Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেশেই অরক্ষিত প্রবাসীরা

বেহাত হচ্ছে স্থাবর সম্পত্তি মিথ্যা মামলায় হয়রানি

সাঈদ আহমেদ | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০৫ এএম

নিজ দেশেই নিগৃহীত হচ্ছেন প্রবাসীরা। স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশে ফিরে তারা নিপতিত হচ্ছেন নানাবিধ জটিল সমস্যায়।তাদের শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে বাংলাদেশ বছরে গড়ে দেড় হাজার কোটির বেশি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাচ্ছে। তাদের প্রত্যক্ষ অবদানেই দেশের অর্থনীতিতে আজকের এই অগ্রযাত্রা। তাদের কারণেই পরিবার এবং সমাজেও বিকৃত হচ্ছে স্বচ্ছলতার আলোর ঝলক। কিন্তু স্বজন এবং দেশ তাদের কি দিচ্ছে? বরং এই ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’রাই যখন দারুণ ব্যাকুলতায় দেশের মাটিতে পা রাখছেন, তখন শিকার হচ্ছেন বহুমাত্রিক নিগ্রহের। বিশেষত: তাদের সম্পত্তি স্বজন-প্রতিবেশীদের দ্বারা বেহাত হয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হচ্ছে মিথ্যা মামলা। এ ছাড়া তারা দেশে অবস্থানকালে অন্তত: ৭ ধরনের সাধারণ (কমন) সঙ্কটে পড়ে বহুমাত্রিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে, পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানি। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ডেলিভারি পেতে ভোগান্তি। ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও বিমানযাত্রায় ভোগান্তি। ভূমি অফিসের দুর্নীতি ও হয়রানি। জরিপ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, হয়রানি। জায়গা-জমি, বাসাবাড়ি, স্থাবর সম্পত্তির নামজারি, ক্রয়-বিক্রয় ও হস্তান্তরে দালালদের দৌরাত্ম্য। পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নামে ভুয়া রেকর্ডপত্র দ্বারা প্রতারিত হওয়া। সন্তানের বিয়েশাদীর প্রশ্নে স্বজনপাড়া-প্রতিবেশীদের চক্রান্ত, বাড়ির কেয়ারটেকার-ম্যানেজার দ্বারা নানামুখী প্রতারণা শিকার হওয়া এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসার ভূতুরে বিল প্রাপ্তি, সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি ও হয়রানি।

এসব কারণে স্বল্পদিনের জন্য দেশে অবস্থান করলেও তাদের জীবন হয়ে উঠছে অতিষ্ঠ। অরক্ষিত, অনিরাপদ, কখনও কখনও দারুণরকম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে নিজ দেশে অবস্থান। তাদের অধিকার ও স্বার্থরক্ষা এবং নিরাপত্তা বিধানে নেই, কার্যকর কোনো কর্তৃপক্ষ। দৃশ্যমান নয় বিশেষ কোনো উদ্যোগও। সরকারি যে উদ্যোগের কথা প্রচারিত হয়, তা শুধু কেতাবে আছেÑ কাজে নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতা, প্রাতিষ্ঠানিক নৈরাজ্য, দুর্নীতি, সামাজিক অস্থিরতা, স্বজনদের লোভ, প্রতিহিংসা, পারিবারিক কলহসহ নানা কারণ এ জন্য দায়ী। প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার তথা রাষ্ট্রের। দেশে অবস্থানকালে প্রবাসীদের জীবন নির্বিঘ্ন, স্বস্তিদায়ক করা রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। কিন্তু সেই দায়িত্ব কতটা প্রতিপালিত হচ্ছে?

রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন এক কোটি ৬০ লাখ প্রবাসী : বিশ্বের ১৫৯টি দেশে ৮৮ লাখ ৮৭ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে এ সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি। বিদেশ-বিভুঁইয়ে নিজ দক্ষতা, যোগ্যতা ও কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট দেশটিতে অপরিহার্যতা সৃষ্টি করেছেন তারা। তাদের শ্রম ও ঘামে পরিবার-স্বজনদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত হচ্ছে। ২০১৫ সালে একটি বেসরকারি সংস্থা হিসেব দেখিয়েছিল যে, প্রবাসীরা ওই বছর ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার পাঠান। এটি ছিল ওই বছর জাতীয় বাজেটের প্রায় অর্ধেক। প্রবাসীদের পাঠানো এ অর্থের গড় পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। বিগত অর্থ বছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২১৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। চলতি বছর এপ্রিলে তারা দেশে পাঠান ২০১ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। মে মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ মার্কিন ডলার।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মানুষ প্রথম বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে। জাহাজ পরিচালনাসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখায় গ্রেট ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের শ্রমবাজার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর শ্রমবাজার বিস্তৃত হয়Ñ ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এমনকি এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। শ্রমঘন দীর্ঘ প্রবাস জীবনের ক্লান্তি ঘোচাতে এসব দেশ থেকে স্বল্প সময়ের জন্য ছুটে আসেন নিজ দেশে। উদ্দেশ্য বিশ্রাম, পরিবার-পরিজন, স্বজনদের সান্নিধ্যে কিছুটা সময় কাটানো। ভিসা, টিকিট ও ছুটির মেয়াদের মধ্যেই তারা বিমর্ষচিত্তে ফিরে যান বিদেশের কর্মস্থলে। সঙ্গে নিয়ে যান দেশে অবস্থানকালিন বিভীষিকাময় স্মৃতি।

স্বজন-প্রতিবেশীদের দ্বারা বেহাত হয় সম্পত্তি : ২৪ বছর ধরে ইতালিপ্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের মো: তাজুল ইসলাম এসেছিলেন ছুটিতে। এসেই দেখেন ২৪ শতাংশের একটি পুকুর এবং বসতবাড়ি সংলগ্ন ১১ শতাংশ জমি বেদখল হয়ে গেছে। বাংলাদেশ দূতাবাসে করা তাজুলের অভিযোগ থেকে জানা যায়, তারই ভাতিজা ছদর উদ্দিন মানিক ও তার পরিবারের অন্যরা মিলে এই সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন। ছদর উদ্দিন মানিক ঢাকা কাস্টমস বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি তাজুলের জমির লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়েছেন। একটি জমিতে দোকান তুলে দখল করে নিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তা ছদর উদ্দিন মানিকের প্রভাবে পুলিশ তার জমি ও পুকুর দখলমুক্ত করার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে নাÑ মর্মে অভিযোগ তাজুলের। তার ৪১ শতাংশের আরও একটি জমি দখল করে নিয়েছেন আরেক ভাই আবু তাহের।

দুলালের মতো প্রবাসী তাজুলের মালিকানাধীন ৪১ শতাংশ পরিমাণের আরেকটি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের হাজি গণি মিয়ার ছেলে আরস মিয়া। লিজের জায়গায় আরসের অনুমতি ছাড়াই দোকান দিয়েছেন তাজুলের আরেক বড় ভাই আবু তাহের। জমিটি তিনি লিজ দিয়েছিলেন স্থানীয় দুলাল মিয়াকে। লিজগ্রহিতাও ওই জমি ভোগ-দখল করতে পারছেন না। ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে তাজুলের পক্ষে মামলা করেন লিজগ্রহিতা দুলাল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত মামলায় ছদর উদ্দিনসহ ৪ জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান না দেখেই ইতালি পাড়ি দিতে হয় মো: তাজুল ইসলামকে।

একই ঘটনা নারায়ণগঞ্জ সোনার গাঁওয়ের সউদী প্রবাসী মাহফুজুর রহমানের। স্থানীয় সালিশের সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়ায় এ বিষয়ে তিনি পুলিশের শরণাপন্ন হন। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের দফতরে দেয়া অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মাহফুজুর রহমান সোনারগাঁ উপজেলার হাড়িয়া চৌধুরীপাড়া এলাকায় ২৭ শতাংশ জমি কিনে ঘর তোলেন। কিন্তু সম্প্রতি স্থানীয় ভাবশালী আবুল কাশেম, আবদুল আউয়াল, রূহুল আমিন, ইদ্রি মিয়া, খালেদা, আবদুল হাই ও আনিছ ওই জমি থেকে সোয়া ৩ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছেন। এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিকার চাওয়া হয়। সালিশ বৈঠকে চেয়ারম্যান দলিলপত্র যাচাই করে আবুল কাশেম গংকে দখলকৃত জমি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সালিশের রায় না মেনে এলেও প্রভাবশালীরা উল্টো প্রবাসীকে হুমকি দিয়ে দিতে থাকেন। যদিও আবুল কাশেম জমি নিজের দাবি করে বলেন,জমি দখলের অভিযোগ মিথ্যা।

কিশোরগঞ্জ, ভৈরবের ইতালি প্রবাসী মো: নবী হোসেনের জামি প্রতারণামূলকভাবে দলিল করে দখলে নিয়েছেন তারই ভগ্নিপতি মো: আব্দুল হক চিশতী। সম্প্রতি এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন নবী হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেৎলনে তিনি জানান, ভৈরব বঙ্গবন্ধু সড়কের ভিআইপি প্লাজার পেছনে জমি কিনতে তিনি ভগ্নিপতি আবদুল হক চিশতী ৩ লাখ টাকা দেন। পরবর্তীতে ইতালি গিয়ে তিনি আরও ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাঠান। দেশে ফিরে তিনি জানতে পারেন ওই জমি তার ভগ্নিপতির নামে সাবকবলা দলিল করা হয়েছে। নবী হোসেন সামাজিক সালিশের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করলে ২ শতাংশ জমি তাকে লিখে দেন আব্দুল হক। বাকি ১.৫০ শতাংশ জমি লিখে না দিয়ে উল্টো নানাবিধ ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। শুধু একজন তাজুল কিংবা একজন নবী হোসেন নয়। তাদের মতো হাজারও প্রবাসীর স্থাবর সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে নানা কৌশলে।

মিথ্যা মামলায় হয়রানি : ২২ বছর প্রবাস জীবন যাপন শেষে দেশে ফিরেই প্রথম হামলার শিকার এবং পরে উল্টো মামলার আসামিও হয়েছেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আলীগাঁও গ্রামের নূরে আলম। একই মামলায় আসামি করা হয়েছে তার পরিবারের সদস্যদেরও। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন আলম। জামিনে মুক্তি পেলেও চরম নিরাপত্তাহীনতায় রযেছেন তার স্ত্রী ও দুই সন্তান। প্রতিপক্ষের রোষাণলে পড়ে তিনি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন বলে দাবি প্রবাসী নূরে আলমের। স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তিনি বিদেশে থাকায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী ১৬০ শতাংশ (এক কানি) জমি কয়েক বছর ধরে একসনা লিজ নিয়ে চাষাবাদ করছিলেন তার স্ত্রী শেলিনা বেগম। গত বছর বছরে তার লিজ নেয়া জমিটুকু বাগিয়ে নেন প্রতিবেশী হারুন। স্থানীয় বাজারে সাক্ষাৎ পেয়ে এ বিষয়ে হারুনের কাছ থেকে জানতে চান নূরে আলম। এ সময় দলবল নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান হারুন। খবর পেয়ে শেলিনা বেগম স্বামী নূরে আলমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তাদের আটক করে একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা ইসমাইল, হামলাকারী হারুন, মাসুদ। এখানে তারা নূরে আলমের কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে সমঝোতা করে দেয়ার কথা বলে ‘সালিশ অচলনামা’য় স্বাক্ষর করে তাদের বাড়ি ফিরিয়ে দেন। অবস্থা গুরুতর হলে রাতে নূরে আলমকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করা হলে ফের গতি রোধ করা হয়। নূরে আলমকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা মোবাইল সেট, ঘরি, নগদ টাকা ও স্ত্রীর স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার রাতেই ঘায়েল করতে হারুনের ভাই জাফর বেপারি বাদী হয়ে নূরে আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা ঠুকে দেন। ওই মামলায় স্ত্রী সেলিনাকে বিশেষ বিবেচনায় জামিন দিলেও কয়েক দিন কারাভোগ করতে হয় নূরে আলমকে।

দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে গ্রিস থেকে দেশেই থিতু হতে চেয়েছিলেন মাদারিপুর সদর উপজেলার কালিতলা বাজারের দ্বীন ইসলাম। দেশে ফিরে তিনি ইট-রড-সিমেন্টের ব্যবসা খুলেছিলেন। এলাকার রঘুরামপুর গ্রামের সউদী প্রবাসীর বাড়ি নির্মাণে বাকিতে রড-সিমেন্ট সাপ্লাই দিয়েছিলেন দ্বীন ইসলাম। নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের পর ১৫ লাখ টাকার পেমেন্ট নিয়েছিলেন চেকের মাধ্যমে। চেক ব্যাংকে জমা দিয়ে দেখেন টাকা নেই। একাধিকবার পাওনা টাকা চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি এনআই অ্যাক্টে মামলা করেন। এ মামলার ২ মাস পর ক্ষিপ্ত হয়ে সউদী প্রবাসীর মেয়েকে বাদী করে ধর্ষণ মামলা করেন দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি জানান, আমার টাকা না দেয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দেয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।

মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ নোয়াখালী বেগমগঞ্জের সউদী প্রবাসী মো: আলাউদ্দিনের। তিনি উপজেলার মাধবাসিংহ হ্রামের মৃত হাজী শাহ আলমের পুত্র। ২৪ বছর সউদীর রিয়াদে কাজ করছেন। স্থানীয় বাকিপুর গ্রামের বিশ্বজিৎ ভৌমিকের সঙ্গে যৌথমালিকানায় তিনি পেট্রল পাম্পের ব্যবসা শুরু করেন। আলাউদ্দিন বিদেশে থাকায় সমস্ত ব্যবসার দায়-দায়িত্ব দিয়ে রাখেন বিশ্বজিৎ ভৌমিককেই। কিন্তু বিশ্বজিৎ ভৌমিক পেট্রল পাম্প ব্যাংকে বন্ধক রেখে বিপুল অংকের ঋণ নেয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে আরও ২২ লাখ টাকা ঋণ নেন। কিন্তু এই ঋণের টাকা শোধ না করে ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করে। অন্য দিকে লোকসান দেখিয়ে পাম্পটি বন্ধ করে দেন। এক সময় অজ্ঞাত কারণে বিশ্বজিৎ আত্মহত্যা করেন। আলাউদ্দিনের দাবি, বিশ্বজিতের ওয়ারিশদের যাতে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না হয়, এ লক্ষ্যে তার মেয়ে অনামিকা ভৌমিক বাদী হয়ে প্রবাসী আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলায় তাকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচণাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। স্থানীয় কুচক্রীদের প্ররোচণায় আত্মহত্যার এক সপ্তাহ পরে এ মামলা হয়। আলাউদ্দিন সউদী চলে গেলে এ মামলায় তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে চার্জশিট হয়ে যায়। নূরে আলম কিংবা আলাউদ্দিনের মতো হাজারও প্রবাসী দেশে এসে শিকার হচ্ছেন হয়রানিমূলক মামলার। দেশে থেকে ‘তদবির’ করতে না পারায় মিথ্যা মামলায় হয়ে যাচ্ছে চার্জশিটও।



 

Show all comments
  • Nazmul Islam Nazim ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৩১ এএম says : 0
    একসময়ের পতিত ভাঙ্গাচুরা দেশ গড়ে উঠেছে বড় বড় বিল্ডিং মার্কেট পাঁচতারকা হোটেল অবকাঠামো গুলোতে তাও এই প্রবাসীদের জন্য কিন্তু সরকার এই আমাদের জন্য তেমন কিছুই করে নাই বিদেশে আর দেশে সব সময় আমরা নিজেদের জন্য নিজেরাই সংগ্রাম করি, আ র সরকার বছর বছর দেয় বড় বড় লেকচার লুটেপুটে লুফে নেয় মুনাফা গুলো,
    Total Reply(0) Reply
  • Mahabub Islam ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৩১ এএম says : 0
    প্রবাসীরা বিদেশে যে ভাবে পরিশ্রম করে দেশে যদি করতে পারে তাহলে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন নেই
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Mohammed ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৩৪ এএম says : 0
    এত দেশে যাই মাল নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না নিজের দেশে নিজের মাতৃভূমিতে গিয়ে যেই সমস্যা পোহাতে হয় এই গুলা সহ্য করা যায়না
    Total Reply(0) Reply
  • Lovly Love ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৩৩ এএম says : 0
    প্রবাসীদের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে ভাই আপনি সরকারের নীতি নির্ধারণের উপর মহল পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করুন দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করুন তখনই হবে না আপনারা সফল
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Dost Mohammad Khan ১৭ জুলাই, ২০২২, ৪:২৬ এএম says : 0
    Probashi Cell in the Police Head Quarter, Probashi Cell with D.C's, and Probashi Ministry are mostly useless in Bangladesh.I am a victim and have at least 19 years of First-hand experience. Ultimately it is the local police who investigate.Unfortunately; Police and Upa-zella Administration and the M.P's are equal partners with land grabbers, rapists and serial killers.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Jamal Mohammed Jamal ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৩৪ এএম says : 0
    কি বলব হাইরে বাংলাদেশের মানুষ আল্লাহতালার ভয় তাদের ভিতর নাই আল্লাহ তাদের হেদায়েত করেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ