Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামে শিডিউল বিপর্যয় লোডশেডিং, ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০২২, ১:১৬ পিএম

সরকার ঘোষিত বিদ্যুতের ঘাটতি পুরণে এলাকাভিত্তিক এক ঘন্টা লোডশেডিং এর নির্দেশনা থাকলেও কুড়িগ্রামে কোথাও কোথাও ঘন্টা পর ঘন্টা লোডশেডিং এর বিরম্বনায় অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছে জেলাবাসী। বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎতের লোডশেডিং বেশি হওয়ার কারণে তীব্র গরমে সকল শ্রেণীপেশার মানুষের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে লোডশেডিং এর প্রভাব পড়েছে ব্যাটারি চালিত ফ্যান ও চার্জার লাইটের দোকানে। নিম্ন আয়ের মানু্ষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরা ভিড় করছে জেলার ইলেকট্রিক দোকানগুলোতে। তাছাড়াও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও রিকশা চালকরা পড়েছেন বিপাকে। কেন না লোডশেডিং এর কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে চার্জ করতে না পাড়ায় দৈনন্দিন আয় নিয়ে বিপাকে আছেন অনেকে।

জানা যায়, গতকাল জেলা শহরে রাত ৭টা ও রাত ১২টায় লোডশেডিং এর কবলে ছিল পৌরবাসী। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল শহর ও গ্রামের পথ ঘাট। কোথাও নিভু নিভু আলো জ্বলছে। প্রচন্ড তাপদাহে মানুষজন ঘামে ঝড়া শরীর নিয়ে বের হয়ে পড়েছে রাস্তার মোড়ে কিংবা খোলা উঠানে। দোকানিরা মোমবাতির জৌলসে আলোয় ব্যবসা করছেন। কেউবা হাতপাখা ঘুরাচ্ছেন একটু বাতাসের জন্য। ঘন্টার পর ঘন্টা গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ না থাকায় রোফা আমন মৌসুমে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা।


নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) অফিস সুত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা শহরে দৈনিক ৩০ হাজার গ্রহকের দৈনিক চাহিদা প্রায় ১২ মেগাওয়াট কিন্তু তার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৬-৭ ও ৮ মেগাওয়াট।

অন্যদিকে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিস সুত্রে জানা গেছে, পল্লী বিদুৎ সমিতির আওতায় কুড়িগ্রামের ৭টি উপজেলায় ৪ লাখ ৬৬ হাজার গ্রহকের দৈনিক চাহিদা ১২৯ মেগাওয়াট হলেও তার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭৩ মেগওয়াট। এদিকে দিনের চাহিদা ৫৬ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৩১ মেগাওয়াট। রাতের চাহিদা ৭৩ মেগাওয়াট, পাওয়া যাচ্ছে ৪২ মেগাওয়াট।

সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিল পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, প্রচুর গরম আমাদের এখানে। বিদ্যুৎ ঠিক মত না থাকায় রাতে ঘুমাতে পারছি না। সবচেয়ে খারাপ লাগছে ছোট ছোট বাচ্চারা ঘুমাতে পারছে না। সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রায় ৩-৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ঘোষপাড়া এলাকার স্বপ্ন স্টোরের মালিক মোকছেদুল হক বলেন, আমাদের শহরে দেখা যাচ্ছে গড়ে ৩-৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। বর্তমানে যে পরিমাণে গরম পড়ছে বিদ্যুৎ ছাড়া ২ মিনিটও থাকা যায় না। বিদ্যুৎ ঠিকমতো না থাকার কারণে ব্যবসা করতে সমস্যা হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নুরনবী মিয়া জানান, লোডশেডিং এর সিডিউল বিপর্যয়ে চরম ভোগান্তিতে আছি আমরা। কবে নাগাদ সমাধান হবে তাও জানা নেই। আমরা চাই শতভাগ বিদ্যুৎ উন্নয়নের জেলা কুড়িগ্রাম শত ভাগ লোডশেডিং মুক্ত থাকুক।

কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদুৎ সমিতির ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (কারিগরী) মোঃ আবির হোসেন জানান, কুড়িগ্রামের ৭টি উপজেলায় ৪ লাক ৬৬ হাজার গ্রহকের চাহিদা দিন-রাতে ১২৯ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৭৩ মেগাওয়াট। আমরা সিডিউল অনুযায়ী যখনি লোডশেডিং দিচ্ছি ১ ঘন্টার বেশি দিচ্ছি না।

কুড়িগ্রামের নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আলিমুল ইসলাম সেলিম জানান, জাতীয় গ্রিড থেকে বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে লোডশেডিং একটু বেশি হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে জেলা শহরে ৩-৪ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এখানে ৩০ হাজার গ্রহকের জন্য ১২ মেগাওয়াট চাহিদা। সেখানে ৬-৭ ও ৮ মেগাওয়াট পাওয়া যাচ্ছে।

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লোডশেডিং

২৮ আগস্ট, ২০২২
১২ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ