পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রেলওয়ের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে সাধারণ মানুষ। রেলওয়ের মতো রাষ্ট্রীয় এমন একটি বড় পরিবহন খাতের নানা সমস্যার প্রতিকার চেয়ে কোন উপকারই পাননি সাধারণ যাত্রীরা। দীর্ঘদিনের এই অন্যায় ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান তারা। রেলের এই অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির আন্দোলন এখন আর তার একার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এই আন্দোলন এই ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। তারা সাথে ‘দুর্নীতির কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় দুর্নীতির ঠাঁই নেই’। এসব নানা সেøাগানে সেøাগানে রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবাদ করা হয়।
রনির ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আবারও অবস্থান নেন তিনি। শুরুতেই রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীসহ আনসার সদস্যদের বাধার মুখে পড়েন তিনি। এরপর তার সঙ্গে শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হন। বাধা পেরিয়ে আবারও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মূল ফটকে বসে পড়েন ঢাবি শিক্ষার্থী রনিসহ শতাধিক আন্দোলনকারী। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার সুমন। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এসময় আন্দোলনকারীরা সেøাগান দিতে থাকেন। কমলাপুরে রনির পাশে ঢাবি শিক্ষার্থীরাও, সেøাগানে সেøাগানে প্রতিবাদ জানান তারা।
গত ৭ জুলাই রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর স্টেশনে অবস্থান নেন মহিউদ্দিন রনি। ১৩ দিন ধরে তিনি সেখানে অবস্থান করেন। শুরুতে একা আন্দোলনে নামলেও পরে তার বন্ধু, সহপাঠীসহ আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও তাতে অংশ নেন। সেখানে অবস্থান নিয়ে গান, কবিতা, পথনাটক ও দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান তারা। এদিকে সহজ ডটকমের বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগও করেন রনি। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গত বুধবার এক শুনানিতে সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিকার। এ জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ পাবেন ভুক্তভোগী রনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি রেলওয়ের ও সহজ ডট কমের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ৬ দফা দাবিতে যে স্মারকলিপি দিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত ১৯ জুলাই রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় দাবির বিষয়ে বক্তব্য জানতে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয় রনি।
অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে ৬ দফা দাবিসহ স্মারকলিপি দেয়ার বিষয়ে জবাব দিয়েছে। রেলওয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকেটিং চালু। প্রাথমিকভাবে স্টেশগুলোতে স্ট্যান্ড এলোন সিস্টেমে টিকেটিং চালু হলেও সময়ের পরিক্রমায় ও ডিজিটাল পদ্ধতির আধুনিকতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে সর্বাধুনিক টেকনোলজিক্যাল কৌশলের মাধ্যমে ৮৩টি স্টেশনে টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সহজ লিমিটেড জেভি বর্তমানে রেলওয়ের টিকিটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে। টিকিট ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়মিত মনিটরিং করা হয় এবং যাত্রী হয়রানির কোনো অভিযোগ রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলে তা তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
রেলওয়েতে টিকিট কালোবাজারীর বিরুদ্ধে নানাবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। টিকিটের ওপর যাত্রীর নাম, এনআইডি নম্বর, বয়স, ও জেন্ডার উল্লেখ থাকে যাতে একজনের নামে ক্রয় করা টিকিটে অন্যজন ভ্রমণ করতে না পারে। তাছাড়া অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সাতদিনে সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি রেলওয়ের টিকিট ক্রয় করতে না পারে, টিকিটিং সিস্টেমে সে ব্যবস্থা রাখা আছে। ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ সেøাগান বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করাসহ নানা বিষয় জানানো হয়।
এদিকে, কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অবৈধভাবে রাখা ২০০ টিকিটসহ জিয়াউর রহমান নামে এক বুকিং সহকারীকে আটক করেছে। রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মহিউদ্দিন মুকুল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কাউন্টার থেকে টিকিটসহ তাকে আটক করেন। টিআই মহিউদ্দিন মুকুল জানান, কালোবাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রির উদ্দেশ্যে টিকিট মজুদ করেন বুকিং সহকারী জিয়াউর রহমান। প্রায় ২শ’ টিকিটসহ আটকের পর তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তারাই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।