পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর ডেমরার মধুবাগ ১৯/৫ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলার বাসা থেকে লিয়াকত আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি এবং তার স্ত্রী সীমা সুলতানার (৪৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লিয়কত আলীকে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ও তার স্ত্রী সীমা সুলতানাকে বিছানায় শোয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের জেরে লিয়াকত প্রথমে তার স্ত্রীকে হত্যা করে নিজে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
অন্যদিকে পল্লবীতে যাত্রী সেজে পাঠাও চালককে গলা কেটে হত্যার পর মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় এক ছিনতাইকারী। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পল্লবীর ‘ধ’ ব্লকে এই হত্যাকান্ড ঘটে। হত্যার শিকার মোটরসাইকেল চালকের নাম রাজা মিয়া (৩০)। তিনি রাজধানীতে রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। হত্যাকান্ডে জড়িত ছিনতাইকারী কাউসার আহমেদ (২২)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্বামী-স্ত্রী মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়রা জানান, লিয়াকত আলী ওই বাড়ির নিচতলায় লিমা ফার্মেমি নামে একটি ওষুধের দোকান চালাতেন। বাড়িটিতে তারা গত ২০ বছর ধরে পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, নিহত রাজা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সাইচাকুড়া নন্নী গ্রামের মফিজ মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী-সস্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। গ্রেপ্তার কাউসার আহমেদ (২২) মুন্সীগঞ্জের মাঝিবাড়ির আব্দুল মালেকের ছেলে। সে এক সময় বাস চালকের সহকারী হিসাবে কাজ করত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওসি পারভেজ বলেন, মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে মিরপুরের কালশী মোড় থেকে গাবতলী যেতে পাঠাও চালক রাজার মোটরসাইকেল দেড়শ টাকায় ভাড়া করেন কাউসার। মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে পৌঁছালে পেছনে বসা কাউসার ব্যাগ থেকে অ্যান্টিকাটার দিয়ে চালকের গলায় পোঁচ দেয়। সে সময় রাজা মোটরসাইকেলসহ রাস্তার উপর পড়ে গেলে তার মোবাইল, নগদ টাকাসহ মোটরসাইকেলটি নিয়ে কাউসার পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর সময় বুধবার ভোরে সাভারের বিরুলিয়া চেকপোস্টে কাউসারকে গ্রেফতার করে সাভার থানা পুলিশ। চেকপোস্টে কাউসারকে থামানোর সংকেত দিলে সে মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মোটরসাইকেলে লেগে থাকা রক্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সে পুলিশকে জানায়, চালক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। পরে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে সে মোটরসাইকেল চালককে হত্যার কথা স্বীকার করে।। খবর পেয়ে পল্লবী থানা পুলিশের একটি দল লাশ উদ্ধার এবং কাউসারকে হেফাজতে নেয়। তার কাছ থেকে রাজার মোটরসাইকেল, মোবাইল, হত্যার সময় পরনে থাকা আকাশী রংয়ের শার্ট ও নীল রংয়ের জিন্স উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হত্যাকান্ডে ব্যবহƒত অ্যান্টিকাটারটিও উদ্ধার করা হয়।
কাউসার জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, সে হানিফ এন্টারপ্রাইজের চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করে। সে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তার দাবি, ঋণের টাকা পরিশোধ করতেই সে মোটরসাইকেল চুরির পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অ্যান্টিকাটার দিয়ে রাজা মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালায়। রাজা মিয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
এদিকে বুধবার ডেমরা থানার এসআই মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় রুমের ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগানো ছিলো। ওই ভবনের অনেকেই বাসার সামনে ভিড় করে। পরে পুলিশ সেখানকার লোকজন নিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখে, সুলতানার গলা কাটা লাশ খাটের ওপর শোয়া অবস্থায় ছিল। আর ওই ঘরের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে লিয়াকত আলীর লাশ। লাশ উদ্ধার করে দম্পতির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার রাতেই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠানো হয়। নিহত সীমা সুলতানার বাবার বাড়ি মাগুরা জেলায়। আর লিয়াকত আলীর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলায়। ওই দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে লিমা বিবাহিত, থাকেন স্বামীর বাসায়। ছেলে লিমন কলেজ পড়ুয়া। লিয়াকত আলীর একটি ওষুধের ফামের্সি রয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হলে তাদের ছেলে লিমন মাকে নানার বাড়ি রেখে আসে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিকহলে পুনরায় সীমাকে ডেমরার বাসায় আনা হয় বলে জানান মোজাম্মেল হক।
নিহতের ছেলের লিমনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল হক জানান, ঘটনার আগের রাত থেকে তার বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে লিমন কলেজে যান। বিকালে ফিরে মাকে ডাকতে থাকে। কিন্তু, মায়ের কোনো সাড়া না পেলে সন্দেহ হয় লিমনের। তারপর লিমন ঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙে দেখেন, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে তার বাবা। এরপর বাড়ির মালিককে তিনি খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করে একটি ছুরি ও বটি উদ্ধার করেছে। তবে, মোজাম্মেলের দাবিÑ ওই ছুরি বা বটিতে কোনো রক্তের দাগ ছিল না। এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি হত্যা, আরেটি অপমৃত্যু মামলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।