নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যুক্তরাষ্ট্রের ইউজিনে চলছে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ। ৩৬ বছর বয়সেও তাই এই প্রতিযোগিতায় খেলতে চেয়েছিলেন, চেয়েছিলেন ঘরের মাঠেই শেষ বিদায়টা বলতে। আলিসন ফেলিক্সের সেই আকুতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে একটি মাত্র ইভেন্ট ১০০ মিটার রিলেতে তাকে অন্তর্ভূক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানেজমেন্ট। তবে তাদের হতাশ করেন নি, দেশকে ব্রোঞ্জ জিতিয়েছেন ফেলিক্স। আর তাতেই শেষ হলো প্রায় দুই দশকের সোনালি ক্যারিয়ারের পথচলা। অলিম্পিক ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল এই নারী অ্যাথলেটের বড় মঞ্চে শেষটা পদক বিচারে সোনায় মোড়ানো না হলেও তার ক্যারিয়ার যে কোনো উঠতি নারী অ্যাথলেটের জন্য উদাহরণ।
একহারা গড়ন ও সরু পায়ের জন্য স্কুলে থাকতে ফেলিক্সকে ডাকা হতো ‘চিকেন লেগস’। ২০০৩ বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে শুরু ক্যারিয়ারে অলিম্পিক ও বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ মিলিয়ে জিতেছেন ৩০টি আন্তর্জাতিক পদক, এর মধ্যে ২০টি সোনার পদক। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১৯ এবং অলিম্পিকে ১১ পদক জিতেছেন ফেলিক্স। ছেলে ও মেয়ে মিলিয়ে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে সফলতম এই অ্যাথলেটকে নায়কোচিতও বিদায়ই দিয়েছেন দর্শকেরা। ব্রোঞ্জপদক নিজের মেয়ের গলায় ঝুলিয়ে আমেরিকান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের এই ‘রানি’ বলেন, ‘ঘরের দর্শকদের সামনে নিজের শেষ দৌড়টা দৌড়াতে পারা বিশেষ কিছু। আমার মেয়েও গ্যালারিতে ছিল। এই রাতটা আমি মনে রাখব। অসাধারণ এক অভিযাত্রা! অনেক উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু খেলাটা সব সময় ভালোবেসেছি। ঘরের দর্শকদের সামনে শেষ করতে পারাটা অনেকটাই বৃত্তপূরণের মতো।’
২০০১ সালে বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটার দৌড় জিতে নজর কাড়েন ফেলিক্স। ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকের ২০০ মিটার দৌড়ে জিতে নেন রৌপ্যপদক। পরের বছর হেলসিংকিতে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ২০০ মিটার দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে হইচই ফেলে দেন। এরপর ২০১৩ মস্কো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ বাদে প্রায় সব বড় মঞ্চেই ২০০ মিটার ও ৪০০ মিটার দৌড়ে দাপট দেখিয়েছেন ফেলিক্স। এক সময়ের লাজুক স্বভাবের ফেলিক্স ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে অ্যাথলেটদের মাতৃত্বে বিভিন্ন সুযোগসুবিধা নিয়ে জোর আওয়াজ তুলতে শুরু করেন। ২০১৮ সালে কন্যাসন্তান ক্যামরিনের জন্মের সময় তার এবং সদ্যজাত শিশুর জীবন হুমকির মুখে পড়েছিল। বেশ কিছুদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল তার সন্তানকে। মাতৃত্বকালীন সময়ে পারিশ্রমিক কাটায় স্পনসর প্রতিষ্ঠান নাইকির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নও করেছিলেন ফেলিক্স। অবসরের পর লিঙ্গবৈষম্যের অবসান ঘটাতে কাজ করবেন ফেলিক্স। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে নারী অ্যাথলেটদের পক্ষে সব সময়ই জোরাল ছিল তার গলা। যুক্তরাষ্ট্রের দুবারের শটপুট অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন রায়ান ক্রাউসার ফেলিক্সকে বিদায় বেলায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এভাবে, ‘খেলাটির জন্য, বিশেষ করে নারী অ্যাথলেটদের ক্ষেত্রে তার অনেক অবদান। গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় তিনি সামনে নিয়ে এসেছেন। একজন অসাধারণ অ্যাথলেট এবং অসাধারণ মানুষও।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।