পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় পৌনে এক লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এককভাবে দেশের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায়কারী এ প্রতিষ্ঠানকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব রোর্ড- এনবিআর।
করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বাণিজ্যে মন্দাবস্থার মধ্যেও গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব আদায়ে ৬০ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক অতিক্রম করে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। আর সরকারি-বেসকারি সাতটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া তিন হাজার ৮৮৪.৪৩ কোটি টাকাসহ রাজস্ব আদায়ের আকার দাঁড়ায় ৬৩ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ২২.৪২ শতাংশ।
২০ জুলাই পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথম ২০ দিনে দুই হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই সময়ে আগের বছরের তুলনায় ৪২৩ দশমিক ২৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ১৮ শতাংশ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব বলে মনে করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
তবে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশেষ করে কিছু কিছু পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতে টান পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, সরকারি তরফে উচ্চ বিলাসী বেশকিছু পণ্যের আমদানি নিরুসাহিত করা হচ্ছে। উচ্চমূল্যের কারণে গাড়ি, জ্বালানি, ভোজ্যতেলসহ অধিক হারে রাজস্ব আদায় হয় এমন পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
তাতে রাজস্ব আহরণেও টান পড়তে পারে। ফলে বিশাল অঙ্কের এ টার্গেট আদায় করা তখন কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম কাস্টস হাউসের বিদায়ী কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম গতকাল শুক্রবার ইনকিলাবকে বলেন, চলতি অর্থবছরে ৭৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের যে টার্গেট দেয়া হয়েছে আমদানি স্বাভাবিক থাকলে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। সেই সাথে যথাযথ শুল্কায়ন নিশ্চিত এবং মিথ্যা ঘোষণায় শুল্কফাঁকি রোধেও কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দেশের মোট আমদানি-রফতানির বিরাট অংশ সামাল দেয় চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের এই প্রধান সমুদ্র বন্দরভিত্তিক রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আহরণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর সার্বক্ষণিক সচল রয়েছে, বন্দরের পরিধি সেইসাথে সক্ষমতাও দ্রুত বাড়ছে। গেল ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে রেকর্ড ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। একই সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১১ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন। এ সময় জাহাজে হ্যান্ডলিং হয়েছে চার হাজার ২৩১টি।
কনটেইনার, কার্গো এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং খাতেই প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ১৬ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন কনটেইনার টার্মিনাল-পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে হ্যান্ডলিং শুরু হচ্ছে। বন্দরের বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি।
দৃশ্যত রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় দেশে আমদানি-রফতানি, উন্নয়ন-বিনিয়োগের স্বাভাবিক পরিবেশ রয়েছে। এ অবস্থায় রাজস্ব আহরণও স্বাভাবিক থাকবে বলে মনে করেন আমদানি-রফতনি সংশ্লিষ্টরা। ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ৫৯ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ৫১ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা।
গেল অর্থ বছরে এনবিআরএর পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৩৫ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। তবে আগের অর্থ বছরের তুলনায় বকেয়াসহ ১১ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। আর এতে রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ২২ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
এবারও সে ধারা অব্যাহত রাখতে অর্থ বছরের শুরু থেকে মিথ্যা ঘোষণায় রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধসহ রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। বিশেষ করে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি প্রতিরোধে কঠোর নজরদারী করা হচ্ছে। কাস্টম হাউস এখন সার্বক্ষণিক সচল। আমাদানিকারকদের জন্য হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। তাতে রাজস্ব আহরণ সহজতর হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী দিনে রাজস্ব আদায়ে আরো গতি আসবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
এদিকে, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে নতুন কমিশনার হিসেবে যোগ দিচ্ছেন ফাইজুর রহমান। তিনি বর্তমানে ঢাকার কাস্টমস কমিশনার পদে কর্মরত। গত বৃহস্পতিবার এনবিআর এর শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব শেখ মেজবাউল সাবেরিন স্বাক্ষরিত আদেশে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলমকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক করা হয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রামের ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেনকে সিলেটের ভ্যাট কমিশনার হিসেবে বদলি করা হয়েছে। চট্টগ্রামে ভ্যাটের নতুন কমিশনার পদে কাস্টমস, এক্সাইজ ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা পশ্চিমের কমিশনার সৈয়দ মুসফিকুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।