না; বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে দেখা করতে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমরা এখনও জীবিত আছি; মরিনি। এই হলো বিদ্যুতের অবস্থা। হারিকেন তাও বুঝি খুঁজে পাওয়া যায় না। এই সরকারের উন্নতি, ঘরে ঘরে মোমবাতি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কিছুদিন আগে বলেছিলাম এই সরকার জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ নেই কিন্তু আমাদের টাকা গেল কই? বিদ্যুতের জন্য যত টাকা ঋণ করেছেন, সেই টাকা তো আমাকে অর্থাৎ জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। কেন আমরা এই ঋণ পরিশোধ করব। দ্রুত চাহিদা মেটানোর জন্য কাকে কাকে কুইক রেন্টাল প্রজেক্ট দিয়েছেন তাদের নাম মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ফাইলবন্দী আছে। এই কোম্পানিগুলো কী পরিমান টাকা ঋণ নিয়েছে, কী পরিমান জ্বালানী ফুয়েল দেওয়া হয়েছে এবং কী পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে যে প্রতিবেদন সরকারকে দিয়েছে তার হিসাবটা দেন। যে বিদ্যুৎ তারা দিয়েছে তার মূল্য কত, তাদের কাছে পাওনা কত? এই বিদ্যুতের নামে বিদ্রূপ করে জনগণের টাকা লুটপাট করেছেন, তার পরিমান দশ লাখ কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এই টাকা তো নতুন করে ছাপিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়নি। কোনো না কোনো প্রজেক্ট থেকে হাতিয়ে নিয়ে এই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এই টাকার হিসাব জনগণের নেওয়ার অধিকার রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শুনতে পাচ্ছি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য সপ্তাহে তিন দিন স্কুল কলেজ বন্ধ রাখবে, জেনারেটর চলতে পারবে না, ডিজেটেল খুচরা বাজারে দেবেন না - তাহলে মানুষ কী করে বাঁচবে? শিল্প কলকারখানা কীভাবে চলবে? কৃষি, পোশাকখাতসহ সামগ্রীক উৎপাদনে কী পরিমান ঘাটতি হবে? সেই ঘাটতি পূরণ করে বিদেশী বাজার ধরে রাখা কঠিন হবে। তাহলে দেশ কীভাবে চলবে?

গয়েশ্বর বলেন, মুদ্রা পাচারের মধ্যদিয়ে ব্যাংক শেষ। রিজার্ভের কথা শোনা যায়-অবস্থা এমন হয়ত দুই তিন মাস পরে দেশের আমদানীকারকরা এলসি খুলতে পারবে না। ডলারের দাম উর্ধ্বগতি; খোলাবাজার থেকে যদি ডলার কিনে পণ্য আমদানী করতে হয় তাহলেও ২০ শতাংশ এ কারণেই বেড়ে যাবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, অর্থমন্ত্রী একজন আদমবেপারী। তিনি বলেন, আইএমএফের কাছে কোনো টাকা চাই না। আবার ভেতরে ভেতরে আইএমএফের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। আবার আইএমএফ বলছে, কোন প্রজেক্টে কত টাকা খরচ করেছে তার হিসাব চেয়েছে। যে ঋণ দিবে, তারা কী হিসাব নিবে না?

নির্বাচন কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই যে নির্বাচন কমিশন রয়েছে। সকালে এক কথা বিকালে এক কথা বলে। এত কথা বলেন কেন? কে নির্বাচনে আসবে, কে নির্বাচনে আসবে না এই কথা বলা আপনি কে? হু আর ইউ? রাজনৈতিক মিমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। সরকার চিন্তা করবে কিভাবে জনগণের সাথে তারা মিমাংসা করবে, কীভাবে জনগণের ভোটাধিকার ফেরত দিবে-এটা। ঠুটু জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের না।

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়, দলের অবস্থান তুলে ধরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের একটাই স্লোগান হঁটাও হাসিনা বাঁচাও দেশ, টেকব্যাক বাংলাদেশ।

স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সহ-সভাপতি আনু মোহাম্মদ শামীম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, আকরামুল হাসান প্রমুখ। ###


--



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ