বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে বরিশালÑফরিদপুরÑঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণস্থানে নিত্যকার যানযট ঈদকে সামনে রেখে আরো প্রকটাকার ধারন করেছে। ফলে বরিশাল বিভাগীয় সদর থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দুরের ঢাকা এখনো অনেক দুরেই রয়ে গেছে। দেশের ৮ নম্বর এ জাতীয় মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করার প্রকল্প এখনো কাগজেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এখন এ মহাসড়কের বরিশালÑভাংগা অংশের ৯৫ কিলোমিটারের সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ অংশেই তীব্র যানযটে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত নাকাল হচ্ছেন। গত ৪ জুন বরিশালÑফরিদপুর মহাসড়কের ভাংগা’র উভয় প্রান্তে প্রায় ৫ কিলোমিটার যানযট সৃষ্টি হয়।
এমনকি বরিশাল থেকে ভাংগা পর্যন্ত মাত্র ৯৫ কিলোমিটার মহাসড়ক অতিক্রম করতেই সাড়ে ৩ ঘন্টারও বেশী লেগে যাচ্ছে। প্রায় ৬০ বছরের পুরনো অপ্রসস্ত মহাসড়কের সাথে কিছু যানবাহন চালকদের সেচ্ছাচারিতা সহ নিয়ম না মানার প্রতিযোগীতার মধ্যে আইনÑশৃংখলা বাহিনীর যথাযথ দায়িত্ব পালনে উদাশীনতায় পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্তরায়ের পাশাপাশি তা ক্রমশ নিয়ন্ত্রনের বাইরেই চলে যাচ্ছে। অথচ এ ৯৫ কিলোমিটার মহা সড়কের গৌরনদীও ভাংগাতে দুটি হাইওয়ে থানাও রয়েছে।
ফরিদপুর থেকে শুরু করে ভাংগা জংশনের মুখেই যানযট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে ভাংগায় বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল মুখি মহাসড়কে যেখানে এক্সপ্রেসওয়ে শেষ, সেখানেই মূল দূর্ভোগ শুরু। ভাংগা বাজারের এ অংশে সব ধরনের থ্রীÑহুইলার সহ স্থানীয় স্বল্প দুরতের¡ যানবাহনগুলো মহাসড়কের ওপরেই যাত্রী ওঠানামা সহ পার্ক করে রাখছে। কম বেশী একই পাস্থিতি টেকরহাট, রাজৈর, মোস্তফাপুর, ভুরঘাটা, গৌরনদী, বাটাজোর, উজিরপুরের টোল প্লাজা এবং বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকাতেও।
পদ্মা সেতু চালু হবার পরে দক্ষিণাঞ্চলমুখি যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে বিশৃংখলা জনদূর্ভোগকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানেই প্রতিয়িত ৫ মিনিট থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত বেশীরভাগ যানবাহনকে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
ফলে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দুরের ঢাকাতে ৪ ঘন্টার মধ্যে পৌছার স্বপ্ন অনেক সময়ই অধরা থেকে যাচ্ছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর কাছে। তবে বরিশালÑঢাকা জাতীয় মহাসড়কের বরিশালÑফরিদপুর অংশের ভাংগা পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটারের এ যানযট শুধু ঢাকা নয়, সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সাথে দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চল ছাড়াও উত্তরবঙ্গ সহ সারা দেশের নির্বিঘœ সড়ক যোগাযোগকেই বিপন্ন করে তুলছে। এ মহাসড়ক ব্যাবহারকারী দুরপাল্লার যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল অংশে রাস্তার ওপর পার্কিং বন্ধের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ সহ হাইওয়ে পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে এ পরিস্থিতি এড়ান সম্ভব। নচেত পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণাঞ্চলবাসীর কাছে অধরাই থেকে যেতে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেছেন কয়েকজন পরিবহন বিশেষজ্ঞ।
অথচ ফরিদপুরÑবরিশালÑপায়রা/ কুয়াকাটা মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নয়নের লক্ষ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ২০১৫ সাল থেকে সম্ভাব্যতা সমিক্ষা সহ বিস্তারিত নকশা প্রনয়ন সম্পন্ন হলেও প্রকল্পটি চরম অনিশ্চয়তার আবর্তে। মহাসড়কটি উন্নয়ন ও পূণঃ নির্মানে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষ প্রকল্পটির জন্য দেশীয় অর্থে ভ’মি অধিগ্রহনে ১৮শ কোটি টাকার ১টি প্রকল্প ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে একনেক-এ অনুমোদন হয়। এ লক্ষ্যে অর্থ বরাদ্ব হলেও প্রকল্প মেয়াদ শেষ হবার পরেও এক শতক জমিও অধিগ্রহন হয়নি। এমনকি অর্থের সংস্থান না হওয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে ফরিদপুর থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১২৪ কিলোমিটার মহাসড়ক৬ লেনে উন্নীত করণের সিদ্ধান্তটিও বাস্তবায়ন হয়নি।
এখন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ২০১৫ সালে করা সম্ভাব্যতা সমিক্ষা সহ নকশার পরিবর্তে নতুন করে সব কিছু করতে বলেছে। কিন্তু খুব দ্রুত সব কিছু করলেও একাজে আরো এক বছর সময় লাগবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। এর পরে প্রকল্পের ডিপিপি একনেক-এর অনুমোদন ও দাতা সংগ্রহে কত বছর লাগবে, তা বলতে পারছেন না কেউ। প্রকল্পের কাজ শুরু আরো বহু দুরে। এ মহাসড়কটি পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত উন্নয়ন না হলে পদ্মা সেতুসহ এক্সপ্রেসওয়ের পরিপূর্ণ সুফল দক্ষিণাঞ্চলে পৌছবে না।
পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব ভাংগা-ভাটিয়াপাড়া-যশোর এবং ভাটিয়াপাড়া খুলনা/মোংলা মহাসড়কগুলো সার্ভিস লেন সহ ৬ লেনে উন্নীত করণের কোন বিকল্প নেই বলেও জানিয়েছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞগন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।