Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির দেখা পাচ্ছে না আসিয়ান অঞ্চলের অর্থনীতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

চলতি বছরের প্রথমার্ধে পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি করেছে আসিয়ানভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশ। কভিড নীতিমালা শিথিলের কারণে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের মতো দেশ। কিন্তু সাম্প্রতিক বেশকিছু ঘটনায় বছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য পূর্বাভাস সংশোধন করেছেন অর্থনীতিবিদরা। যুক্তরাষ্ট্রের সুদহার বৃদ্ধি ও বেশির ভাগ দেশে উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে বেশ কয়েকটি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস অবনয়ন করেছেন তারা। খবর নিক্কেই এশিয়া। জাপান সেন্টার ফর ইকোনমিক রিসার্চ (জেসিইআর) ও নিক্কেইর যৌথ পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২২ সালে ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পাঁচ বৃহৎ সদস্য ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড। এর আগে মার্চে দেয়া প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসের চেয়ে যা শূন্য দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনয়ন, ব্যবসায়িক কার্যক্রম বৃদ্ধি ও বিদেশী পর্যটক গ্রহণের মাধ্যমে এশীয় অর্থনীতিগুলো মহামারী থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এর প্রভাব পড়েছে আসিয়ানের কয়েকটি অর্থনীতিতে। ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনা ৫ দশমিক ১ শতাংশ। মার্চের পূর্বাভাসে যেখানে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। এদিকে ফিলিপাইনের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আগে ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। থাইল্যান্ডের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৩ দশমিক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। ব্যাংক মেব্যাংক ইন্দোনেশিয়ার চিপ ইকোনমিস্ট জুনিমান বলেন, কভিড সংক্রমণ হ্রাস, বিভিন্ন দেশের রফতানি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। তবে আসিয়ানভুক্ত সব দেশের জন্য ইতিবাচক আভাস দেয়া হয়নি জেসিইআরের প্রাক্কলনে। কয়েকটি দেশের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৬ শতাংশ। এর আগের পূর্বাভাসে যেখানে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। সিঙ্গাপুরের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ দশমিক ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। পূর্বাভাসে সবচেয়ে লক্ষণীয় অবনয়ন ঘটেছে ভারতের। এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির জিডিপি প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। জেসিইআর ও নিক্কেইর জরিপে দেখা গেছে, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় বেশির ভাগ দেশেরই প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। এতে বড় প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। গত ১৫ জুন বেঞ্চমার্ক সুদের হার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৯৯৪ সালের নভেম্বরের পর এটা ছিল ফেডের সর্বোচ্চ সুদহার বৃদ্ধি। ৪০ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে এ পলিসি নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ১ দশমিক ৭ শতাংশ করে ফেড। এর আগে গত মার্চে ২ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পলিসিগত সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ছে এশীয় অর্থনীতিগুলোয়। এশিয়ার বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়াচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছে ভারত। তার পরই রয়েছে মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন। মালয়েশিয়ার কেএএফ রিসার্চের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ভিনসেন্ট লু ইয়ং হং জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এ উচ্চ সুদহার বৃদ্ধিতে অনেক দেশেই শ্লথগতি বা মন্দা দেখা দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনেও শ্লথগতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের লকডাউনে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানুফ্যাকচারিং হাবটির সরবরাহ চেইনে সংকট দেখা দিয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে পাঁচ মাস ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব। এতে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধ এশিয়ার অনেক দেশের জন্যই শঙ্কা নিয়ে হাজির হয়েছে। নিক্কেই এশিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির দেখা পাচ্ছে না আসিয়ান অঞ্চলের অর্থনীতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ