মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানে বিদ্যুৎ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সংকট এতোটাই চরমে পৌঁছেছে যে, দেশটির টেলিকম অপারেটররা তাদের মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইনফরমেশন টেকনোলজি বোর্ড (এনআইবিটি) টুইটারে জানিয়েছে, ‘দেশব্যাপী ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে পাকিস্তানের টেলিকম অপারেটররা। কারণ বিদ্যুতের এই বিভ্রাট তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় নানা সমস্যা ও বাধার সৃষ্টি করছে।’
এদিকে জিও নিউজ জানিয়েছে, সোমবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সতর্ক করে বলেছেন, জুলাই মাসে সমগ্র পাকিস্তান আরও বেশি লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হতে পারে।
তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান প্রয়োজনীয় পরিমাণে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ পাচ্ছে না। তবে তা হাতে পেতে ইসলামাবাদের এই জোট সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের মাসিক জ্বালানি তেলের আমদানি জুন মাসে চার বছরের সর্বোচ্চে অবস্থানে পৌঁছাতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে বর্তমানে তাপপ্রবাহ চলছে এবং এই কারণে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এলএনজি কিনতে কার্যত সংগ্রম করছে শেহবাজ সরকার।
এছাড়া জুলাই মাসের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের চুক্তিতে সম্মত না হওয়ার পর পাকিস্তানে বিদ্যুৎ সংকট ক্রমেই বাড়ছে। মূলত উচ্চ মূল্য এবং কম অংশগ্রহণের কারণে জুলাইয়ের দরপত্র বাতিল করা হয়। অবশ্য লোডশেডিং তথা বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। উল্লেখ্য, বিদেশি ঋণে জর্জরিত পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা নজিরবিহীন সংকটের মধ্যে পড়েছে। বেহাল এই অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার কয়েক দফায় পেট্রোল, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি করেছে।
এর পাশাপাশি পাকিস্তানি রুপির দরে একের পর এক পতন ঘটেছে। সম্প্রতি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে খোলাবাজারে পাকিস্তানি ২১২ রুপির বিনিময়ে মিলছে ১ মার্কিন ডলার। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানি রুপির এমন পতন কখনোই দেখেনি দেশটি।
এমন পরিস্থিতিতে গত জুন মাসের মাঝামাঝিতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেউলিয়া হয়ে যাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কার পথে রয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান সেসময় আরও বলেন, পাকিস্তান যদি বর্তমান অর্থনৈতিক নীতিতে চলতে থাকে, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে আর দেরী নেই।
মূলত গত মে মাস থেকে হু হু করে হ্রাস পেতে শুরু করে পাকিস্তানি রুপির মান। গত ১৯ মে পাকিস্তানে ১ ডলারের বিপরীতে রুপির মান পৌঁছায় ২০০-তে। এরপর থেকে রুপির পতনের সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে নিজেদের মুদ্রার এই পরিমাণ পতন আর দেখেনি পাকিস্তান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।