পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নেতিবাচক ধারায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়। অর্থ বছরের প্রথম সাড়ে তিন মাসেই ঘাটতি ৩ হাজার ৩শ’ ৩১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থ বছর শেষে ৫৭ হাজার ৪শ’ ৬২ কোটি টাকার বিশাল টার্গেট আদায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়ার সাথে সাথে রাজস্ব প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, নির্বাচনের বছর হওয়ায় আমদানি প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় আমাদনিকারকরা রয়ে-সয়ে পণ্য আমদানি করছেন। আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানিসহ নানা কৌশলে শুল্ক ফাঁকির কারণেও রাজস্ব আদায় কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন কেউ কেউ।
রাজস্ব আদায় কমার বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ফাইজুর রহমান গতকাল (মঙ্গলবার) দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমদানি প্রবণতা কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কিছুটা কমেছে। তবে তিনি আশাবাদী সামনের দিনগুলোতে রাজস্ব আদায় ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।
দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরভিত্তিক সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের নৌ-বাণিজ্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ কন্টেইনার এবং ৯২ শতাংশ পণ্য হ্যান্ডলিং হয়। তাই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি দেশের সার্বিক আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ইতিবাচক ধারার ইঙ্গিত বহন করে। তবে এখনো পর্যন্ত রাজস্ব প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পেছনে।
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৪শ’ ৬২ কোটি টাকা। গেল ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত অর্থ বছরের প্রথম সাড়ে তিন মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৬শ’ ৫৭ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ৯শ’ ৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সাড়ে তিন মাসে ঘাটতির আকার দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩শ’ ৩১ কোটি টাকা।
গত অর্থ বছরের এ সময়ে রাজস্ব আদায় হয় ১০ হাজার ৮শ’ ৬৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে আগের অর্থ বছরের এ সময়ের তুলনায় মাত্র ৭শ’ ৯১ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। গেল অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আহরণ কমছে। সেইসাথে কমছে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধিও।
চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে আপাতত রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলেও আগামী দিনে বিরোধী দলের আন্দোলন এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা থেকে আমদানিকারকরা বড় ধরনের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তারা অনেকটা রয়ে-সয়ে পরিস্থিতি বুঝে পণ্য আমদানি করছেন। এ কারণে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে রাজস্ব আহরণও কমে গেছে।
আবার এক শ্রেণির অসাধু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি করছে। এতে মোটা অঙ্কের শুল্কফাঁকি দেয়া হচ্ছে। সার্বিক রাজস্ব আহরণে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আনা কিছু পণ্যের চালান মাঝেমধ্যে ধরা পড়ছে। তবে বড় বড় চালান পার হয়ে যাচ্ছে। শুল্ক ফাঁকি ঠেকানো না গেলে সামনের দিনগুলোতে রাজস্ব আহরণ আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ফাইজুর রহমান বলেন, অর্থ বছরের শুরুতে স্বাভাবিকভাবে আমদানি কিছুটা কম হয়। আর এ কারণে রাজস্ব আহরণও কমছে। নির্বাচনের বছর হওয়ায় আমদানিতে নেতিবাচক ধরা চলছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণ স্বচ্ছ ও গতিশীল করতে এবং মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ঠেকাতে কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী কাস্টম হাউস সার্বক্ষণিক সচল থাকছে। তিনি আশাবাদী সামনের দিনগুলোতে আমদানি বাড়লে রাজস্ব আহরণে গতি আসবে। চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চবিলাসী মন্তব্য করে তিনি বলেন, এরপরও টার্গেট অর্জনে আমরা কাজ করছি।
উল্লেখ্য, টানা তিন অর্থ বছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। গেল অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৪ হাজার ৬শ’ ৭৭ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ২শ’ ৪০ কোটি টাকা। আগের দুই অর্থ বছরেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।