Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পের মতে ক্যাস্ট্রো ছিলেন স্বৈরশাসক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কিউবার বিপ্লবের নেতা থেকে বিশ্বজুড়ে সাম্যবাদের স্বপ্নচারীদের নায়ক হয়ে ওঠা ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক বলে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে চলা ট্রাম্প বলেছেন, কিউবাবাসী এখন আরো মুক্ত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবেন বলে আশা করছেন তিনি। ১৯৫৯ সালে সশস্ত্র অভ্যুত্থানে সামরিক শাসক জেনারেল বাতিস্তাকে হটিয়ে কিউবার ক্ষমতায় এসে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন ফিদেল ক্যাস্ট্রো। এরপর পাঁচ দশক যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এগিয়ে যান তিনি। ক্যারিবীয় সাগর এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধনীদের বিনোদন কেন্দ্র কিউবাকে পুরোপুরি বদলে দেন ফিদেল। কিউবার অধিকাংশ মানুষ দেশকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার নায়ক হিসেবে দেখেন ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে। অপরদিকে সমালোচকরা তাকে দেখেন স্বৈরশাসক হিসেবে। ফিদেলের ছোট ভাই কিউবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ট্রো স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কিউবা বিপ্লবের কমান্ডারের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন। পরে এক বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কিউবা একটি কর্তৃত্ববাদী দ্বীপ হিসেবে থাকলেও এটা আশা করা যায় যে, দীর্ঘদিন চেপে থাকা বিভীষিকা থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়ার শুরুর দিন হতে পারে আজ। এটা এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া যেখানে চমৎকার কিউবাবাসী শেষপর্যন্ত স্বাধীনতা নিয়ে বাস করতে পারে, যা তাদের প্রাপ্য। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধ নিয়ে যখন উত্তেজনা বাড়ছিল সে সময় ১৯৬১ সালে কিউবার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্কে ছেদ টানে ওয়াশিংটন। আরোপ করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, যা অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে চলে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। ২০১৫ সালে পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ওয়াশিংটন-হাভানা। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প কিউবা নিয়ে ওবামার নীতির সমালোচনা করলেও বিবৃতিতে তা পাল্টানোর কথা বলেননি। কট্টরপন্থী রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্প বলেছেন, কিউবানরা যাতে সমৃদ্ধি ও স্বাধীনতার দিকে যাত্রা শুরু করতে পারে তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব করবে তার প্রশাসন। তবে ওবামা বলেছেন, ইতিহাসই ফিদেলের কাজের মূল্যায়ন করবে। এই সময়ে আমেরিকা কিউবার জনগণের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০৬ সালে ভাইয়ের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে রাজনীতি থেকে অবসরে ছিলেন ফিদেল ক্যাস্ট্রো। তার মৃত্যুর খবরে হাভানায় অনেকে শোক বিহ্বল হয়ে পড়েন। আমি সবসময় বলছিলাম, এটা হতে পারে না। তারা এখন এটা বলছে, কিন্তু আমি বলছিÑ এটা হতে পারে না, বিবিসিকে বলেন এক নারী সরকারি কর্মকর্তা। বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিন্ন মতাবলম্বী কিউবানদের গ্রুপ লেডিজ ইন হোয়াইট এক টুইটে লিখেছে, ঈশ্বর তাকে ক্ষমা করতে পারেন, আমি করব না। কারাবন্দি ভিন্ন মতাবলম্বীদের স্ত্রীরা এই গ্রুপ গঠন করেছিলেন। ফিদেলের মৃত্যুর খবরে উল্লাস হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে, এই শহরে দেশত্যাগী কিউবানদের একটি বড় অংশের বসবাস। ক্ষমতায় আসার কয়েক বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতির একনিষ্ঠ সমালোচক হয়ে ওঠেন ফিদেল। ওয়াশিংটনের দীর্ঘকালীন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সামরিক অভিযানের ধারাবাহিক হুমকির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরের দ্বীপ দেশ কিউবায় কমিউনিস্ট বিপ্লব এগিয়ে নেন তিনি। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ