পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিয়ের জন্য আগের মতোই মেয়েদের কমপক্ষে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর বয়স বেঁধে দিয়ে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন’ করার প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তবে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে এবং বাবা-মায়ের সমর্থনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদেরও বিয়ের সুযোগ রাখা হচ্ছে এই আইনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন- ২০১৬’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮-ই আছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে ২১। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশনাক্রমে এবং মাতা-পিতার সম্মতিক্রমে বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না। বিশেষ প্রেক্ষাপটে বিয়ের ক্ষেত্রে খসড়ায় কোনো বয়স নির্ধারণ করা হয়নি বলেও জানান শফিউল আলম। ‘বিশেষ কেইসের’ জন্য এই বিধান রাখা হয়েছে জানিয়ে শফিউল বলেন, ১৮ বছরের নিচে বিয়ে হলে তা অপরাধ; তবে ‘বিশেষ কেইসের’ ক্ষেত্রে তা হবে না।
এর ব্যাখ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অবিবাহিত মাতা, কিন্তু তার বাচ্চা আছেÑ এ রকম কেইস যদি হয়, এসব ক্ষেত্রে তাকে প্রোটেকশন দেয়ার জন্য এই বিধান করা হয়েছে। কত ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, এজন্য বিয়েগুলো হয়ে যায়। ওটাকে লিগালাইজ করার জন্য এই প্রক্রিয়া। তবে আইনে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটের’ কোনো সংজ্ঞা রাখা হয়নি বলে জানান শফিউল। তিনি বলেন, এটা আদালত নির্ধারণ করবে। বিশেষ প্রেক্ষাপটের ক্ষেত্রে কোনো বয়সও নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। আমাদের দেশে তো ১০-১১ বছরেও পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়। এ সমস্যাগুলো আছে তো, এটার জন্য একটা ব্যবস্থা।
নতুন আইনের খসড়ায় ‘অপ্রাপ্তবয়স্কের’ সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বিবাহের জন্য ২১ বছর পূর্ণ করেননি এমন কোনো পুরুষ এবং ১৮ বছর পূর্ণ করেননি এমন কোনো নারী।
তিনি বলেন, নতুন আইনে বাল্যবিয়ের শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আলাদত নিজ উদ্যোগে অথবা কারও অভিযোগের ভিত্তিতে বিয়েতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে পারবে। ওই নিষেধাজ্ঞা না মানলে ছয় মাসের জেল, ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দ- দেয়া যাবে। মিথ্যা অভিযোগ করলে সর্বোচ্চ ছয় মাস কারাদ-, কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ- দেয়া যাবে। অপ্রাপ্তবয়স্করা বিয়ে করলে আইন অনুযায়ী তাদের সর্বোচ্চ ১৫ দিনের আটকাদেশ বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। প্রাপ্তবয়স্ক কানো নারী বা পুরুষ বিয়ের বয়স হয়নি এমন কাউকে বিয়ে করলে অনধিক দুই বছর কারাদ-, এক লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন।
বাল্যবিয়ের সঙ্গে পিতা-মাতা বা অন্যরা জড়িত থাকলে ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদ-, ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ- হতে পারে। জরিমানার টানা না দিলে আরও তিন মাসের জেল খাটতে হবে। বাল্যবিয়ে সম্পাদন বা পারিচালনা করলেও ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদ-, ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ- দেওয়া যাবে। বাল্যবিয়ে নিবন্ধন করলে নিবন্ধকের লাইসেন্স বাতিল হবে। পাশাপাশি ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদ-, ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ- হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের জানান, ‘বাল্যবিবাহ বন্ধে উদ্যোগী হইবার শর্তে’ বাল্যবিয়ের অভিযোগ থেকে অব্যাহিত পাওয়ার একটি সুযোগ আইনের খসড়ায় রাখা হয়েছে। তবে ওই সুযোগ নিয়ে এর বেশি তথ্য বা কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি।
শফিউল বলেন, বয়স প্রমাণে জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সনদ ও পাসপোর্ট আইনগত দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। যে অর্থদ- আদায় হবে তা ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিশোধ করা যাবে। অন্যান্য ফৌজদারি বিচার যেভাবে হয়, সরেজমিনে তদন্ত করে সেভাবেই বাল্য বিয়ের অভিযোগের বিচার হবে। এ আইনের আওতায় ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করা যাবে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফেরত গেল সরকারি কর্মচারী আইন
‘সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৬’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হলেও তা ফিরিয়ে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরষিদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা আইনটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়নি। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফেরত পাঠানোর কারণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা মূলত ১৬ ধারার একটা ছোট আইন। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পরে ৭১ ধারায় অনেক বড় আইন হয়ে গেছে। এজন্য মন্ত্রিসভা বলেছে এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার, কারণ অনেক বড় পরিবর্তন হয়েছে।
মন্ত্রিসভায় ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৬’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে ডিপ্লোম্যাটিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসামুক্ত করার জন্য একটি চুক্তি অনুমোদন করা হয়।
এছাড়া গত ১৪-১৬ নভেম্বর মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্র্রি অরগনাইজেশন (এসোসিও) জেনারেল এসেম্বলি অ্যান্ড আইসিটি সামিটে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে ‘ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছিল। সেই পুরস্কার প্রধানমন্ত্রীর হাতে হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ হোসেন ইউনেস্কো-আমির জাবের আল-আহমদ আল-সাবাহ পুরস্কারের আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মন্ত্রিসভা তাকে অভিনন্দন জানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।