মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাস মহামারী ছড়িয়ে পড়লে সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যাপক লকডাউন ও কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে ‘জিরো কোভিড’ পলিসি বাস্তবায়ন শুরু করে চীন, কিন্তু আদতে তা দেশের অর্থনীতির গতিকে স্লোথ করে দিয়েছে।
ন্যাশনাল ব্যুরো অব চীনের গত শুক্রবার প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, একটি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে চীনের অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমে গেছে। অর্থনীতিবিদরা যা আশা করেছিলেন তার চেয়েও খারাপ অবস্থা হয়েছে এবং ২০২০ সালের প্রথম তিনমাস থেকে প্রবৃদ্ধির ধীরগতি চলছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, উল্লেখযোগ্যভাবে ২০২০ সালের শুরুতেই কোভিড-১৯ শুরুর পর মহামারীর প্রাথমিক পর্যায় মোকাবিলায় বাজারগুরো পুরোদমে বন্ধ করে দেয় চীনের সরকার। দেশটির অর্থনীতি প্রথমবারের মতো ২৮ বছরের মধ্যে নিচে নেমে গেছে। বেকারত্ব, হাউজিং মার্কেট এবং ছোট ছোট ব্যবসাগুলোতে এখনও বিশৃঙ্খল অবস্থা রয়েছে।
হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এবং আএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ কেনেথ রগফ বলেন, “চীন বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে কখনই ছিটকে পড়েনি। কিন্তু এখন বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির মূল উৎসের অবস্থানে নেই। দীর্ঘমেয়াদী মৌলিক বিষয়গুলো পরবর্তী দশকে অনেক ধীর প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।”
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা চিন্তা করে গত মে মাসে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন। বৈঠকে যে কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়, তা বছরজুড়ে আগের মতো ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে চীনের সক্ষমতার সন্দেহ প্রকাশ করে।
চীনের মন্থর প্রবৃদ্ধি ইতোমধ্যে ভঙ্গুর বিশ্ব অর্থনীতিকে জটিল করে তুলেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়েছে। ইউরোপজুড়ে সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের আগের মুহূর্তে চীন সস্তা উত্পাদন ও সরবরাহ না থাকা বাজারের ভোক্তার মাধ্যমে আর্থিক চাপ কমানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু চীনের প্রবৃদ্ধি শিগগিরই বাড়ছে না। সাম্প্রতিক বছরগুলো কোভিড বিধিনিষেধ ও অন্যান্য নীতি দেশের মন্দাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বেইজিংয়ের একটি দোকানের মালিক ঝেং জিংরং হাতে তৈরি আমদানি করা কাপড় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, “এক মাসে সাধারণত দেড়শ থেকে ২০০ পিস পোশাক বিক্রি করেছেন তিনি। মে মাসে তিনি ২০টি পোশাক বিক্রি করেছিলেন। তার নিয়মিত গ্রাহকরাও আর আসে না। লোকেরা সাধারণত বাইরে যেতে অনিচ্ছুক। মহামারীর প্রতিটি বছর ‘আগের বছরের চেয়ে খারাপ’ হয়েছে।”
জিংরং আরও বলেন, ৩০০টিরও বেশি দোকান তার দোকানের মতো একইভাবে ব্যবসা করত। আশেপাশের রাস্তা, গলিপথে, খাবারের স্টল, ক্যাফে এবং বার ভরা ছিল একসময়। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ২০ শতাংশ বন্ধ হয়ে গেছে।
বেইজিংয়ে ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসা এ দোকানি বলেন, “১৯৮০ এর দশক থেকে চীনের অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটেছে এবং অর্থনীতি সবসময় উপরের সূচকে ছিল। কিন্তু এখন তা স্পষ্টতই নিচের দিকে ঝুঁকছে।”
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।